প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগ তারবিহীন পেসমেকার স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচারে আরেকধাপ এগিয়ে গেল চট্টগ্রাম।
গত ১৩ আগস্ট এক রোগীর হৃদপিণ্ডে আমেরিকান মেডট্রনিক ব্রান্ডের সবচেয়ে আধুনিক পেসমেকারটি স্থাপন করা হয়। রোগীর নাম গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। তিনি মিরসরাই উপজেলার নাহেরপুরের বাসিন্দা।
প্রখ্যাত ভারতীয় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. পিকে হাজরার নির্দেশনায় সহকারী অধ্যাপক ডা. আনিসুল আউয়ালের নেতৃত্বে সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইব্রাহীম চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. আশীষ দে ও ডা. বিপ্লব ভট্টাচার্য নতুন ডিভাইসটি সফলতার সঙ্গে সংযোজন করেন।
চট্টগ্রামে পেসমেকার স্থাপন নিয়মিত হলেও তারবিহীন (লিডলেস) পেসমেকার স্থাপন এটিই প্রথম বলে জানিয়েছেন হৃদরোগ বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. ছালমা নাহিদ।
সহকারী অধ্যাপক ডা. বিপ্লব ভট্টাচার্য জানান, বাংলাদেশে এটি দ্বিতীয় তারবিহীন পেসমেকার স্থাপন। এর আগে বেসরকারি অ্যাপোলো হাসপাতালে প্রথম তারবিহীন পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছিল। এবং বাংলাদেশের কোনও সরকারি হাসপাতালে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা এই প্রথম।
মাইক্রা নামে এই অতি ক্ষুদ্র ক্যাপসুল সদৃশ্য এই যন্ত্র কোনো রকম তার (ক্যাবল) ছাড়াই সরাসরি রোগীর হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে।
তিনি আরও বলেন, এত দিন হৃদরোগীদের কলার বোনের (বুকের ভেতর) ত্বকের নিচে পেসমেকার বসিয়ে শিরার ভেতর দিয়ে একটি তার (ক্যাবল বা লিড) হৃদযন্ত্রে সংযোজন করা হতো। তারবিহীন পেসমেকার সরাসরি রোগীর হৃদযন্ত্রে স্থাপন করা হয়। তারযুক্ত পেসমেকার ১-২ লাখ টাকায় প্রতিস্থাপন সম্ভব হলেও তারবিহীন পেসমেকারে ৪-৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে এ বছরের মে মাসে অ্যাপোলো হাসপাতালে আবু সোলায়মান নামক এক রোগীর হৃদপিণ্ডে পেসমেকার স্থাপন করা হয়। লিডলেস পেসমেকারটি বসাতে সময় লাগে ১৫ মিনিট। এ জন্য দীর্ঘকালীন হাসপাতাল অবস্থানের দরকার হয় না।
একটা ভিটামিন ক্যাপসুলের মত আকৃতির এই পেসমেকারটি শরীরে প্রবেশ করানো হয় কোন সার্জারী ছাড়াই। ওজনে মাত্র ২ গ্রাম এই পেসমেকারটি সাধারণ পেসমেকারের দশভাগের একভাগ।