সোহরাব আলী শেখ। বাড়ি চুয়াডাঙ্গার ফুলবাড়ি গ্রামে। চুয়াডাঙ্গা ফুলবাড়ির কথিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সোহরাব.
রোগী দেখেন কুষ্টিয়া শহরের ডিসি কোর্টের সামনে একতা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে। ৪ বছর ধরে তিনি রোগী দেখেন। ভিজিটিং কার্ডে লেখা ডা. এস.এ. শেখ। এমবিবিএস এমআইএজিপি (ক্যাল) এফসিসিপি (ফাইনাল দিল্লী) চর্ম, যৌন, হাঁপানী ও এলার্জী রোগ বিশেষজ্ঞ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী হাসপাতাল। এত ডিগ্রী থাকলেও এই চিকিৎসকের বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সার্টিফিকেট নেই। দাবি করেন, ভারতে মেডিকেল কলেজে পড়েছেন। তবে বাংলাদেশে চিকিৎসার জন্য বিএমডিসির কোনো সনদ তিনি দেখাতে পারেননি।
শুক্রবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম জামাল আহমেদ ওই সেন্টারে অভিযান চালান। অভিযানে ওই চিকিৎসককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রতন উপস্থিত হন। ওই চিকিৎসক তার সকল সার্টিফিকেট দেখান। কিন্তু তিনি বিএমডিসির কোনো সনদ দেখাতে পারেননি।
ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম জামাল আহমেদ বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ ধারা অনুযায়ী ওই চিকিৎসককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং দুই দিনের মধ্যে তাকে কুষ্টিয়া ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। তিনি জেলার কোথাও চিকিৎসা সেবা দিতে পারবেন না। জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, চিকিৎসা সনদগুলো যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ওই ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাসিমুল বারি বাপ্পী প্রথম আলোকে বলেন, বিএমডিসির সনদ ছাড়া রোগী দেখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দেশের বাইরে থেকে যত বড় ডিগ্রিই নিয়ে আসুক না কেন, তাঁকে এ সনদ নিতেই হবে। এই সনদ নেই মানে ওই চিকিৎসক ভুয়া।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম জামাল আহমেদ বলেন, সোহরাব আলী শেখকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং দুই দিনের মধ্যে কুষ্টিয়া ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, চিকিৎসা সনদগুলো যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া একতা ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই চিকিৎসকের জন্মসনদে চুয়াডাঙ্গার শংকর চন্দ্র ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ করা হলে চুয়াডাঙ্গার শংকর চন্দ্র ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য সাদেক আলী বলেন, গ্রামে সোহরাব আলী শেখ নামে কোনো চিকিৎসক নেই। তাঁর বাবা আজিম উদ্দীন শেখকেও চেনেন না বলে জানান তিনি।
এদিকেপ্রশাসনের কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে কুষ্টিয়ার একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে গা ঢাকা দেন কথিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয়দানকারী চুয়াডাঙ্গার সোহরাব আলী শেখ।