!
০১/০৩/২০১৫, সকাল ১০ ঘটিকা। হাসপাতালে উপস্থিত হয়েই খেয়াল করলাম একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা কান্নাকাটি করছে। এরকম কান্নাকাটি দেখলে প্রথমেই ধারনা করে নেওয়া যায়, তার কাছের কেউ হয়ত আজ ইন্তেকাল করেছেন । যথারীতি আমি আমার কাজ করা শুরু করলাম। ছিলাম অপারেশন থিয়েটারে।
দুপুর ১২ ঘটিকা। অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হওয়ার পথে দেখলাম, এডমিন অফিসে একজন লোক খুব উত্তেজিত ভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করতে করতে বের হল। সাথে পিছনে এডমিনের লোকেরা বলতে বলতে বের হল , আপনার যা বলার এখানে অফিসে বলেন। উনি তখন বলতে থাকেন , অফিসে কোন কথা হবে না। সেই লোক বাইরে এসে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকলো। দেখলাম তার সাথে তার আরো আত্মীয় বা বন্ধু সব চিৎকার করছে। তাকে কোনমতেই থামানো যাচ্ছিল না। অনেক লোক জড়ো হয়ে গেলো। কোত্থেকে সাংবাদিকরাও চলে আসল। এক পর্যায়ে সে রিসেপসনের এখানে ভাংচুর শুরু করল। এখানে বলে রাখা দরকার, হাসপাতালের লোক মনে করে সে অন্য পেশেন্টের এটেন্ডেন্টের গায়ে হাত তোলে। সেই লোকটি তার ড্রাইভারকে ভিরের মাঝে হাত উচিয়ে গাড়ি বের করতে বলেছিল, তার ড্রাইভারের সামনে RTV এর ক্যামেরামেন ছিল, যা দেখে তান্ডবকারীরা ভেবেছে, সে সাংবাদিকদের ভিডিও করতে নিষেধ করছে। তাকে মেরে ঘুষি দিয়ে রাক্তাক্ত করল, দেওয়ালের সাথে ঠেসে ঘুষাতে লাগল। তারপর সেই, মধ্যবয়স্ক মহিলা ক্যামেরার সামনে ভাষন দিতে শুরু করল, সাথে সাথে সেই লোকটি রুগী অপেক্ষা করার চেয়ার গুলোতে দাঁড়িয়ে, কন্সাল্টেন্টকে হুমকি দিল জবেহ করার। বার বার বলতে থাকলো, “ডাক্তার কই? আমার বাপকে মারসে, আমি তারে জবো করব।’’ তারপর পুলিস আসল, যদিও অনেক দেরী করে, তবুও পরিস্থিতি আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে আসে।
এখন কিছু বলা দরকার, যিনি মারা গেলেন তার সম্পর্কে। বয়স তার ৯০ এর কাছাকাছি। তার মাল্টি অরগান ফেইলুর ছিল। মূলত কার্ডিয়াক সমস্যা নিয়ে সে ভর্তি হয়েছিল। সাথে সাথে Chronic Renal Failure ও ছিলো। কার্ডিয়াক ভাবে কিছুটা স্ট্যাবল হলে তাকে নেফ্রলজি ওয়ার্ডে শিফট করা হয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর তাকে I.C.U. তে শিফট করা হয়। এর মাঝেই তার কনসালটেন্ট তার বিল কত হল তার খোজ রাখতে তাগদা দিয়ে আসছিলেন, যেহেতু উনি অনেকদিন ভর্তি। I.C.U. তে ছিলেন ৫ দিন। কাল রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে দিতে হয়। মারা যাওয়ার পরও তারা এমন আচরন করেননি। ডিসচার্জে বিল দেখে উনি মারা যাওয়ার কারন হিসেবে ডাক্তারের ভুলের কথা বলা শুরু করল এবং নানাভাবে বিল কমাতে চাপ দিতে থাকল । বিল সেকশানের লোকজন তখন বিল কমাতে হলে অফিসে যোগাযোগ করতে বলে। আর অফিসের এডমিন সেকশান থেকে বের হয়ে আসার পরের কথা আপনাদেরও এখন অজানা নয়।
পুনশ্চ, অন্য যে রুগীর এটেন্ডেন্টকে তারা মেরেছিল, শোনা গেছে উনি, সেই তান্ডবকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
ডাঃ মুসাব্বির হায়দার
চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থল চাই,
চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিরাপত্তা চাই ।
সারা বাংলাদেশে ২৩টি উপজেলায় ২০শ্য্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল আছে যেগুলোর কোনো স্থাপনা নাই কিন্তু ডাক্তার পোষ্টিং দেওয়া আছে,এসব হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক এবং অন্যান্য দের বেতন বছরে একবার হয় কারণ হিসেবে বলা হয় হাসপাতালের স্থাপনা নাই,আর ডাক্তাররা কেউ কেউ সদর হাসপাতালে বেগার খাটছে কোন বেতন ছাড়া।আমাদের কথা হল স্থাপনা না থাকলে কেন নিয়োগ দেয়া হয় আর বেতন কেন বছরে একবার হবে??সব ডাক্তার ত কনসালটেন্ট না যে বেতন না হলেও চলবে মেডিকেল অফিসাররা মানবেতর জীবন যাপন করছে।এগুলো দেখার কি কেউ নাই?
ডিটেইল পড়া যাচ্ছে না।ফন্টের সমস্যা মনে হচ্ছে।