শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধনবিহীন রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ চাকুরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
গত ২৬ জানুয়ারি এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ হসপিটাল, রাজশাহী এর জন্য নিম্নবর্ণিত পদে আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীদের নিকট হতে দরখাস্ত আহবান করা যাচ্ছে।”
কিন্তু নথি বলছে, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের কোন ধরনের নিবন্ধন নেই। গত বছরের মার্চে কলেজটির শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছিলেন, “রাজশাহীর শাহ্ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জিল্লার রহমান ও একই কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ওই কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতে চলেছে।
শিক্ষার্থীদের এ সংবাদ সম্মেলনের পর এ মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান স্বাধীন গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করেছিলেন তার কলেজের নিবন্ধন নাই।
তিনি বলেছিলেন, “অদৃশ্য কোনো শক্তির ইশারায় তাদের কলেজকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না। কোনো বেসরকারি কলেজেরই শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন দেওয়ার ক্ষমতা নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মতি সাপেক্ষে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই মাইগ্রেশন নিতে পারবে। আর কেউ নিজ নিজ প্রচেষ্টায় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে মাইগ্রেশন করে নিতে পারলে তাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি থাকবে না।”
পরবর্তীতে গত বছরের ২২ নভেম্বর কলেজের নিবন্ধন না পেয়ে ‘ছাড়পত্র’ চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়।
শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের নিবন্ধনের বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের উপাচার্য অধ্যাপক জাওয়াদুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, “কারা এই প্রতিষ্ঠান কিনতে চায়, সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আসলে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার নিবন্ধন দিতে গেলে বেশ কিছু ক্রাইটেরিয়া দেখতে হয়। আমি বলেছি, এসব ঠিক থাকলে নিবন্ধন দিয়ে দেব। কিন্তু মনিরুজ্জামান স্বাধীন কোনো নিয়ম-নীতির মধ্যেই আসতে চান না। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিষ্ঠানটিতে জটিলতা চলছে। আমরা নিবন্ধন দিতে পারছি না।”
নিবন্ধন ব্যতীত এ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুনরায় শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে প্রতারণা করতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানহীন মেডিকেল কলেজসমূহ বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কলেজ পরিদর্শন শেষে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন দেয়। কিন্তু সেখানে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে এই অনিয়ম রাবি কলেজ পরিদর্শকের নজরে আসার পর ২০১৬ সালে সেই সেশনের কার্যক্রম স্থগিত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু সদুত্তর না পাওয়ায় সেই সেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস