২০ মার্চ, ২০২০ ইং
‘করোনা ভাইরাস’ – সমসাময়িকের এক আতঙ্কের নাম। বাংলাদেশে এ নিয়ে নিয়ে এখন পর্যন্ত জনমনে ভীষণ উদ্বেগ বিরাজ করছে। দিন যত যাচ্ছে এ ভাইরাস দিয়ে সংক্রমনের সংখ্যা বাড়ছে। উচ্চমহলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এর বিস্তার রোধে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক ভাবে স্থগিত তন্মধ্যে একটি।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের স্ব স্ব নোটিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু এত প্রতিষ্ঠানের নোটিশের ভীড়েও একটি নোটিশে চোখ আলাদাভাবে আটকে যায়। রাজধানীর ডেমরা ‘ল কলেজের শিক্ষার্থী ও জনবান্ধব এই নোটিশটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত নোটিশটির বক্তব্য নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো –
“প্রিয় শিক্ষার্থী বৃন্দ,
আপনারা ইতিমধ্যে সবাই জেনেছেন যে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধ আছে। আপনাদেরকে আমি অনুরোধ করব এই বন্ধের সময় প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হবেন না। বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন এবং দেশ ও জাতির মঙ্গলের কথা চিন্তা করে এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকারী সকল সিদ্ধান্ত অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন।
আপনারা ইতিমধ্যেই দেখেছেন পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ এই সময়ে নাগরিকদের জন্য নানা সেবা যেমন- বাসা ভাড়া, খাবার ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিনা মূল্যে সরবারহ করছেন। কিন্তু আমাদের মত গরিব দেশের সরকার হয়ত আমাদের জন্য ইচ্ছা থাকার পরেও উন্নত দেশের মত এত সেবা বিনামূল্যে সরবারহ করতে পারবেন না। কিন্তু তাই বলে কি আমরা পিছিয়ে থাকবো? আমরা বাংলাদেশের জনগণ যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায় স্ব-ইচ্ছায় এগিয়ে এসেছি সবসময়।
প্রিয় আইনের শিক্ষার্থীগণ,
আপনাদের প্রতি আমার নির্দেশ আপনারা কলেজের এক মাসের বেতনের সমপরিমান টাকা দিয়ে কিছু চাল-ডাল, সাবান ইত্যাদি কিনে আপনার ঠিক আশেপাশে থাকে এমন দুটি দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করেন। আপনার এই মাসের বেতন কলেজ আপনার থেকে কম নিবে, অর্থাৎ এই শিক্ষাবর্ষে আপনাকে ১২ মাসের পরিবর্তে এগারো মাসের বেতন পরিশোধ করলেই হবে।
একটি কথা মনে রাখবেন কোন অবস্থাতেই অহেতুক বাড়ির বাহিরে অবস্থান করা যাবে না এবং আমাদের এই বিনামূল্যে দ্রব্যসামগ্রী প্রদানের মূল লক্ষ্য হবে যাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা কেটে খাওয়া মানুষ আছেন যারা হঠাৎ করে কর্মহীন হয়ে না খেয়ে না থাকেন।
যে যেখানেই থাকেন না কোন নিজ ইচ্ছায় এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এই জন্য কোন ভাবেই সকলকে একত্র হওয়া যাবে না। পরবর্তীতে কলেজ খুললে এই একমাসের টাকা প্রাপ্তি রশিদ আমার থেকে বুঝে নিবেন, এর জন্য কোন প্রমানেরও প্রয়োজন পড়বে না।
সর্বশেষ আমি আপনাদের আবার বলতে চাই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ধৈর্য্য ধারন করুন, বেশি বেশি ইবাদত করুন এবং সরকারী সকল সিদ্ধান্ত মেনে চলুন।
আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনায়।
আখনূক জাবীউল্লাহ
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত)
ডেমরা ল’ কলেজ, ঢাকা। ”
নিজস্ব প্রতিবেদক/ আব্দুল্লাহ আল মারুফ