প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, মঙ্গলবার
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
চিকিৎসক, কাউন্সিলর
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, বাংলাদেশ
ব্রিটিশ বাংলাদেশী চিকিৎসক ডা. ফারজানা হুসেইন-এর ছবি লন্ডনের সুবিখ্যাত মোড় পিকাডেলিতে বিলবোর্ডে। তিনি ‘জিপি অফ দ্যা ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন ইউকে-তে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, স্যালুট।
কিন্তু, এই ছবি দেখে কারো মনে হতে পারে এই হিজাবি মহিলা বাজারের মোড়ে সবাইকে মুখ দেখিয়ে নিজে দোজখে যাবে!
কিংবা, ওই সমাজের ব্যটাগুলি কই? কেন মহিলার ছবিই দিতে হবে? ইত্যাদি, ইত্যাদি!
এমন ভাবনা আসলে নিজের মাইন্ড সেট আপের দিকে একটু খেয়াল করতে বলবো, কারণ এখানে যখন একজন মানুষের প্রশংসা করা হচ্ছে তাঁর সেবাকর্মের জন্য। আপনি সেখানে নারীমাংস খুঁজছেন নাতো? আপনি কি এভাবেই সবখানে মেয়েদের খেয়াল করেন? আপনার মাইন্ড সেটআপ কি বলে?
ভালো কাজের নির্দেশ নারীপুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের জন্যই প্রযোজ্য। তাহলে কাজের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের এই বিভাজন কি আপনার মাইন্ড সেটআপের লিমিটেশন? তাই যদি হয় আপনি কি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকার ক্লাস, বাড়ির বুয়ার রান্না, কিংবা গার্মেন্টসের নারী কর্মীর সেলাই করা কাপড়পড়া বর্জন করেছেন?
স্রষ্টার প্রার্থনা শুরু হয় প্রশংসা দিয়ে। সৃষ্টিকর্তা তাঁর রঙে রঞ্জিত হতে বলেছেন, কারণ তিনি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু, উদার, পূর্ণাঙ্গ, ক্ষুদ্রতা স্রষ্টার নেই, ক্ষুদ্রতা আছে মানুষের, চিন্তার লিমিটেশন স্রষ্টার নেই। ‘লিমিটেশন অফ থটস্’ হলো মানুষের মনোজগতের ভাবনার জায়গার একান্ত ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা।
ধর্মবিশ্বাস বা অবিশ্বাস প্রতিটি মানুষের একান্ত অধিকার। সেখানে জবরদস্তি চলে না, ধর্মান্ধতার কুৎসিত কূপমণ্ডূকতার যূপকাষ্ঠে যুগে যুগে বলি হয়েছে মানবতা। ঠিক যেমন, এই ছবিটি দেখে কেউ প্রশংসামুখর কেউ পান নারী মাংসের ঘ্রাণ।
তারপর সেই কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প۔
যারা ঘ্রাণজীবি তারা নিজেরাও কিন্তু ভালো থাকে না। সব কিছুতে এতো এতো খুঁত ধরতে ধরতে নিজেরাও যন্ত্রনায় ভোগে নিখুঁত কেন হচ্ছে না সেই ভাবনার লিমিটেশনে। নিজে খিটখিট করেন কষ্ট পান আর আশেপাশের মানুষকেও অতিষ্ঠ করেন।
রবীন্দ্রনাথের একটা সুন্দর কথা আছে,
“মন না রাঙায়ে কি ভুল করিলে কাপড় রাঙালে যোগী”
স্পিরিচুয়ালিটি অনুভবের মুগ্ধতা!
যাঁরা মানুষকে সম্মানের সাথে তাঁর কাজের জন্য মূল্যায়ন করেন তাদের জন্য অনেক ভালোবাসা