প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, শনিবার
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর,
সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার,
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, বাংলাদেশ।
দুটি মানুষের সম্পর্ক। সেই কলেজ জীবন থেকে প্রেম, বহু বসন্ত-শীত একসাথে পথ চলা। সূর্য পাক খেতে থাকে পৃথিবীর কক্ষপথে। অনেক অনেক দিন পরে সেই একজন অন্যজনকে বলছে, “তোমাকে আর আমার প্রয়োজন নেই।”
তারপরও অন্যজন দিনের পর দিন নিজেকে ভেঙেচুরে বদলে চেষ্টা করছে সেই একজনের একজনের মন জোগাতে। নিজেকে সেই একজনের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে। ঠিক যেন কবির ভাষায়, “মন দিয়ে মন পেতে চাহি, মন দিয়ে মন নিতে চাহি।”
এভাবে দিন যায় রাত যায়, পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে সামাজিকতার বৃত্তের বাইরে পাছে লোকে কিছু বলে সব গণ্ডি পেরিয়ে সেই একজন আর অন্যজন আজ দুজনেই ক্লান্ত।
একজন বলছে, “আমাকে মুক্তি দাও।”
অন্যজন বলছে, “আমিতো তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।”
একজন বলছে, “কিন্তু এভাবে দমবন্ধ করা এই
সম্পর্কে আমরা ভালো নেই!”
অন্যজন আমাকে আলাদা করে বলে,
“আপা, সত্যিই আমিও ভালো নেই। কিন্তু ছাড়তেও পারি না ভয় পাই, ওকে ছাড়া তো কখনো অন্য কিছু ভাবিনি, তাই বারবার আত্মহত্যা করতে চাই।”
তারপর সেই কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প-
একজন যদি আটকে থাকতে না চায় আরেকজনকে কী বেঁধে রাখা যায়? বেঁধে রাখতে যেয়ে সে যদি কঠিন আঘাত করে সেই আঘাত কতটুকু নেয়া যায়? অন্য মানুষ কি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে তার জন্য আমি নিজের জীবনটাই শেষ করে দেব?
হুমায়ুন ফরিদীর একটা চমৎকার কথা আছে ঘুরে দাঁড়ানোর, তিনি বলেছেন, “উঠে দাঁড়াতে একটা হাত লাগে, আর ঘুরে দাঁড়াতে একটা আঘাত।”
একটু কি ভেবে দেখা দেখা যায় নিচের প্রশ্নগুলি-
১. কে আমার হাত?
২. কেউ যদি হাত না বাড়ায় আমি কি নিজে নিজেকে হাতটি বাড়াতে পারি না?
৪. কে আমার আঘাত?
৫. আর কতগুলো আঘাত পাওয়ার অপেক্ষায় আছি ঘুরে দাঁড়ানোর আগে?
৬. আমি কি কাউকে জেনে শুনে আঘাত করছি?
শুরু কিন্তু আমরা যেকোনো সময়, যেকোনো বয়স, যেকোনো দিন থেকে করতে পারি। নিজেকে সম্মানজনকভাবে আনন্দে কিভাবে রাখা যায় যেকোনো পরিস্থিতিতে সেটা শেখা শুরু করতে পারি না?
যারা অন্যকে সম্মান করে তাদের জন্য অনেক ভালোবাসা।