প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার
আজ ২৫শে সেপ্টেম্বর, বিশ্ব ফুসফুস দিবস। প্রতি বছর এই দিনে বাংলাদেশ সহ পুরো পৃথিবীতে এই দিনটি পালিত হয়। কিন্তু কেন এই দিনটি পালিত হয় তা আমাদের অনেকরই অজানা। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্ব ফুসফুস দিবস পালন করার লক্ষ্য হল বিশ্বব্যাপী মানুষের ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগের বিষয়ে সচেতনতা জোরদার করা এবং সকলকে আরো যত্নবান হতে উৎসাহিত করা। বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন ২০০৭ সাল হতে এই দিবসটি পালন করে আসছে এবং বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয় ২০০২ সাল হতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশই ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত এবং দেশের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ অ্যাজমা রোগে ভুগছে। ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ সিওপিডি (Chronic obstructive pulmonary disease) সম্পর্কে যদি একটু জটিল ধারণা নিতে চাই তাহলে প্রথমে জানতে হবে, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ২১০মিলিয়ন লোক সিওপিডিতে ভুগছেন এবং ২০৩০ সালে সিওপিডি হবে তৃতীয় প্রাণঘাতী রোগ। এই ভবিষ্যত প্রাণঘাতী রোগটি সহ আরো বিভিন্ন ফুসফুসজনিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য সকলের এই নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে-
• ধূমপান হতে দূরে থাকা
ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টির একটি অন্যতম কারন হলো ধূমপান। ক্যান্সার ছাড়াও ধূমপানের ফলে আরো জটিল কিছু রোগ হয়ে থাকে যেমনঃ সিওপিডি, অ্যাজমা, ইডিওপেথিক পালমোনারী ফাইব্রসিস ইত্যাদি। একজন ধূমপায়ী ব্যক্তির ক্যান্সার হওয়ার আশংকা একজন অধূমপায়ী ব্যক্তি হতে অনেক গুণ বেশি। প্রতিবছর ধূমপানের কারণে প্রায় ৫০লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এটি আমাদের ফুসফুসের পাশাপাশি হৃদপিণ্ডকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
• নিয়মিত ফুসফুসের ব্যায়াম
ধূমপান হতে দূরে থাকার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম একটি ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে অনেকাংশেই কার্যকরী।নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়ার পাশাপাশি ফুসফুস ও দ্রুত কাজ করে এবং বেশি বেশি অক্সিজেন গ্রহণ করে মাংসপেশি সবল রাখে। ফুসফুস যত বেশি সুস্থ থাকবে, রোগবালাই ততবেশি দূরে থাকবে।
• শ্বাস গোনার ব্যায়াম
এই ব্যায়ামে ক্রমান্বয়ে প্রশ্বাসের সময় ধীর করে আনতে হয়। মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। চোখ বন্ধ করে পর পর কয়েকবার গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। ধীরে ধীরে এর গতি কমে আসবে। প্রথমে প্রশ্বাস ছাড়ার সময় এক গুনবেন, তার পরের বার দুই, এভাবে পাঁচ পর্যন্ত। তারপর আবার নতুন করে এক দিয়ে শুরু করুন। এই ব্যায়ামটি দিনে ১০ মিনিট করবেন। এটি এক ধরনের মেডিটেশন বা ধ্যান। এটি মস্তিষ্ককে সজাগ করে ও মনঃসংযোগ বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়।
• ধূলোবালির সংস্পর্শ হতে দূরে থাকা
ধোঁয়া ও ধূলোবালির জন্য ফুসফুসের প্রদাহ হতে পারে। এতে করে ধীরে ধীরে ফুসফুসের কোষগুলো অকেজো হতে থাকে। ফলে অল্প পরিশ্রমই হাঁপিয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট হয়। এসব ধোঁয়া-ধূলো এড়ানোর জন্য রাস্তাঘাটে মুখে মাস্ক পরিধান করা উচিত। মশার কয়েল, কীটনাশক জাতীয় স্প্রে হতে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে এবং সকলের ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে।
• সংক্রমণ রোধ
ফুসফুসের রোগ হতে বাঁচার জন্য সংক্রমণ রোধ করা খুবই জরুরি।ফুসফুসের সংক্রমণ রোধ করার ভালো উপায় হলো নিয়মিত গরম পানি এবং সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করা। বেশি বেশি পানি পান করা এবং ফলমূল-শাকসব্জি খাওয়া।
কাজেই বিশ্বকে সুস্থভাবে বাঁচতে হলে ধূমপান ও বায়ুদূষণ পরিহার করে স্বাস্থ্যকর আবাসন ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, গ্রহণ করতে হবে সুস্থ জীবনধারা।