প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, রবিবার
আজ, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ রবিবার সারাদেশে মোট এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণ টিকাদানের এ কার্যক্রম শুরু করেন।
দেশে প্রথম দফায় অগ্রাধিকারভিত্তিক ১৮ শ্রেণির করোনা সম্মুখযোদ্ধা এবং ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বের নাগরিকরা বিনামূল্যে এই টিকা পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, আজ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা হতে প্রকাশিত কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন তথ্যের ফরম অনুযায়ী ঢাকা মহানগরে ৪৭ টি কেন্দ্রে ১ম ডোজ ভ্যাক্সিন গ্রহীতার মোট সংখ্যা ৫০৭১। যার মধ্যে পুরুষ রয়েছেন মোট ৩৭৭২ জন এবং নারী ১২৯৯ জন। এদের মধ্যে AEFI ( Adverse effects following immunization) অর্থাৎ ভ্যাক্সিন গ্রহণ পরবর্তী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনকারীর মোট সংখ্যা ৭ জন। ঢাকা মহানগরের কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভ্যাক্সিন প্রদান করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হতে।
অন্যদিকে, ভ্যাক্সিনের প্রতি মানুষকে আস্থাশীল করে তোলার লক্ষ্যে বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভ্যাক্সিন নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেখানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো টিকা নিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা বিভাগের অন্যান্য টিকাদান কেন্দ্রসমূহ ফরিদপুর, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইলে ১ম ডোজ ভ্যাক্সিন গ্রহীতার সর্বমোট সংখ্যা ৯৩১৪। যাদের মধ্যে পুরুষ ৭০২১ জন এবং ২২৯৩ জন নারী। ঢাকা বিভাগে সর্বমোট AEFI সংখ্যা ১০। ভ্যাক্সিন গ্রহীতার সংখ্যার দিক দিয়ে ঢাকার পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চটগ্রাম বিভাগ। চট্টগ্রামে ১ম ডোজ ভ্যাক্সিন গ্রহীতার সর্বমোট সংখ্যা ৬৪৪৩। যাদের মধ্যে পুরুষ ৪৯৪৪ জন এবং ১৪৯৯ জন নারী। সর্বমোট AEFI সংখ্যা ৫। এছাড়া রাজশাহীতে ৩৭৫৭ জন, খুলনায় ৩২৩৩, রংপুরে ২৯১২ জন, সিলেটে ২৩৯৬ জন, ময়মনসিংহে ১৬৯৩ জন এবং বরিশালে সর্বমোট ১৪১২ জন ১ম ডোজে এ ভ্যাক্সিন গ্রহণ করেছেন। সারাদেশে সর্বমোট প্রথম ডোজে ভ্যাক্সিন নিয়েছেন ৩১১৬০ জন।
উল্লেখ্য, গত (২৭ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টার পর রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দেশে প্রথমবারের মতো টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। গণবভন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। প্রথমে টিকা নেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এরপর পর্যায়ক্রমে টিকা নেন ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশ মো. দিদারুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ।
বর্তমানে তিনটি ব্যাচের প্রায় ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাক্সিন রয়েছে সরকারের কাছে। যার মধ্যে দুটি ব্যাচের মেয়াদ শেষ হবে এ বছরের এপ্রিলে এবং একটির শেষ হবে জুনে।
শুক্রবার ও অন্যান্য ছুটির দিন ব্যতীত প্রতি মাসে প্রথম দুই সপ্তাহ করে সর্বমোট ১২ দিন এই ক্যাম্পেইন চলবে। রাজধানীতে ২০৪টি ও রাজধানীর বাইরে দুই হাজার ১৯৬টি দল এ ভ্যাক্সিন প্রদান করবে বলে জানা গিয়েছে।