কারাগারে চিকিৎসা ব্যবস্থাঃ চিকিৎসকদের সুবিধা ও অসুবিধা

কারাগারের চিকিৎসা ব্যবস্থায় দুইটি প্রশাসন পাশাপাশি চলে, পরষ্পরকে সহায়তা করে।
একটি প্রশাসন হলো কারা কর্তৃপক্ষ, যার প্রধান জেলসুপার (কেন্দ্রীয় কারাগারের ক্ষেত্রে সিনিয়র জেলসুপার), আরেকটি প্রশাসন মেডিকেল প্রশাসন, যার প্রধান মেডিকেল অফিসার অর্থাৎ সিভিলসার্জন, তাঁর অবর্তমানে সহকারী সার্জন।

কারাগারের মেডিকেল অফিসার আর সহকারী সার্জন সম্পূর্ণ আলাদা। জেলকোড অনুযায়ী কারাগারের হাসপাতালের প্রধান হলেন মেডিকেল অফিসার, যিনি একজন জেলা সিভিলসার্জন। মেডিকেল অফিসারের অধীনস্হ থাকে সহকারী সার্জন, ডিপ্লোমা নার্স, ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি, যাদেরকে বলা হয় মেডিকেল সাব-অর্ডিনেটস।
সিভিলসার্জনের অনুমতি ছাড়া কারাভ্যন্তরে কোন বন্দীকে কোন ওষুধ লিখার অনুমতি নেই কারো। তিনিই কারাগারের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।

কারাগারের মেডিকেল প্রশাসনের প্রতিটি কাজ হয় সিভিলসার্জনের নামে, এক্সিকিউট করে থাকেন সহকারী সার্জন। সহকারী সার্জন তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত যেকোন কাজের জন্য কেবলমাত্র মেডিকেল অফিসার (সিভিলসার্জন) এর কাছে জবাবদিহিতা করে থাকেন।

এক্ষেত্রে একজন কারাগারের চিকিৎসকের সুবিধাসমূহ হলোঃ

১) সর্বোচ্চ চার সদস্যের জন্য রেশন
২) কারাগারের আবাসিক এলাকায় বাসস্থান
৩) একজন ইউনিফর্ম ধারী সৈনিক “রানার”, সকল অফিসিয়াল ও ব্যক্তিগত কাজে সহায়তার জন্য যাকে প্রদান করা হয়
৪) সত্যিকারের গরীব এবং পীড়িত বন্দী, যারা বিভিন্নরকম অসুখে মরণাপন্ন হয়ে থাকে; তাদের সেবা প্রদান
৫) বিদেশ প্রশিক্ষণের সুযোগ
৬) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের অংশগ্রহণের সুযোগ
৭) জরুরী প্রয়োজনে গাড়ী ব্যবহার
৮) নিরাপদ কর্মস্থল

এক্ষেত্রে যে সকল অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় একজন ডাক্তারকে, তা হলো:

১) বাইরে চেম্বার প্র্যাকটিস করার কোন আইনী সুযোগ নাই। চব্বিশ ঘণ্টাই কারাগারে উপস্থিত থাকতে হবে। নৈমিত্তিক ছুটি বা সরকারি ছুটির দিনে কর্মস্থল ত্যাগ করতে হলে ডিআইজি (প্রিজন্স) এবং সিভিলসার্জন স্যারের অনুমতি ব্যতিরেকে যাওয়া যাবে না।
২) কারা হাসপাতালে ইনডোর, আউটডোর আর ইমারজেন্সী বিভাগের একমাত্র চিকিৎসক এই সহকারী সার্জন। সারাক্ষণ রোগী এটেন্ড করতে সতর্কাবস্থায় থাকতে হবে।
৩) ভর্তি রোগীর ডায়েট, শত শত আইটেমের ঔষধের স্টক, সাব স্টক, ইন-আউট রেজিস্ট্রার মেইনটেইন করা।
৪) মানসিক রোগীদের আচরণ রিপোর্ট তৈরী।
৫) আদালতের নির্দেশে বিভিন্ন চিকিৎসাধীন বন্দীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রতিবেদন তৈরী এবং কোন কোন বিষয়ে আদালতে সশরীরে হাজিরা প্রদান।
৬) পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েশান ডিগ্রীর সুযোগ না থাকা।
৭) প্রমোশনের সুযোগ না থাকা।

তথ্যসূত্র:
ডাঃ রেজা মোঃ সারোয়ার আকবর, সসচিম (৩৪ তম)

প্রতিবেদক/সুবহে জামিল সুবাহ

Platform

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

এমসিকিউ পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অল্প কথা

Wed Oct 9 , 2019
পরীক্ষার জন্য ঝড়ো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় গিয়ে ডুবিয়েছে এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক ভারী। যেকোন এমসিকিউ পরীক্ষায় বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী পারা প্রশ্নগুলো তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভুল করে। না পারার মতো প্রশ্ন নিয়ে বেশি সময় নষ্ট করে সোজা প্রশ্ন ভুল করা এমসিকিউ পরীক্ষা খারাপ হওয়ার প্রধান কারণ। সহজ প্রশ্ন খুব ঠান্ডা মাথায় উত্তর […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo