সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং করোনায় গৃহবন্দী মানুষের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানবিক উদ্যোগ গ্রহন করেছেন সমাজকর্মী মোঃ কামরুল ইসলাম। জামালপুর সদরের মেষ্টা ইউনিয়নের দেউলিয়াবাড়ি গ্রামের এই ছেলে নিজ উদ্যোগে গ্রামের তরুণদের দিয়ে অসহায় মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ এবং সামাজিক সচেতনতা মুলক কার্যক্রমটি পরিচালনা করেন।
হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকায় এলাকার অনেক রিকশাচালক, অটোড্রাইভার, দোকানদার, দিনমজুর প্রায় অর্ধ-অনাহারে দিনযাপন করছেন। তাদের আয়ের দ্বিতীয় কোন উৎস না থাকায় খুবই কষ্টে আছেন তারা। এমন বিশটি পরিবারের ১৫ দিনের দায়িত্ব নেন কামরুল। তিনি এলাকার তরুণ যুবকদের দ্বারা তাদের মাঝে চাল, ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, আলু, তেল এবং নগদ অর্থ প্রদান করেন।
গত ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবসে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পুরো এলাকায় ২০ কেজি জীবাণুনাশক কাঁধে ঝুলিয়ে স্প্রে করান। এ সময় রাস্তার আশেপাশে, মসজিদে, বাসাবাড়িতে, গেটে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সব জায়গায় ছিটানো হয়।
একদিন পর পর সাবধানতার সাথে এমন করে পুরো এলাকায় নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হচ্ছে।
এছাড়া গ্রামবাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে হাত ধোয়ার পানি ও সাবানের ব্যবস্থা করা হয়। সেই সাথে গ্রামের ২০ টা মসজিদে সাবান দেওয়া হয় এবং ওযূখানায় সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামের সরল ও ধর্মপরায়ণ মানুষদের মসজিদ থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়। তাই মসজিদেই মুসল্লিদের জীবাণুমুক্ত করার এই অভিনব পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে।
বাজারের দোকানদার, শ্রমজীবী মানুষ বিশেষত রিকশাওয়ালা, অটোরিকশাচালক, ভ্যান চালক সহ সাধারণ মানুষজন এখানে হাত ধুতে পারবেন। এসব কাজের জন্য গ্রামের মানুষ তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “সকলের সহযোগিতায় গ্রামবাসীর জন্য আমার এই সামান্য উদ্যোগ, আশা করছি এলাকাবাসী উপকৃত হবেন এতে। ভবিষ্যতে আরও বড় কাজ উপহার দেওয়ার ইচ্ছা আছে। আমাকে সাহায্য এবং সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি ভবিষ্যতেও যে কোন ভালো কাজে সবাই আমার পাশে থাকবেন, উৎসাহ দিবেন।”
উল্লেখ্য মোঃ কামরুল ইসলাম এমবিবিএস এ অধ্যয়নরত আছেন ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত মার্কস মেডিকেল কলেজে। তিনি একাধারে সম্পাদক, লেখক, সমাজকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক, উপস্থাপক। বাবা মাওলানা আব্দুছ ছাত্তার পেশায় একজন শিক্ষক। কামরুল ইসলাম এর আগে ২০১৬ সালে জামালপুরের বন্যাদুর্গত ৫০০ পরিবারের জন্য ত্রাণ বিতরণ করেছেন, ২০১৯ সালে মেষ্টা ইউনিয়নে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা এবং ঔষধ বিতরণ কর্মসূচী পালন করেছেন। এলাকার অনেক ছেলেমেয়ের শিক্ষা উপকরণ, ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফি এবং অনেক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছেন।