মেডিকেলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কাছে একটি আতঙ্কের নাম পেশাগত পরীক্ষা বা প্রফেশনাল এক্সামিনেশন। যত ভালো প্রস্তুতিই নেওয়া হোক না কেন, পরীক্ষা দেওয়ার আগে বা পরে কোন শিক্ষার্থীর পক্ষে তার পাশ করার নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। সে কারণে সাপ্লিমেন্টারী বা পুনরায় একই পরীক্ষা আবার দেয়া এই শিক্ষা ব্যবস্থায় খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। এটি থাকার ফলে কিছুটা সুবিধা পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বড় অসুবিধাটা হয় চলতি বছরের শিক্ষা কার্যক্রম বা পরীক্ষার মাঝে ব্যাঘাত ঘটা। ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিমত থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সাপ্লিমেন্টারী পরীক্ষার জন্য একজন শিক্ষার্থীর তার চলতি বছরের শিক্ষাকার্যক্রম থেকে খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। তবে এই সমস্যা অনেকটাই সমাধান করা সম্ভব সময়মত পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার মাধ্যমে। প্রতি বছর এমবিবিএস এবং বিডিএস নিয়মিত পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল এবং পরবর্তী সাপ্লিমেন্টারী পরীক্ষার সময়ের মধ্যে ব্যাবধান সর্বোচ্চ ১ মাসের মত হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই ভুল ফলাফল যাচাইকরণের আবেদন করা এবং ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণেরও পর্যাপ্ত সময় জোটেনা শিক্ষার্থীদের। নিয়মিত পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে লম্বা সময় ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্থ সময় পার করে যাতে করে তাদের পড়াশোনার মনোসংযোগ ব্যাহত হয়। সাপ্লিমেন্টারী পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে আবারো সেই একই বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হতে দেখা যায় বহু শিক্ষার্থীকে। যাতে করে , একজন শিক্ষার্থীকে আবারো পিছিয়ে পড়তে হয়।যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পেশাগত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় তাদের উপর বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব অর্পিত থাকায় এবং একই সাথে অনেক কলেজের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের কারণে ফলাফল প্রকাশ করা অবশ্যই সময় সাপেক্ষ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রতিবার ফলাফল নিয়ে নির্ধারিত সময়ের বাইরে অযাচিত বিলম্ব ঘটায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ক্রমশ বেড়ে চলেছে ।
একজন শিক্ষার্থীর জন্য এমবিবিএস/বিডিএস কোর্স চিকিৎসাবিদ্যায় তার কর্মজীবন গঠনের কেবল একটি ধাপের শুরু মাত্র। যেহেতু স্নাতক শেষ হওয়ার সাথে সাথেই একজন শিক্ষার্থীকে অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়, সেক্ষেত্রে ছাত্রজীবনে তার নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সময়মত ফলাফল হাতে পাওয়ার আশা করা কি আসলেই তাদের পক্ষে অযৌক্তিক?
যদিও সাপ্লিমেন্টারীর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় প্রায়ই বিভিন্ন শিক্ষক/ শিক্ষিকা নানান ভাবে সাহায্য করে থাকেন। কিন্তু সব কিছুর পরও পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীকে সেই দোদুল্যমান অবস্থায়ই বিরাজ করতে হয়। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও মানসিক চাপে দিন যাপন করা একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে অযাচিত বিলম্ব ঘটানো কতটুকুই বা যুক্তিযুক্ত ?
স্টাফ রিপোর্টার /ডা.এনায়েত উল্লাহ খান