কাজ অসমাপ্ত রেখেই ভবন গ্রহনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ

শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

মেহেরপুরে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল অসমাপ্ত ভবন গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল ভবনের নির্মাণ শেষ না হলেও জেলা প্রশাসন ও সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর চাপে ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় নতুন ভবনের।

জেলার গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১ তলা নতুন ভবন নির্মাণের কাজ এখনও চলমান; অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে ৯ তলা পর্যন্ত। বাকি অংশের দরপত্র এখনো আহবান করা হয়নি। ওই ৯তলা পর্যন্ত ভবন হস্তান্তরের জন্য গণপূর্ত বিভাগ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে চলছে চিঠি চালাচালি।

ভবনের ১০ ও ১১ তলা নির্মাণ না হওয়া ও অসমাপ্ত ভবন সিডিউল মোতাবেক নির্মাণ হয়নি দাবিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আনুষ্ঠানিক গ্রহণ করছেন না। ফলে মেহেরপুর ১০০ শয্যার পুরাতন ভবনে চিকিৎসক সংকট নিয়ে চারশতাধিক রোগিকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

জেলার গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১তলা বিশিষ্ট মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০১৮ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজের ধীর গতিসহ বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ হয়েছে ৯ তলা পর্যন্ত।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অভিযোগ, ভবনের ছাদে পানি জমে, প্রতি তলার জানালার গ্লাস ভাঙ্গা, নিচতলা থেকে ৬ষ্ট তলা পর্যন্ত রেম সিড়ির গ্রিল দেয়া হয়নি। তাতে রোগি তোলা নামানো ঝুঁকিপূর্ণ, ভবনে কাচের দরজায় থাইগ্লাস দেয়ার কথা থাকলেও নিম্নমানের গ্লাস দেয়া হয়েছে। পিএবিএক্স ও সিসিটিভি ও মেডিকেল গ্যাস সিস্টেম সক্রিয় না, স্টোর রুমে কাঠের দরজা না দিয়ে কাচের দরজা দেয়া হয়েছে। অগণিত সমস্যা ও ভবন অসমাপ্ত থাকায় গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসূত্রে জানা গেছে, পুরো কাজ শেষ না হওয়ায় হাসপাতালের নতুন ভবন গ্রহন করা হয়নি। যদিও সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের চাপে সে সময় উদ্বোধন করা হয়েছে। হাসপাতাল ভবন গ্রহণের ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি সরেজমিনে পর্যবেক্ষন করে দেখেছেন – ভবনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নাই, প্রসিডিউর রুম ও মাইনর ওটিতে এসি নাই, কিচেনরুম রং করা হয়নি, কোন ফার্মেসী নাই, এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, এম আর আই দরজায় রেডিয়েশন প্রটেকশন লিড শীট নাই, এম আর আই রুমে এসি পর্যপ্ত নাই। আই সোলোশন ডাক্তার রুমে দরজা নাই, কনফারেন্স রুমে টেবিল চেয়ার অপর্যাপ্ত। ভবন গ্রহণের আগেই ভবনের ভেতর রং নষ্ট হয়ে গেছে। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, সিকিউরিটি, লিফটম্যান, প্রয়োজনীয় সুইপার ছাড়া ভবন গ্রহণ করা সম্ভব নয়। কারণ হাসপাতাল ভবন গ্রহণের জন্য গণপূর্তের চিঠি পেয়ে ডা. মো. সাউদ কবীর মালিককে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি এসব অসঙ্গতি পাওয়াতে হাসপাতাল ভবন গ্রহণ করা যাচ্ছেনা কিন্তু গর্ণপূর্ত বিভাগ থেকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী।

Moin Uddin Ahmad Sibli

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

৫০ শয্যার আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চলছে ৩০ শয্যারও কম চিকিৎসক দিয়ে!

Sun Dec 8 , 2024
রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে গড়া আদিতমারী উপজেলা। উপজেলায় ২৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও ৮ ইউনিয়নের মানুষের প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু জনবল সংকটে আদিতমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার মান লেখচিত্রে নিম্নমুখী হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আজ রবিবার আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিন পরিদর্শনে […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo