অনেকদিন ধরেই এই মানুষটার খোঁজ করছি। একটা মানুষের হৃদয়ের গভীরতা ঠিক কতখানি হলে, কলিজাটা কত বড় হলে সামান্য রিকশা চালিয়ে একটা পুরো হাসপাতাল আর বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করা যায়, সেই প্রশ্নের উত্তর জানাটা খুব জরুরী ছিল। খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে তাকে আজ পেয়ে গেলাম!
বলছিলাম জয়নাল চাচার কথা। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর বদৌলতে আমরা ইতোমধ্যেই এই রিকশাচালক বৃদ্ধ লোকটির বিখ্যাত “মমতাজ হাসপাতাল” সম্পর্কে কম-বেশি জানি। কিন্তু, আজ যখন চাচার সাথে কথা বলছিলাম, তার কন্ঠে ছিল গভীর উদ্বেগ আর চরম অসহায়ত্ব। খুব আফসোস করে বলছিলেন, “বাবারে, শইলডা খারাপ। মাসে কয়েকদিন ঢাকায় গিয়া রাইতে রাইতে রিশকা চালাই আর এইদিয়া কুন রকমে হাসপাতালডা চালাইতেছি। ২০১২ সনের পর থে সব সাহাইয্য সহযোগিতা বন্দ আছে।”
বিস্তারিত কথা বলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানতে পারলামঃ
১. হাসপাতালটি ময়মনসিংহ শহর হতে প্রায় ১৭ কি মি দূরে গৌরিপুরের পরানগঞ্জ ইউনিয়নের টান হাসাদিয়া গ্রামে অবস্থিত।
২. প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২০ জনের মত রুগী হয় যা শনিবার দিন ১৫০ ছাড়িয়ে যায়।
৩. রোগীদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা পল্লী চিকিৎসক মোঃ আলী হোসেন ভাই। তিনি নামমাত্র মূল্যে হাসপাতালে সপ্তাহে ৬-৭দিন রোগী দেখেন।
৪. মাসে ১-৪ বার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (মমেকহা) হতে অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ চিকিৎসক জনাব ডা. হেফজুল বারী খান স্যার ও সময়ে সময়ে তার কন্যা সেখানে গিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এছাড়াও, জটিল রোগীদেরকে ময়মনসিংহ শহরে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা বা মমেকহাতে ভর্তির ব্যাপারেও আন্তরিক সহযোগিতা করেন।
৫. রোগীরা ১০ টাকা টিকিটের বিনিময়ে চিকিৎসাপত্র ও বিনামূল্যে ঔষধপত্রাদি পেয়ে থাকেন।
৬. পেসিফিক ফার্মা প্রতিমাসে এই হাসপাতালে ১০ হাজার টাকার বিনামূল্যের ঔষধ আর নগদ ১০ হাজার টাকা দিয়ে থাকেন।
৭. প্রতিমাসে চাচার খরচ থাকে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা তাই, পেসিফিক ফার্মার ঐ ২০ হাজার বাদেও বাকী ২০-৩০ হাজার টাকা জোগাড় করতে চাচা বর্তমানে খুবই অসহায় অবস্থার মধ্যে আছেন।
৮. হাসপাতালের নামে প্রথম আলোর করে দেয়া ১৬ লাখ টাকার এফডিআর এবং অন্যান্য সকল জমাকৃত ফান্ড ইতোমধ্যেই খরচ হয়ে গেছে হাসপাতালের জন্য জমি ক্রয় ও হাসপাতালটি পাকাকরণের কাজে। ফলে এখন আর এমন কোন ফান্ড অবশিষ্ট নেই যার থেকে উনি প্রতিমাসে কোন নির্দিষ্ট অর্থ পেতে পারেন।
৯. উনি যে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করেছিলেন তার জমি সরকারের নামে লিখে দেওয়ার বিনিময়ে সেখানে এখন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়েছে। তবে, তার ছেলে আগে সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্ত, পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের ফলে তার ছেলের চাকুরি স্বাভাবিকভাবেই বলবৎ থাকেনি। এটা নিশ্চিতভাবেই তার মত অতিদরিদ্র লোকের পক্ষে এক বিশাল ক্ষতি।
১০. চাচাকে সবচেয়ে অসহায় লেগেছে যখন তিনি বারবার বলছিলেন, কেউ যদি এই হাসপাতালটির দায়িত্ব নিতে চান তো চাচা সেই ব্যক্তির নামে হাসপাতালের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি লিখে দিবেন। বার বার বলছিলেন, “বাবারে, এত সমস্যার মধ্যেও আমি এত বছর এইটারে চালায়ে গেছি যে আল্লাহ দেখব। এহন বিভিন্ন জায়গায় ধার দেনা কইরা, কষ্টে মষ্টে এইডা চালাইতাছি। কিন্তু, কেউ যদি এইডা নেয় আমি তারে সবকিছু লিইখা দিমু। আমার কোন দাবী দাওয়া নাই।”
একজন চিকিৎসক এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আজ নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে। সরকারি চাকুরি করে, সাধ ও সাধ্যের টানাপোড়েনে সংসার চালিয়ে, প্রতিমাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা উদ্ধৃত্ত যদি থাকত, আল্লাহপাকের নামে অবশ্যই এই হাসপাতালের দায়িত্ব নিতাম। কিন্তু, আমিও বড়জোর মাসিক ভিত্তিতে হাসপাতালকে কিছু সহযোগিতা করতে পারি, এরচেয়ে বেশি কিছু না। কিন্তু, আমরা সবাই মিলে কি অন্ততঃ একজন সামান্য রিকশাচালক যা করতে পেরেছেন তা ধরে রাখতে পারার চেষ্টাটুকু করতে পারি না? বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুরষ্কার দিয়ে ভুলে গেছেন। লোক দেখানোর ইচ্ছা ছিল যাদের তারা অনেক আগেই একটা নিউজ কাভার করে কেটে পড়েছেন। কিন্তু, যারা সত্যিই মানুষের উপকারের জন্যে কিছু করতে চান, তারা অবশ্যই বুঝবেন যে, এখনই সেই সুযোগ। সামনে রমজান মাসও আসছে। আমরা অনেকেই বড় বড় অংকের যাকাত দিব। সেই যাকাতের কিছু অংশ কি জয়নাল চাচার এই মমতাজ হাসপাতাল পেতে পারে না? অনেক ভাইয়েরা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকুরিরত আছেন। পেসিফিক ফার্মার মত বিনামূল্যের আরো কিছু ঔষধ কি হাসপাতালে দেয়ার ব্যবস্থা করা যায় না? এবং পরিশেষে, শ্রদ্ধেয় অগ্রজ ও স্নেহের অনুজ সকল চিকিৎসকদের বলছি- এমন কেউ কি আছেন, যিনি এই হাসপাতালে সরাসরি চিকিৎসা সেবা দিয়ে এই হাসপাতালটিকে টিকিয়ে রাখতে চান? মমতাজ হাসপাতাল আপনার প্রতীক্ষায়।
হাসপাতাল সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস নিচে দেয়া হলঃ
http://www.xn--my-8zf2g/ mensingh.gov.bd/…/09d452a9-1e86-11e7-8f57-…/মমতাজ%20হাসপাতাল
https://www.bd-pratidin.com/saturday-morni…/2018/…/03/302935
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1589865651079092&id=1319860434746283
http://archive.prothom-alo.com/…/date/2011-07-30/news/174138
মাহরুফ নজরুল
এ এফ এম সি
২০০৮-০৯
I am a doctor, working abroad for many years.I think we have many doctors who are well learned about
internet /programming etc, so its a high time to start a website(plafrom-med.org can also do it)which can
make one website which can help thousands of very poor patient in our government hospital suffering badly
only for lack of money(as all medicine and lab and inv not free).so if there is a system by which medical student
, doctor ,IMO ,rmo , rs, registrar, professors can recommend for funding of a pt ,give the picture of pt,
give the bcash number of pt ,and give the details of recommender(dr name ,batch,medical college,working hospital
,bmdc number etc) and some witness,detail about pt condition and exactly how much money needed .
pt can directly deal with donor
and vice versa .then it will be helpful,we can implement it even in district hospital.By more
research and comment we can find relaively flawless system so that there can be no malingeering ,
some evil people cannot take any illegal advantage ,,so its high time to start such apps /website so that
rich people who really want to help genuine pt who are very poor,will find a way.