প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৬ মে, ২০২০, বুধবার
গত ০১ মে সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (জামালপুর)-এ উপজেলা পর্যায়ে প্রথম ট্রায়াজ সেন্টার চালু করা হয়। এটি উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ডা. মুরাদ হাসান এমপি।
সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোঃ জাহিন-উল-কবীর জানান,
“ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা ও রোগীদের সামাজিক দূরত্ব সহ নিরাপত্তার বিধান রেখে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ট্রায়াজ বুথের উদ্যোগ নেওয়া হয়। চিন্তাগুলো কাজে লাগিয়ে কেউ উপকৃত হলে আমাদের ভাল লাগবে।”
সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (জামালপুর) স্থাপিত ট্রায়াজ কর্নারটি দুইটি বুথের সমন্বয়ে গঠিত। এগুলো হল-
১. করোনা ট্রায়াজ বুথঃ করোনা স্ক্যানিং (প্রাথমিক রোগী বাছাই ও পৃথকীকরণ) ও ডক্টরস সেফটি চেম্বার (ফ্লু কর্নার) নিয়ে গঠিত এবং
২. স্যাম্পল কালেকশন বুথঃ শুধুমাত্র স্যাম্পল কালেকশনের জন্য ব্যবহৃত
করোনা ট্রায়াজ বুথঃ
সামনের দিকে করোনা স্ক্যানিং এবং টিকেট কাউন্টার, যেখানে টিকেট দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক রোগী বাছাই ও পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
করোনা স্ক্যানিং ও টিকেট কাউন্টার-
আউটডোরে আসা রোগী সরাসরি হাসপাতালে ঢুকতে পারবেনা। তাদের আগে এই বুথ হয়ে স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিতরে যেতে হবে।
হাসপাতালে আগত রোগীদের ক্ষেত্রে-
*ছক/দাগ দেওয়া ঘরে সিরিয়াল অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সারিবদ্ধভাবে দাড়াবে।
*একজন একজন করে করোনা স্ক্যানিং অংশের সামনে আসতেই, ডিজিটাল থার্মোমিটারে রোগীর টেম্পারেচার/তাপমাত্রা দেখা হবে। কত হলে নরমাল, কত হলে ফ্লু কর্নারে যাবে সেটা ভিতরে ছক করা আছে। বুথের ভিতরে থাকা ব্যাক্তি রোগীর শরীরের তাপমাত্রার সাথে সেটা মিলিয়ে নিবেন।
*এছাড়াও টিকেটের বুথে সবাই নামের সাথে কি সমস্য সেটা বলবে। বেশ কয়েকটি সমস্যা একটা চার্ট আকারে বুথের ভিতরেই আছে।
*যাদের টেম্পারেচার নরমাল বা যাদের চার্টে উল্লেখিত সমস্যা নেই, তারা আউটডোর এর টিকেট পাবে। এরপর রোগী আউটডোরে বসা ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে।
*টিকেট ও টাকা দেওয়া নেওয়ার ক্ষেত্রে, বক্স সিস্টেম রাখা হয়েছে। যেখানে প্রত্যক্ষ স্পর্শ ছাড়াই বুথের ভিতর থেকে টিকেট রোগীর কাছে পৌছাবে; আবার টাকাও রোগী থেকে বুথের ভিতরে দেওয়া যাবে। পুরো সিস্টেমটাই বাতাসরোধী!
*আউটডোরে স্ক্রিনিং করে পাঠানো হচ্ছে, তার সাথে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করায় ঝুকি অনেকাংশেই কমে যাচ্ছে।
যাদের টেম্পারেচার বেশি বা স্যাম্পল দিতে এসেছেন বা চার্টের সমস্যার যে কোন একটা আছে তাদের ক্ষেত্রে করনীয়-
*উপরের নিয়মেই টিকেট দিয়ে পিছনের অংশে অবস্থিত ফ্লু কর্নারে পাঠানো হয়। (টিকেটে টেম্পারেচার ও সমস্যা সংক্ষেপে লেখা থাকে)
ফ্লু কর্নারঃ
সিরিয়ালের সুবিধার্থে একটা নির্দিষ্ট জায়গা বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই সিরিয়াল অনুযায়ী রোগীরা দাড়াবেন। এভাবে তারা বাকিদের থেকে আলাদা থাকবেন এবং সংক্রমণ এড়ানোও সহজ। এটাকে ইয়েলো জোন বলা হয়।
ফ্লু কর্নারের কাজ-
ফ্লু কর্নারে রোগীদের সমস্যা শোনা হয়। দুইদিকেই ভিতরে ও বাইরে সাউন্ড সিস্টেম রয়েছে, এছাড়াও আছে স্টেথো দিয়ে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা।
*রোগীদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়-
১. যদি ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়ায় মত সমস্যা নিয়ে আসেন, তাহলে ভিতরে ফ্লু কর্নারের প্রেস্ক্রিপশন প্যাডে চিকিৎসা পরামর্শ লিখে একটা ক্লোজ বক্স যেটার দুইটা মুখ রয়েছে, সেটির ভিতর দিয়ে ফেলে দিলে বাইরের অংশ দিয়ে রোগী প্রেসক্রিপশন নিয়ে নিতে পারবে।
২. কাউকে প্রয়োজন হলে বা চাহিদা অনুযায়ী স্যাম্পল কালেকশন বুথে পাঠানো হয়। এর জন্য স্যম্পল এর ফর্ম টা ডাক্তার পূরণ করে দিবেন। সেই সাথে ফর্ম ও টেস্ট টিউব পলিব্যাগে ভরে একি নিয়মে রোগীকে দেওয়া হচ্ছে সংস্পর্শে আসা ছাড়াই। সম্ভব হলে কীভাবে স্যাম্পল নেওয়া হবে তার নিয়মাবলীও বুঝিয়ে দিতে হবে।
স্যাম্পল কালেকশন বুথঃ
এ বুথে উপস্থিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ভিতরে থেকেই তার নমুনা সংগ্রহ করবে। যথাযথ জীবানুনাশক দিয়ে প্রতিবার জীবানুমুক্ত করতে হবে বুথটিকে। কাজ শেষে রোগী বিকল্প রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যাবে।
“এভাবেই ট্রায়াজটা সাজানো হয়েছে। বর্তমানে এটির প্রাথমিক ট্রায়াল চলছে। ভিতরে ফ্যান লাইট সবকিছুর সুব্যবস্থা রয়েছে। এটিকে আরো উন্নত করার প্রয়াস অব্যাহত আছে” জানান ডা. মোঃ জাহিন-উল-কবীর।
ট্রায়াজটি আরো উন্নত করার ব্যাপারে পরামর্শ আহবান করেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক