ডাক্তার আর রোগী কথা বলছে- ডাক্তার : বলুন আপনার সমস্যা কী?
রোগী : ডাক্তার সাব, আমি স্বপ্নে দেখছি আমি বিশাল একটা শশা খাচ্ছি।
ডাক্তার : তো কি হইছে?
রোগী : সমস্যা হইল সকালে উইঠা দেখি আমার কোলবালিশ অর্ধেক নাই।
২০১৭ সালের মাধ্যমিক বাংলা প্রথম পত্রের যিনি প্রশ্নকর্তা তিনি শশাও নয় কোলবালিশও নয় হয়তো অন্য কিছু খেয়ে প্রশ্ন করেছেন।পেশা হিসেবে ডাক্তারি একটা মহৎ ও সেবামূলক পেশা হলেও আজ ডাক্তারদেরকে জাতীয়ভাবে অসম্মানিত করা হয়েছে, হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এই পেশার মানুষ আজ সারাদেশে নির্যাতনের শিকার। একটা শ্রেণী আছে যারা পান থেকে চুন খসার আগেই মালকোচা দিয়ে নেমে পড়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে।”ভুল চিকিৎসা” তো আজকাল খুবই সস্তা একটা শব্দ। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু। কারা বলে এসব কথা। হয় রোগীর অভিভাবক না হয় সাংবাদিক। বলাবাহুল্য শুধুমাত্র একজন চিকিৎসকই ভুল এবং সঠিক চিকিৎসা বিচার করতে পারেন।
শতশত মুমুর্ষু রোগী আসে হাসপাতালে। রক্তের প্রয়োজন। ডাক্তার সাহেব নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে রোগীকে সারিয়ে তুলেন। কই এসব কথা তো আপনাদের মুখে শোনা যায় না। অথচ আজ আপনারা এমন একটা পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছেন সরকার ও ডাক্তার মুখোমুখি অবস্থায় পড়ে গেছে। এরা কারা? এরা বিদেশীদের এজেন্ট। এরা দেশের উন্নয়ন চায় না। কি উদ্দেশ্য? উদ্দেশ্য একটাই, শতশত রোগীকে বিদেশে পাঠানো। দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা কে ধ্বংস করে দেওয়া।
সরকারের যা বড় অর্জন তার বেশিরভাগই এসেছে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে। MDG, মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, শিশুমৃত্যু হার হ্রাস, গড়আয়ু বৃদ্ধি এর সিংহভাগই চিকিৎসকদের অবদান। তাহলে চিকিৎসকদের প্রতি এত অবহেলা কেন? আজ দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী ছাত্রটি চিকিৎসক হবার স্বপ্ন দেখে না। হাজার হাজার ডাক্তার বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যত অন্ধকার। চিকিৎসা ব্যাবস্থা মেরুদণ্ডহীন হয়ে যাবে। সরকারের সব অর্জন ধূসর হয়ে যাবে।
তাই সরকারেে কাছে আবেদন থাকবে, ধামাচাপা নয় বরং প্রশ্নপত্র নিয়ে যা হয়েছে তার তদন্ত করা হোক। দোষীদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করা হোক যেন ভবিষ্যতে এমন ধৃষ্টতা আর কেউ না দেখাতে পারে। জগাইয়ের একটি গল্প দিয়েই শেষ করবো।
জগাই একবার খবর পেল, শহরে এমন একজন ডাক্তার এসেছেন, যিনি সব রকমের রোগ সারিয়ে দিতে পারেন। জগাই মনে মনে বলল, ব্যাটা নির্ঘাত একটা ঠকবাজ। আজই তাঁর জারিজুরি খতম করতে হবে। সে গেল ডাক্তারের কাছে। জগাই: ডাক্তার সাহেব, আমি কোনো কিছুরই স্বাদ পাই না। এখন আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন বলুন। ডাক্তার: হুম্। তোমাকে ৪৩ নম্বর বোতলের ওষুধটা খাওয়াতে হবে।
জগাইকে ওষুধ দেওয়া হলো। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠল সে, ‘ইয়াক! এটা তো গোবর।’ ডাক্তার বললেন, ‘হুম্, তুমি তাহলে স্বাদ বুঝতে পারছ।’ পরদিন রেগেমেগে আবার সেই ডাক্তারের কাছে গেল জগাই।
জগাই: ডাক্তার, আমার কিছুই মনে থাকে না। এমনকি গতকাল কী ঘটেছিল, তাও মনে নেই। কী ওষুধ দেবেন আপনি?
ডাক্তার: হুম্, ৪৩ নম্বর বোতলের ওষুধ…
জগাই: মনে পড়েছে, মনে পড়েছে! আমার ওষুধ লাগবে না! বলেই সে দৌড়ে পালাল ! সাধু সাবধান!
জগাইয়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ৪৩ নাম্বার বোতলের স্বাদ পেয়ে যাবেন।
লেখক : শেখ সাইদ-উর-রহমান সিনিয়র যুগ্মঃসাধারন সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ শাখা