প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদন, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার
লেখাঃ ডা. হাসিব রহমান
সহযোগী অধ্যাপক, প্লাস্টিক সার্জারি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
(ডিএমসিঃ কে-৫১)
নয় বছর মেয়েটি তার মুখ ঢেকে রেখেছে, স্কুলে যাওয়া বাদ দিয়েছে। প্রথম যখন ওকে দেখি ফার্স্ট ইন্সটিংক্ট ছিল ঝামেলা এড়াই(প্রায়শই দুর্বল প্রতিজ্ঞা করি আর কোন ঝামেলাপূর্ণ কাজ করবনা)। নাক বানানো মহাসমস্যা, বাইরে আর ভেতরে ত্বকের আবরণ, মাঝে বোন্স এবং কার্টিলেজ, সাথে বিভিন্ন ভাঁজ মুখের আর কপালের পুড়ে যাওয়া অংশ আরো কঠিন করে তুলেছে। কিন্তু মেয়েটির টেম্পু চালক বাবা যখন বললেন
“কিছু একটা করেন”, ববরাবরের মতই প্রতিজ্ঞা ভাঙলাম। হাত থেকে সফ্ট টিস্যু, ব্লাড ভেসেল (ফ্রি রেডিয়াল ফোরআর্ম ফ্ল্যাপ) আর বুক থেকে কোস্টাল কার্টিলেজ এনে তিনটা রক্তনালী জোড়া দিয়ে চলনসই এক নাক তৈরী করার চেষ্টা করলাম।
দুই স্টেজের ১ম সার্জারিতে সময় লেগেছিল ৭ ঘণ্টা, কিন্তু পরিকল্পনা করতে হয়েছে অনেকগুলো রাত, অসংখ্যবার মনে মনে অপারেশন করেছি আবার পরিকল্পনা বদলেছি, আমার মেয়ের জ্যামিতি বক্স আর খেলার ক্লে নিয়ে মডেল বানিয়েছি, স্কেল নিয়ে মাপযোগ করেছি, তারপরেও কিছু ভুল করে ফেললাম। তবে মেয়েটার বাবা খুশি, জানালো- মেয়েটার বিয়ের কথা হচ্ছে।
অনুমতি নিয়েই ছবি পোস্ট করলাম। কারণ অনেকেই জানেনা এরকম অবস্থায় কিছু করা সম্ভব। আর যারা ভাবেন সরকারি হাসপাতালে কিছু হয়না তারাও যেন জানেন এখানে অনেক কিছুই হয়।