প্ল্যাটফর্ম নিউজ, শনিবার, ২ মে, ২০২০
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পণ্য পরিবহনে বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় লাখো শিশুর জীবন রক্ষাকারী টিকা গ্রহণ ঝুঁকিতে পড়ছে বলে জাতিসংঘ সর্তক করেছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, অনেক দেশেই গুরুত্বপূর্ণ টিকার ঘাটতি দেখা যাওয়ায় বিভিন্ন দেশের সরকার ও বেসরকারি খাতকে সাশ্রয়ী মূল্যে টিকা পরিবহনের আহ্বান জানিয়েছে এই সংস্থাটি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে মরণঘাতী করোনাভাইরাস। যার ফলে বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেয় এই ভাইরাসটি। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন দেশের জারি করা লকডাউনের প্রভাব পড়ে বিমান খাতেও। যার কারনে কমে যায় বাণিজ্যিক ও ভাড়ায় বিমান চলাচল।
টিকা দান কর্মসূচি ইউনিসেফের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সংস্থাটির জানায়, টিকাগুলো হাম, পোলিও এবং টিটেনাস থেকে প্রতিবছর অন্তত ত্রিশ লাখ শিশুর জীবন রক্ষা করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা যখন করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনে কঠোর পরিশ্রম করছেন তখন ইউনিসেফ জানালো, মহামারির কারণে অন্যান্য রোগের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র মারিক্সি মারকাডো বলেন, বিভিন্ন দেশে করোনার বিস্তার ঠেকানোর জন্য লকডাউনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে আটকে পড়া টিকা পরিবহনের আহ্বান জানাচ্ছে ইউনিসেফ। বাণিজ্যিক বিমান চলাচল সীমিত হওয়ার কারনে সীমিত সামর্থ্যের অনেক দেশ উচ্চমূল্যে টিকা পরিবহন করতে পারছে না। ফলে টিকা দিয়ে প্রতিরোধ করা যায় এমন সব রোগের ঝুঁকিতে পড়েছে এইসব দেশের শিশুরা।
মারকাডো বলেন, ইউনিসেফ সরকার, বেসরকারি খাত ও এয়ারলাইন কোম্পানিদের জীবন রক্ষাকারী এসব টিকা সাশ্রয়ী মূল্যে পরিবহনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
গত মাসে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, করোনা মহামারিতে টিকা কর্মসূচি বিলম্বিত হওয়ার ফলে হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। করোনা সংক্রমণের আগেই সংস্থাটি আশঙ্কা করেছিল, বিশ্বে ২ কোটিরও বেশি শিশু প্রতি বছর হামের টিকা গ্রহণ করতে পারছে না।
এর আগে ২৭ এপ্রিল জেনেভায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেছেন, হয়তো করোনাভাইরাসের কারণে শ্বাসকষ্টজনিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঝুঁকি শিশুদের ক্ষেত্রে কম। কিন্তু টিকা দিয়ে প্রতিরোধ করা যায় এমন অন্য রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তারা। পোলিও, হাম, কলেরা, হলুদ জ্বর ও মেনিনজাইটিসের মতো রোগের বিরুদ্ধে নিয়মিত টিকাদান বিলম্বিত হওয়ায় পুরো বিশ্বে প্রায় ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ ভুগছে বলে জানান তিনি।
জিএভিআই গ্লোবাল ভ্যাকসিন জোটকে উদ্ধৃত করে মহাপরিচালক জানান, করোনা ভাইরাস মহামারির জন্য ২১টি দেশে অন্যান্য রোগের প্রতিষেধকের ঘাটতি দেখা গেছে। যার প্রধান কারণ সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা।
নিজস্ব প্রতিবেদক / আশরাফ মাহাদী