চিকিৎসকরা কিন্তু প্রণোদনা চায়নি। কেউ শর্ত দেয়নি যে এটা সেটা না দিলে কাজ করবো না। আমরা হেট স্পিচ এর জবাবে বলেছি যে ভারত সহ অন্যান্য দেশে চিকিৎসকদেরকে নানা ভাবে সমর্থন দিচ্ছে, সম্মান দিচ্ছে, থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে, ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলোয় যে যন্ত্রপাতি বা পরিবেশ, তাতে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করার কোন পরিবেশ নাই। দুর্বল, বাতিল প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি দিয়ে আমরা কাজ করি। কেননা আমরা চাইলেই কোন ভালো জিনিস পাইনা। কেনাকাটায় আমাদের কোন পরামর্শই নেয়া হয় না। সবাই এসব জানেন। কেউ কিন্তু প্রতিবাদ করেন না। তাহলে আমরা কেন কাজ করি? আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক আহবানে কাজ করি, “তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে মোকাবেলা কর।”
যা আছে তাই নিয়ে সাধারণ গরীব, খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে চিকিৎসা দেই। যারা বড়লোক তারা তো বিদেশেই চিকিৎসা নেন। সবই দেখেছেন। ভুল করে বা কাজের বেটির চিকিৎসার জন্য অনেক সময় সরকারি হাসপাতালে এসে নাকে রুমাল দিয়ে কথা বলেন। তড়িঘড়ি করে চলে যান। শর্ত দিয়ে আমরা কাজ করি না। শর্ত দিলে এতদিন একজন ডাক্তারকেও পেতেন না। তাই বলছি আমরা বিনা শর্তেই কাজ করি। আমরা প্রণোদনা চাইনি। চাইও না। আরেকটি বিষয়, হাসপাতালে সামনের সারিতে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজ করে। তারা ইন্টার্ন ডাক্তার, তারা পোস্ট গ্রাজুয়েট ছাত্রছাত্রী। তারা কেউই সরকারি চাকুরী করে না। তারাই কিন্তু প্রথমে সব রুগী দেখে। আমাদের আত্মজ প্রতীম আর অনুজ প্রতীম এই ছেলেমেয়েরা কোথায় থাকে, কিভাবে হাসপাতালে আসে-যায়, কী খায়, কিভাবে সংসার চালায়, কেউ খবর রাখে না। বিশ হাজার টাকার ভাতা’র কথা বলবেন তো। এ দিয়ে কয়দিন চলে সেটাও আপনারা জানেন। সংক্রামক, অসংক্রামক সব রুগী কিন্তু এরাই আগে দেখে। তারা কিন্তু উপেক্ষিত রয়ে গেছে। ভাতা বা প্রণোদনা পেলে তারাই সর্বাগ্রে পায়। ঠিক তেমনি ভাবে বেসরকারি চিকিৎসকগণ উপেক্ষিত। তারাও তো কাজ করছেন। সব রকমের রুগী দেখছেন। তারা কেন প্রণোদনা পাবেন না? ( নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে সরকারি বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারী যদি পান )।
আমরা যদি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন চাই তাহলে অনেক কিছুই ভাবতে হবে, অনেক কাজই করতে হবে।