বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ ব্যয় হয় ওষুধের পেছনে। চিকিৎসা ব্যয়ের অন্যতম কারণ ওষুধ। মানুষের চিকিৎসা ব্যয় হয় মূলত হাসপাতাল, চিকিৎসকের চেম্বার, রোগনির্ণয় বা পরীক্ষা–নিরীক্ষা, ওষুধ এবং কিছু চিকিৎসাসামগ্রীর (চশমা, ক্রাচ ইত্যাদি) পেছনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ জাতীয় স্বাস্থ্য হিসাব (ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস) অনুযায়ী, মানুষ ১০ দশমিক ১ শতাংশ খরচ করে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে, চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ, রোগনির্ণয় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ওষুধে ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং চিকিৎসাসামগ্রীতে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ; অর্থাৎ চিকিৎসার জন্য অন্য সব খাতে যে খরচ হয়, তার প্রায় দ্বিগুণ খরচ করতে হয় শুধুমাত্র ওষুধের পেছনে।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট পৃথক দুটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার মূল লক্ষ্য, প্রত্যেক মানুষ প্রয়োজনের মুহূর্তে মানসম্পন্ন সেবা পাবে, সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
কিন্তু সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার মূল বাঁধা ওষুধের আকাশচুম্বী দাম। বাংলাদেশে ওষুধ তৈরির একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। এই প্রতিষ্ঠান প্রধানত অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় থাকা ওষুধ উৎপাদন করে। এ তালিকায় এখন ২১৯টি ওষুধ আছে। ইডিসিএলের ওষুধ সরকারি হাসপাতালে বিতরণ করা হয়, এই ওষুধ বিক্রি হয় না।
অন্যদিকে ওষুধে বাংলাদেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রয়োজনের ৯৫ শতাংশ ওষুধ এখন দেশেই তৈরি হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব ওষুধ তৈরি করে, সেগুলোর মূল্য নিয়ন্ত্রণ সরকার করে না। একই ওষুধ বিভিন্ন কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে বিক্রি করে। কিছু ক্ষেত্রে দামের পার্থক্য অনেক। কিন্তু সরকার ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিলে তা কমিয়ে আনা যাবে এবং তাতে কোম্পানিগুলোর লাভও নিশ্চিত করা সম্ভব।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক।