সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
চট্টগ্রামে এবার ডেঙ্গুর সংক্রমণ আগের বছরের তুলনায় কম, কিন্তু বেড়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্টে ঝুঁকি। কোভিড সংক্রমণের বছরগুলোতে তুলনামূলক কম ছিল ডেঙ্গুর প্রকোপ। এরপর থেকে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। ২০২৩ সালে সংক্রমণ-মৃত্যুতে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। গত বছর শুধু চট্টগ্রামেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজারের বেশি। মৃত্যুর সংখ্যাও একশ ছাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুর প্রভাব বেশি থাকে। বছরের ওই সময়ে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে জমাটবদ্ধ পানি থেকে এডিস মশার জন্ম হয়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ছড়ায়। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এ সময় বৃষ্টি কম হওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমেছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম। গত বছরের তুলনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার তুলনামূলক কমেছে। তবে রোগীর অবহেলার কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হয়েছে। প্রধান কারণ দেরিতে হাসপাতালে আসা। ডেঙ্গুতে মহানগর ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু কর্নার রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের আলাদা কেয়ার নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সিভিল সার্জন অফিস থেকে ডেঙ্গু নিয়ে সব সময় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রামে ২০২১ সালে ২৭১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হয়েছিলেন। ওই বছর ডেঙ্গুতে মারা যান পাঁচজন। ২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় পাঁচ হাজার ৪৪৫ জন। ওই বছর এ রোগে মারা যান ৪১ জন। ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন চট্টগ্রামে। মারা যান ১০৭ জন। চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৯৫ জন। মারা গেছেন ৪২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ বেশি হলেও ডেঙ্গুতে প্রাণ হারানোদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই ডেন–২ ভ্যারিয়েন্টের। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ আবার কসমোপলিটন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। কসমোপলিটন ভ্যারিয়েন্ট ‘ডেন–২’ ভ্যারিয়েন্টের সাব-ভ্যারিয়েন্ট। কসমোপলিটন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীরা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গুজ্বর কমার পরের সময়টা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি, পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, রক্তচাপ কমে যাওয়া, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লালচে দাগ বা র্যাশ হওয়া, প্রস্রাব-পায়খানা বা অন্য কোনোভাবে রক্ত দেখা গেলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী।