লিখেছেন- ডা. মো. মুরাদ হোসেন মোল্লা
২৭মার্চ, ২০২০
করোনা প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কার্যকর হলো সামাজিক দূরত্ব। ঘরে বাইরে সর্বত্র। সামাজিক অনুষ্ঠান , বিভিন্ন আয়োজন ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা। পাশের বাড়ি , আত্মীয় বন্ধুর বাড়ি বেড়ানো নিষেধ। সরকার ছুটি ঘোষণা করেছেন। চাকুরেরা ঘরে বসে থাকেন। কারো কারো আছে জরুরি দায়িত্ব। আছে জরুরি দরকার, বাইরে যেতে হবে। সামাজিক দূরত্ব ৬ফিট বজায় রাখুন সর্বত্র। মুখে মাস্ক থাকুক। সর্দি কাশি থাকলে অবশ্যই ঘরে বসে থাকবেন, মাস্ক পরবেন। হাত ধোয়া চলবে।
ডিউটি তে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে লোক কমিয়ে ফেলুন। অফিস জব যদি ঘরে বসে হয় তো নিজে তাই করুন, অধীনস্থ দের করতে বলুন। যার অফিসে যেতেই হয়, তিনি ২সপ্তাহের জন্য অফিসে চলে যান। ঘরে না এসে যদি পারা যায় খুব ভালো। যদি আসতেই হয়, সপ্তাহে ১-২দিন আসুন। জরুরি কাজ থাকলে দ্রুত সম্পন্ন করুন। বাসায় কিছু দেয়ার থাকলে দরজার বাইরে রেখে অফিসে ফিরে যান। নেয়ার থাকলে নিয়ে চলে যান।
কম লোক, কম কম অফিসে আসা যাওয়া করলে রাস্তায় লোক কম হবে এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষা সহজ হবে।
অফিসের দায়িত্ব একাই সামলান। না পারলেই কেবল অপর ১-২ জনের একইভাবে অফিসে অবস্থান নিশ্চিত করুন। এরা কেউ ঘরে যাবে না।
বাইরে যাদের যেতেই হয়, পরিবারের কম বয়েসী রা যান এবং সবার সাথে দূরত্ব মেনে দ্রুত ঘরে ফিরে আসুন।
অফিসে, দোকানে, বাজারে সর্বত্র ৬ফুট দূরে দূরে স্থান দাগ দিয়ে চিহ্নিত করুন।
ভাবছেন কঠিন?
এই কাজটাই হুবহু হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, আয়া, ক্লিনার সবাই করছে। আপনাদের তবু দূরত্ব বজায় রাখা, চাইলে সম্ভব। হাসপাতালের ওরা রোগী থেকে দূরে থাকবে কী করে। তাই তাঁদের জন্য চাই সুরক্ষা পোশাক (PPE), টিকে থাকার লড়াইয়ে তাঁরা না টিকলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে, রোগী হয়ে যদি আপনার চিকিৎসা নিতে হয়, কাকে পাবেন?
ডাক্তার নার্সরাও ৩ভাগে ভাগ হয়ে ডিউটি করছেন। ১ভাগ রিজার্ভ, হঠাৎ জরুরি দরকার হলে আসবে। (যেকোনো ১গ্রুপ definite case, চিকিৎসা নিতে চলে গেলে ব্যাক আপ হিসেবে আসবে।) ১গ্রুপ কোয়ারেন্টাইন। suspected case, exposed to covid19 cases। আরেক গ্রুপ সারা হাসপাতালের চাপ নিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করছেন, হয়তো বাসায় ফিরতে পারছেন না, ডরমেটরিতে থাকছেন (যদি ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে)। কোথায় কী খাচ্ছেন তার নাই ঠিক।
আর হ্যাঁ, গর্ভবতী মায়েদের সবরকম ডিউটি থেকে বিরত রাখুন। সহকর্মী বা বস হিসেবে এই দায়িত্ব আপনাদের নিতেই হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা এটাই।
সবার সুস্থতা কামনা করি।