মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে ভারতের চিকিৎসা পর্যটন খাত বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমে গেছে বাংলাদেশীদের চিকিৎসা সেবা নিতে ভারত যাওয়ার আগ্রহ। বাংলাদেশীদের চিকিৎসা সেবা দিতে এগিয়ে আসছে চীন, সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত রাষ্ট্রগুলো।
এ অবস্থায়ই বাংলাদেশী রোগীদের ভারত পুনরায় ভারত নির্ভর করতে ভারতের চিকিৎসকদের অনেকটা অবৈধভাবে বাংলাদেশে রোগী দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে বাংলাদেশ মেডিকেল ট্যুরিজম এসোসিয়েশন (বিএমটিএ) নামের নামসর্বস্ব এক সংগঠন! ‘ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল ট্যুরিজম কনফারেন্স-২০২৫’ নামে এ আয়োজন করেছে সংগঠনটি!
জানা গেছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির শুক্রাবাদে ড্যাফোডিল প্লাজায় এ কনফারেন্সটি অনুষ্ঠিত হবে। এ কনফারেন্সের স্পন্সরদের মধ্যে অন্যতম ইয়াশোধা হাসপাতাল, মিলান ফার্টিলিটি সেন্টার, কেপিজে হেলথকেয়ার; সবগুলো প্রতিষ্ঠানই ভারতীয়!
সংগঠনটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজ থেকে প্রাপ্ত নাম্বারে রোগী সেজে ফোন দিলে আয়োজনের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাদের নিবন্ধন ও বৈধতার বিষয়ে জানতে চাইলে প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকের কল কেটে দেয়া হয়। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও পুনরায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দেশের আইনানুযায়ী, দেশে বিদেশি ডাক্তারদের কাজ করার জন্য অনুমতি পেতে গেলে তাদের জন্য মোট ১২টি ধারা সম্বলিত নীতিমালার অধীনে অস্থায়ী নিবন্ধন নিতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ মেডিকেল ট্যুরিজম এসোসিয়েশন নামের ফেসবুক পেজটি চালু করা হয় আওয়ামী সরকারের পতন পরবর্তী সময়ে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখে।
এ সংগঠনের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা আছে মায়ামি সংবাদ নামের নিউজ পোর্টলের কিছু সংবাদ। তবে সংবাদগুলোর বেশিরভাগই সংগঠনের প্রেস সেক্রেটারি দাউদ আরমানের লেখা!
তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজের পোস্ট থেকে জানা যায়, তাদের সাথে ভারতীয় বিভিন্ন হাসপাতাল, আইভিএফ সেন্টার, ফার্টিলিটি সেন্টারের সাথে নিয়মিত মিটিং অনুষ্ঠিত হয়! এগুলোর মধ্যে আছে মানিপাল হেলথ এন্টারপ্রাইজ, জেআইএমএস হাসপাতাল, কলকাতার বিরালা ফার্টিলিটি সেন্টার।
এমন আয়োজনকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য হুমকি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার জন্য রোগীরা ভারতে চিকিৎসা সেবা নিতে যায়, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় না। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থ হারায় বাংলাদেশ। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশকে মেডিকেল হাব হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্নও স্বপ্ন হয়ে থাকবে বলে মনে করে অতিদ্রুত এমন আয়োজন বন্ধের দাবি করেছেন তারা।
প্ল্যাটফর্ম/