প্ল্যাটফর্ম সাহিত্য সপ্তাহ -৩২
” ভালো থেকো ওপাড়ে “
লেখকঃ
সাদ
৩য় বর্ষ
শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, টাঙ্গাইল
জীবনের খুব একটা সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ক্ষত বিক্ষত যোদ্ধার গল্প শুনতে পারলে যেমন অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়, তোমার সামান্য হাসি ছিলো আমার কাছে তার থেকে বড় অনুপ্রেরণা। তোমাকে নিয়েই লিখলাম না হয় আজ?
চাঁদনী রাত খুব ভালোবাসতে তুমি। তাইনা? জ্যোতস্নারাতে ব্যাকুল হয়ে উঠতে তুমি। আমি বাড়ি ফিরতে একটু লেট হলেই কেঁদে ভাসাতে তুমি। সেই যে একবার রাতে না খেয়ে ছিলে তুমি। বায়না ধরেছিলে এখনি পাহাড় দেখাতে হবে তোমায়। কি কান্নাটাই না করলে ফুপিয়ে! এতো আদরেও তোমার মন ভোলাতে পারিনি আমি।
আমার এক মেয়ে কলীগকে আমার গাড়িতে উঠতে দেখেছিলে তাই তুমি ২ দিন না খেয়ে ছিলে। তোমার মন ভোলাতে আমি সেই গাড়িটা বিক্রি করে দিয়েছিলাম।
বকুল ফুল পাওয়া যায় তোমার ওখানে? আমি যে এখনও বকুল ফুলের মালা গাথি তোমার জন্যে। ওই দেখো! শুকনো ফুলের স্তুপ! কেউ আর ওগুলা মাথায় পড়েনা!
আচ্ছা তোমার বাবাকে এখনও ফোন করো? নিশ্চুপ কথা হয় তোমাদের? কথা বলা শেষ করে তো আর আমার কাছে, আমার বুকে মুখ লুকায়ে চুপটি করে বসে থাকোনা! তোমার বাবা আমাকে মেনে নিয়েছে এখন জানো? আমাকে প্রায়ই দাওয়াত করে তোমার প্রিয় ঝাল মাংস খাওয়ায়। আমি প্রতিবারই এক প্লেট রেখে দেই তুমি আসবে বলে৷
এই! ভালো কথা! পাহাড়ের চূড়ার ওই কটেজটার কথা মনে আছে? আমাকে গতকাল ফোন দিয়েছিলো! আমাদের রুমটা অন্যকাউকে দিবে কিনা। অনেকদিন যাইনা যে! আমি বলেছি খবরদার না! আমি প্রতিদিন ভাড়া দেই তো! গুছিয়ে রাখবেন৷ আসবো আমরা।
তোমার প্রিয় চাদরটা আজ ধুয়ে দিলাম। বেশ নোংড়া হয়েছিলো। তুমি থাকলে আমাকে মার লাগাতে এমন দেখে। ও হ্যা, তোমার প্রিয় চেয়ারটা আজ শব্দ করছিলো। কিছু বলতে চাচ্ছিলো। আমি ভেবেছি বাতাসে। তুমি সেই যে অভিমান করলে, তারপর থেকে চেয়ারটা আর শব্দ করেনা। নিশ্চুপ হয়ে আছে। আমার মতন।
আচ্ছা, চুল বাধো? আমার বেলায় যত বায়না ছিলো! চুল খোলা রাখতে বললেই তোমার যত অজুহাত ছিলো।
তুমি কি একটু শুকিয়েছো? কেউ খেয়াল রাখে তোমার? আমি না খাইয়ে দিলে তো দিনে এক বেলাও খেতে না। এখন কে খাইয়ে দেয় তোমাকে?
জানো? এখন খুব হিংসে হয়! মনে আছে? রেস্টুরেন্টে একবার এক কাপলকে দেখে তুমি খুব হিংসা করছিলে। আমি বোঝাচ্ছিলাম, আমরা এদের থেকে বেশি কিউট! তুমি ওদের দেখানোর জন্যে আমাকে চুমু খেয়েছিলে! এই যে, এইখানটায়! হা হা! আমি কি লজ্জাটাই না পেয়েছিলাম! এখন হিংসে হয় আমার! কি দরকার ছিলো অভিমান করার?
আমার একবার জ্বর হয়েছিলো মনে আছে? তুমি সারারাত জেগে আমার মাথাটা তোমার বুকে শক্ত করে চেপে ধরে বসে ছিলে। আর বলছিলে কিচ্ছু হবেনা আমার। এতোটাই ব্যাকুল ছিলে যে জলপট্টি দিতেও ভুলে গেছিলে। তোমার কান্নার শব্দ, তোমার উষ্ণতা আমাকে সুস্থ করেছিলো। পরে অবশ্য একরাত জেগে থাকায় তুমি অসুস্থ হয়ে গেছিলে! অফিস থেকে আমার ছুটি নেয়া লেগেছিলো দুইদিন।
ঈদের আগে মেহেদী দিয়েছিলে মনে আছে? আমি একঘন্টা ধরে তোমার হাতে ফু দিচ্ছিলাম কখন শুকাবে! তুমি বলছিলে আরেকটু, আরেকটু! আমি বোকার মতন তাই করে যাচ্ছিলাম। পরে তুমি হেসে বললে এই মেহেদীতে ২ মিনিটেই রঙ হয়ে যায়। আমি খুব রাগ করেছিলাম!
ঈদেরদিনের কথা মনে আছে তোমার? তোমার বাবা তোমাকে দাওয়াত দিয়েছিলো! আমাকে দেয়নি তাই তুমিও যাওনি! তোমার বাবার বাসায় কি কি রেধেছে তাই শুনে আমাকেও ঠিক তাই তাই রান্না করে দিয়েছিলে! মাংসে একটু লবণ বেশি হয়েছিলো ঠিক! কিন্তু আমি সবটা খেয়েছিলাম!
জানো? গতকাল ঈদ ছিলো। তোমাদের ওখানে ঈদ হয়? নাকি ওখানে প্রতিদিনই ঈদ? কেন অভিমান করলে ওদিন? আমি যে আর একা থাকতে পারিনা!
It was a beautiful sad short story.i feel sad for man and its amaizing story again.writer has a real Talen.
It was a beautiful sad short story.i feel sad for the man and its amaizing story again.writer has a real Talent.