চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে ভোলার স্বাস্থ্য সেবা ; চিকিৎসক পদ শূন্য ১৩৪টি!

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

  • ভোলা জেলায় চিকিৎসক পদ শূন্য ১৩৪ টি
  • শুধুমাত্র ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পদ শূণ্য ৩৭ টি
  • আউটডোর – ইনডোরে দৈনিক গড়ে ১২০০ রোগীর চিকিৎসা দেন ২৪ জন চিকিৎসক

চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ জনবল সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশীরা।

ভোলা সদরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি ২০১৯ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেই ১০০ শয্যারও কম জনবল দিয়ে চলছে এর কার্যক্রম। ৬ বছরেও হাসপাতালটির শূন্য পদে চিকিৎসক-নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি!

জেলার প্রায় ১৭ লাখ মানুষ সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। নথি বলছে, হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শূন্য রয়েছে ৩৭টি পদ।

এর মধ্যে একটি তত্ত্বাবধায়ক, সাতটি সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ১০টি জুনিয়র কনসালট্যান্ট, দুটি রেসিডেন্ট সার্জন/রেসিডেন্ট ফিজিসিয়ান/রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার, চারটি অ্যানেসথেসিওলোজিস্ট, একটি রেডিওলজিস্ট, একটি মেডিকেল অফিসার, দুটি ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার, দুটি সহকারী সার্জন/সমমান, সাতটি রেজিস্ট্রার/সহকারী রেজিস্ট্রারসহ ৩৭টি পদ শূন্য রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, সৃজনকৃত ৬০টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২৩ জন চিকিৎসক। তত্ত্বাবধায়কসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩৪টি পদই শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।

এ ছাড়া সিভিল সার্জন অফিসের দুটি, বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের একটি, সদর উপজেলার ১৪টি, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২১টি, দৌলতখান উপজেলায় ২৫টি, খায়ের হাটে সাতটি, লালমোহন উপজেলায় ২২টি, চরফ্যাশন উপজেলায় ২০টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় সাতটি, মনপুরা উপজেলায় ১২টি, দক্ষিণ চর আইচায় চারটিসহ মোট ১৩৫টি চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।

এদিকে ১০০ শয্যার পুরোনো ভবনে প্রতিদিন গড়ে ৩৬০ জন করে রোগী ইনডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু। ২৫ শয্যার শিশু ইউনিটে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় বিপুলসংখ্যক শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বারান্দার মেঝেতে। একেক বেডে রাখা হচ্ছে ৪-৫টি শিশু। চিকিৎসক-নার্সরা এত রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

অন্যদিকে প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন গড়ে ৫৫০-৭০০ জন।

চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করেছেন ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তম। তিনি বলেন, ‘লোকবল স্বল্পতার কারণে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম চালাতে বেশ ভোগান্তি হচ্ছে। তবে এই লোকবল দিয়েই সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় লোকবলের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিনিয়ত অবগত করছি।’

উল্লেখ্য, এ হাসপাতালেই গত শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) অবহেলার অভিযোগ ৪০-৫০জনের একটি দলের মারধরের শিকার হন কর্তব্যরত চিকিৎসক নাইমুল হাসনাতকে ; যার নেপথ্যে ছিল দালালচক্র!

প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস

প্ল্যাটফর্ম কনট্রিবিউটর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

হাসপাতাল থেকে ৬ মাসের শিশু চুরির অভিযোগ

Sat Apr 19 , 2025
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ মাদারীপুরে জেলা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড থেকে ৬ মাসের এক শিশু চুরির অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জড়িত চক্রদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের ৬ তলার শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। স্বজনদের […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo