৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
চীনের নভেল করোনাভাইরাসের বহির্বিশ্বে বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিন করোনাভাইরাসের উপর একটি হ্যান্ডবুক প্রকাশ করে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমীন এবং পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. কাজী তরিকুল ইসলাম সম্মিলিত ভাবে হ্যান্ডবুকটিতে তথ্য, উপাত্ত ও বিবরণ দিয়েছেন। ডা. রোবেদ বলেন, “যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা ভিন্ন-ভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন, তবে সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই আমরা সরকারের কাছে সংক্রামক রোগের জন্য একটি আলাদা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছি।” অপরদিকে ক্লিনিকাল দিকের উপর মনোনিবেশ করে ডা. তরিকুল জানান, রোগের উপসর্গ হিসেবে জ্বর, সর্দি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, মাংশপেশীতে ব্যথা, নাক বন্ধ ও অসুস্থতাবোধ দেখা দিতে পারে। তিনি আরো বলেন আমরা যদি একটি ভিন্ন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তবে যেমন সকল আক্রান্ত ব্যক্তি ও সন্দেহভাজনদের চিকিৎসা দেয়া যাবে, তেমনি রোগের বিস্তার প্রতিরোধও সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, প্রকাশিত হ্যান্ডবুকে করোনাভাইরাস বিস্তারের সূত্রপাত হতে বর্তমান পর্যন্ত প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা, আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা, প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে যাবতীয় করণীয় ইত্যাদি অত্যন্ত গুছিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। হ্যান্ডবুক তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে নিউমোনিয়ার মত উপসর্গের একটি অজানা রোগের বিস্তার ঘটে। ৭ জানুয়ারি, ২০২০ চীন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেন তারা একটি নতুন ভাইরাসের খোঁজ পেয়েছেন। SARS ও MERS এর একই পরিবার ভুক্ত এই নতুন ভাইরাসটির নামকরণ করা হয় “নভেল করোনাভাইরাস ২০১৯”। কিছুদিনের মাথায় রোগটি চীন থেকে বহির্বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও রোগটি প্রতিকারের ব্যপারে সোচ্চার হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সারাবিশ্বে তারা করোনা ভাইরাস জরুরি অবস্থা জারি করেন।
সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ৩৪৯৫৮ রোগী নিশ্চিত করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র চীনেই রোগীর সংখ্যা ৩৪৬১১ জন, এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২৩৯৭ জন এবং মৃত্যু ঘটেছে প্রায় ৭২৪ জনের। পার্শ্ববর্তী দেশ ছাড়াও ইতিমধ্যে চীন থেকে রোগটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড (৩২জন), নেপাল( ১জন), শ্রীলঙ্কা (১জন) ইত্যাদি দেশ সমূহে রোগটির সন্ধান মিলেছে।
তথ্যসূত্রঃ ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ সজীব
সিনিয়র মেডিকেল অফিসার,
ফরাজী হাসপাতাল, বনশ্রী, ঢাকা।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ নাজমুন নাহার মীম