বিশ্ব জুড়ে সাম্প্রতিক সময়ে হইচই ফেলে দিয়েছে জিকা।ব্রাজিলে সেনাবাহিনী ডাকা হয়েছে এটি মোকাবেলা করার জন্য আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরী বৈঠকে বসছে।
জিকা ফ্লাভিভাইরেডি গোত্রের ভাইরাসজনিত এবং মশাবাহিত একটি রোগ।উগান্ডার জিকা জংগলের বানরদের মধ্যে ১৯৪৭ সালে প্রথম ধরা পড়ে।১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়াতে প্রথম মানুষ আক্রান্ত হয়,তবে ইয়াপ দ্বীপে ২০০৭ সালে প্রথম প্রাদুরভাব দেখা দেয় যাতে দ্বীপের ৮০% আক্রান্ত হয়।২০১৫ সালে দক্ষিণ আমেরিকায় শুরু হওয়া প্রাদুরভাব ইতিমধ্যে ২৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপ-এশিয়ার কয়েকটি দেশে রোগী সনাক্ত হয়েছে।ধারনা মতে এ পর্যন্ত ১ থেকে ২ মিলিয়ন আক্রান্ত হয়েছে এবং ২০১৬ সালে ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন আক্ত্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
কিভাবে ছড়ায়
ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতই জিকা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়।আক্রান্ত রোগীর রক্তের মাধ্যমে মশার দেহে প্রবেশের পর ৯-১০ দিন বৃদ্ধি ঘটে।এই মশা সুস্থ মানুষকে কামড় দেয়ার ২-৭ দিনের মধ্যে রোগ দেখা দেয়।আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলাদের মাধ্যমে শিশুর জটিলতার ঝুকি রয়েছে।যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ানোর সম্ভবনা রয়েছে।
লক্ষণ কি
জিকার লক্ষন অনেকটা ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মত।তবে তীব্রতায় অপেক্ষাকৃত অনেক কম।আক্রান্তদের ৮০% সনাক্ত হওয়ার আগেই সুস্থ হয়ে যায়।জ্বর,শরীর ও জয়েন্ট/গিরা বাথা,ত্বক এবং চোখ লালচে ভাব এ রোগের লক্ষণ।
চিকিৎসা কি
লক্ষণ বুঝে রোগ সনাক্ত করা হয় তবে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেও নিশ্চিত করা যায়। সাধারণত লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। ভাইরাসজনিত রোগ বিধায় এ রোগের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এনটিবায়ওটিক/antibiotic লাগে না।সাধারনত ৭ দিনের মধ্যেই সুস্থতা ফিরে আসে।
জটিলতা
এ রোগে আক্রান্তদের কোন মৃতঝুকি নেই।তবে আক্রান্ত মহিলাদের পরবর্তীতে বিকলাঙ্গ এবং স্নায়ু সমস্যা জনিত শিশু জন্ম দেয়ার ঝুকি রয়েছে।শুধুমাত্র ব্রাজিলেই প্রায় ৪০০০ এর অধিক বিকলাঙ্গ ছোট মাথার শিশু জন্ম নিয়েছে।
প্রতিরোধ
এ রোগের কোন টিকা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয় নাই। এডিস মশা নিয়ন্ত্রন করে এ রোগ অনেকটা প্রতিরোধ করা যায়।এ মশা সাধারণত বদ্ধ পরিস্কার পানিতে বংশ বৃদ্ধি করে এবং দিনের বেলায় কামড়ায়।আক্রান্ত মহিলাদের অন্তত এক বছর সন্তান গ্রহনে বিরত থাকতে হবে। দেশের প্রবেশ পথে সন্দেহযুক্ত রোগীদের পরীক্ষার বেবস্থা করা যেতে পারে।
মনে করা প্রয়োজন ডেঙ্গু আমাদের দেশে ভ্রমণকারী/প্রবাসীদের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করেছিল।
ডা. এম আর করিম রেজা
সিনিয়র কনসালটেন্ট
চর্ম, এলার্জি ও কসমেটিকজনিত রোগ
রিভাইভ মেডিক্যাল এন্ড লেজার সেনটার
গুলশান,ঢাকা