প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, সোমবার
চীনের সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সিনোফার্মের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন নিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবদুল রহমান আল ওয়াইস। গত শনিবার থেকেই করোনার বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করা কোভিড যোদ্ধাদের শরীরে সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তৃতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আশাব্যঞ্জক ফল আসার পরে জরুরি ব্যবহারের জন্য আরব- আমিরাতে ওই ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর সিনোফার্মের সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিন যে নিরাপদ তা প্রমাণের জন্যই সবার আগে ওই টিকা নিয়েছেন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সিনোফার্মের পক্ষ থেকে গত জুলাই মাসে আরব আমিরাতে টিকা পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পরীক্ষামূলক ভাবে টিকাটির প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ সফল হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এসময় ২৮ দিনের ব্যবধানে দুই ডোজ টিকা দেওয়ার পর শতভাগ স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের এর তথ্য অনুযায়ী, ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন হিসেবে যে টিকা তৈরি করা হয়, এতে মৃত ভাইরাস বা ভাইরাস থেকে সংগৃহীত প্রোটিন ব্যবহৃত হয়। টিকা তৈরির এ প্রক্রিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ও হামের বিরুদ্ধে পরীক্ষিত। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীএক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
“টিকাটি সম্পূর্ণ আইন ও নিয়ম মেনে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটি নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণ হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের ওপর পরীক্ষার এটি অ্যান্টিবডি তৈরি করে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে”।
আরব আমিরাতে চালানো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৩১ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে যুক্ত করা হয়। আরব- আমিরাতে বসবাসকারী ১২৫ টি দেশের নাগরিকেরাও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। আরব-আমিরাতের চিকিৎসকেরা বলেছেন, টিকা পরীক্ষার সময় বিভিন্ন রোগ ও জটিলতায় ভুগতে থাকা এক হাজার ব্যক্তিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের কোনো মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এতে কেবল সাধারণ ফ্লু ভাইরাসের মতো গলাব্যথার মৃদু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সিনোফার্ম প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের টিকা পরীক্ষা চালিয়েছিল চীনে। পরের ধাপের পরীক্ষার জন্য আরব আমিরাত, বাহরাইন ও জর্ডানকে বেছে নেয়। এদিকে, আমিরাতে বড় ধরনের সমাবেশ বা জনসমাগমের নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে একই পরিবারের ১০ জন সদস্য যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান বা সমবেত হতে পারবে। এক টুইট বার্তায় জরুরি অবস্থা, সংকট ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিয়ে এবং পরিবারের যে কোনো অনুষ্ঠান ১০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অতিথিদের ২৪ ঘণ্টা আগেই করোনার পরীক্ষা করিয়ে নিতে বলা হয়েছে। একই রকমের নিয়ম জারি করা হয়েছে যে কোনো ধরনের প্রার্থনা এবং শেষকৃত্যের জন্যও।
উল্লেখ্য, আরব- আমিরাতে নতুন আক্রান্ত ১০ হাজার ৩২৬ জন সহ এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ হাজার ২৪২ জন। এর মধ্যে মারা গিয়েছেন ৪০৪ জন। দেশটিতে ইতোমধ্যেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৭৩ হাজার ৫১২ জন।
সূত্রঃ প্রথম আলো
নিজস্ব প্রতিবেদক/ উম্মে হাবিবা সিমীন