অসচেতনতার কারণে দেশে দিন দিন থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহকের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০-১২ ভাগ। সে অনুযায়ী দেশে প্রায় দেড় কোটি লোক থ্যালাসেমিয়া ও হিমোগ্লোবিন-ই রোগের বাহক।একই সঙ্গে প্রতিবছর প্রায় ১২-১৫ হাজার শিশু এ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে।
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় বয়সভেদে প্রতিমাসে ৬ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১৬ হাজার ৮০০টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। যা বহন করা অনেকের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে তাদের অধিকাংশই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু বরণ করে থাকে। থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণগুলো হলো- শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘনঘন জীবাণু সংক্রমণ, শিশুর ওজন বৃদ্ধি না পাওয়া, জন্ডিস,প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া,পেট বাইরের দিকে প্রসারিত হওয়া, খিটখিটে মেজাজসহ আরো ব্যতিক্রমী আচরণ।
থ্যালাসেমিয়া একটি রক্তস্বল্পতাজনিত মারাত্মক বংশগত রোগ। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই যদি থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হন তবেই তাদের সন্তানরা এ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। এ রোগ প্রতিরোধ করতে হলে বিয়ের আগে অবশ্যই থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি দুজনই এ রোগের বাহক হয় তাহলে তাদের বিয়ে নিরুৎসাহিত করে তা বন্ধ করতে হবে। রোগের চিকিৎসা করার থেকে রোগ প্রতিরোধ করাই হবে বুদ্ধি মানের কাজ।
বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। থ্যালাসেমিয়ার জিন বহনকারী নারী গর্ভবতী হলে তার সন্তান প্রসবের আগে অথবা গর্ভাবস্থায় ৮ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রি-মেটাল ডায়াগনোসিস করিয়ে নিতে হবে। এ পরীক্ষার ফলে যদি দেখা যায়, অনাগত সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে সন্তানটির মারাত্মক পরিণতির কথা ভেবে সন্তানের জন্মগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সেবায় সরকারি পদ্ক্ষেপ বাড়াতে হবে।সারাদেশে জনসচেতনতা করতে হবে।কেননা একমাত্র সচেতনতাই পারে থ্যালাসেমিয়া নামক ঘাতক ব্যাধি থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দিতে।
লেখকঃ শেখ সাইদ-উর-রহমান । নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ শাখা।
thanks platform
.ddndnrndx.