রোগী সুরক্ষা আইন ২০১৪
যেহেতু রোগী বা স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণকারীদের হয়রানী লাঘব করে সুচিকিৎসার উদ্দেশ্য পুরণকল্পে রোগী সুরক্ষা আইন প্ররণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়,
সেহেতু এতদ্বারা আইন করা হইল:-
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ।-
(১) এই আইন রোগী সুরক্ষা আইন,২০১৪ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে ।
(৩) সমগ্র বাংলাদেশে ইহার প্রয়োগ হইবে ।
২। সংজ্ঞা।- বিষয় বা প্রসংগের পরিপস্থি কোন কিছু না থাকলে, এই আইনে-
(১) “স্বাস্থ সেবা দানকারী ব্যক্তি” বলিতে বুঝাইবে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত নিবন্ধিত চিকিৎসক, যাহারা স্বাস্থ্য সেবা দান কাজে নিয়োজিত ( যাহাদের সাময়িক নিবন্ধন রহিয়াছে তাহারা ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন) নিবন্ধিত সেবক-সেবিকা, মিডওয়াইফ, চিকিৎসা সহকারী অথবা স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অন্য কোন ব্যাক্তি;
(২) “স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান” অর্থ জনগনের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান যাহা জনগনের স্বাস্থ্য সেবায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহন করে; যাহা সরকারী, স্বায়িত্বশাসিত আধা স্বায়িত্বশাসিত বা বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক, চিকিৎসকের চেম্বার, রোগ নির্নয়ের কেন্দ্র এবং চিকিৎসা সম্পর্কীয় অন্য কোন প্রতিষ্ঠান যাহা অসুস্থ্য ব্যক্তিকে সেবা প্রদান এবং সেবা প্রদানের জন্য গ্রহন করে;
(৩) “স্বাস্থ্য সেবা” বলিতে চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা সমুহকে বুঝাইবে:
(৪) “পেশাগত ইথিকস” বলিতে সংশ্লিষ্ট পেশার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সনদ সমুহ দ্বারা অবশ্য পালনীয় বিষয়াদি বুঝাইবে;
(৫) “স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনকারী” বলিতে সরকারী স্বায়িত্বশাসিত, আধাস্বায়িত্বশাসিত, বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক, চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার, রোগ নির্নয় কেন্দ্রে এবং চিকিৎসা সেবা গ্রহনের জন্য আগত ব্যক্তিকে বুঝাইবে।
(৬) “নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠান” বলিতে রোগীর সরকারী আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে বুঝাইবে;
(৭) “তথ্য” বলিতে রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত বা ব্যক্তিগত বিষয়াদি বুঝাইবে;
(৮) “আদালত” বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের বিধান মতে যে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানে বিচার কার্য সম্পন্ন হয় সে সকল প্রতিষ্ঠানকে বুঝাইবে;
(৯) “পেশাগত অবহেলা” বলিতে বুঝাইবে এই আইন দ্বারা সেবা দানকারী ব্যক্তির উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্যর্থতা যাহা তাহার পক্ষে মানবিক ভাবে বাস্তব অবস্থায় পালন করা সম্ভব;
(১০) “চিকিৎসা অবহেলা” বলিতে বুঝাইবে কোন প্রকার কারন ব্যাতিরেকে রোগীর প্রাপ্য চিকিৎসা প্রদান হইতে ¯া^স্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি নিজেকে বিরত রাখা যাহার দ্বারা রোগীর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সাধনের স¤া¢বনা থাকে;
(১১) “অপরাধসম অবহেলা” বলিতে বুঝাইবে রোগীর প্রতি ইচ্ছাকৃত ভাবে অবহেলা যাহার দ্বারা রোগীর স্থায়ী ক্ষতি সাধন বা মৃত্যু সংঘটিত হইতে পারে;
(১২) “ক্ষতি” বলিতে রোগীর শারীরিক , মানসিক বা কর্মক্ষমতার অনিষ্ট বুঝাইবে;
৩। আইনের প্রাধান্য।
আপাতত বলবৎ অন্য কোনও আইনে যাহা কিছু থাকুক না কেন এই আইনের বিধানবলী কার্যকর থাকিবে।
৪। এখতিয়ার।-
এই আইনের দ্বারা বা উহার অধীনে অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে;
৫। স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তির দয়িত্ব ও কর্তব্য।-
(ক) শপথ:- চিকিৎসক হিপোক্রিটাস শপথ, জেনেভা ঘোষনা (ওয়াল্ডমেডিকেল এসোসিয়েশন ২০০৬ অথবা সর্বশেষ সংস্করন), হেলসিনকি ঘোষনা (ওয়াল্ডমেডিকেল এসোসিয়েশন ২০১৩ অথবা সর্বশেষ সংস্করণ), সেবক ও সেবিকা ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল শপথ (সবশেষ সংস্করন) অনুযায়ী স্বাস্থ সেবা দানকারীগন রোগী, জনগন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকিবেন;
(খ) রোগীর প্রতি দায়িত্ব ঃ- মানসম্মত সেবা প্রদান, রোগী ও রোগীর অনুসংগীদেও (অঃঃবহফধহঃ) নিকট চিকিৎসা বিষয়ে তথ্য প্রদান ও চিকিৎসা প্রদানের অনুমতি গ্রহণ এবং জরুরী সেবা প্রদান;
(গ) মানসম্মত সেবাঃ- প্রত্যেক রোগীর চিকিৎসা প্রদানে সাধারণ মানসম্মত যতœ (ঈধৎব) ও ব্যবস্থা গ্রহন, যা মানসম্মত ভাবে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান সকল ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। যথা;
(১) দায়িত্ব প্রাপ্ত স্বস্থ্য সেবা দানকারী কর্তৃক কার্যকর যন্ত্রপাতি, ঔষধ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে (ওহঃবৎাবহঃরড়হ) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা;
(২) জটিল রোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনবোধে বিষয় ভিত্তিক সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট বিলম্ব না ঘটাইয়া প্রেরণ করা;
(৩) সকল রোগীর রোগের যথাযথ ও পূর্ণাংগ ইতিহাস, পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলাফল, অনুমিত রোগ , প্রদত্ত চিকিৎসা এবং শৈল্য চিকিৎসা যাহা প্রদান করা হইয়াছে তাহা সঠিক ভাবে লিপিŸদ্ধ করা;
(৪) সরকারের প্রচলিতি আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী হাসপাতাল ক্লিনিক নার্সিং হোম ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্র সমুহের পরিচালনা পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহন করা;
(৫) কোন প্রকার দুর্ঘটনা অনুমিত হইবার সংগে সংগে তাহার প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক ব্যবস্থা গ্রহন করা;
(৬) সকল ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা ও সময়নুবর্তিতা পালন করা;
(৭) মানবিক কারনে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি বা স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনকারীকে প্রাথমিক ও জরুরী চিকিৎসা সেবা দিতে বাধ্য থাকিবে;
(ঘ) রোগী ও রোগের অনুসংগীকে (অঃঃবহফধহঃ) তথ্য প্রদান:-
(১) রোগী ও রোগীর অনুসংগীকে প্রয়োজনীয় ও বিকল্প চিকিৎসা বিষয়ে জ্ঞাত করা এবং চিকিৎসাকালীন পরীক্ষা নিরীক্ষা, ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, চিকিৎসা পদ্ধতি (চৎড়পবফঁৎব) এবং অস্ত্রোপচারের জটিলতা (ঈড়সঢ়ষরপধঃরড়হ) সম্বন্ধে জ্ঞাত করা;
(২) রোগীর চিকিৎসার ব্যয় ও ব্যয়ের খাতওয়ারী (ঊীঢ়বহফরঃঁৎব ইৎবধশ টঢ়) এবং চিকিৎসার জন্য সময়ের বিষয়ে রোগী ও রোগীদের অনুসংগীদের জ্ঞাত করা;
(ঙ) সর্বসাধারনের প্রতি দয়িত্বঃ-
স্বাস্থ্য সেবা দানকারী কর্তৃক সর্বসাধারনের স্বাস্থ্য শিক্ষা, দুর্যোগ মোকাবেলায় চিকিৎসা সেবা প্রদানত বাধ্যতামুলক জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনকরনে ভুমিকা রাখা
(চ) আইন শৃখলা বিষয়ক:-
(১) হত্য, আত্মহত্য, দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতি লাঞ্ছিত বা প্রহৃত হওয়ার জন্য ক্ষতি বিষ প্রয়োগ অন্যের দ্বারা যে কোনও ধরনের আঘাত জনিত ক্ষতি অগ্নিদগ¦ হওয়া বেআইনী গর্ভপাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে পুলিশকে অবহিত করন
(২) মৃত্যুকালীন ঘোষনা (ফুরহম ফবপষধৎধঃরড়হ)এর ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধিবিধানের আলোকে ব্যাবস্থা গ্রহন ।
৬। পেশাগত ইথিকস ।
(১) যে চিকিৎসকযে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার জন্য নিবন্ধন প্রাানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যোগ্য বিবেচিত হন নাই, তিনি সেই চিকিৎসা প্রদান থেকে নিজেকে বিরত রাখিবেন;
(২) বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (ইগউঈ) দ্বারা স্বীকৃত নয় এমন কোন ডিগ্রী, ডিপ্লোমা বা পদবী ব্যবহার করা যাবেনা;
(৩) কোন রোগীকেই রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্টি জাতীয়তা বা লিংগ ভেদে সেবা প্রদান হইতে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তি নিজেকে বিরত রাখিতে পারিবেন না;
(৪) রোগী বা রোগীর সংগী দ্বারা দেয়া তথ্য কোনও ভাবেই কোন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান,
সন্তানাদি সহ আত্মীয় বা নিয়ন্ত্রন কারী কর্তৃপক্ষের নিকট রোগীর অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করা যাইবেনা। তবে আদালতের আদেশে শুধূমাত্র সংশ্লিষ্ট আদালতের নিকট প্রকাশ করা যাইবে এবং সকল রোগ বিধি অনুযায়ী সরকারী সংস্থায় অবহিত করা প্রয়োজন তাহা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে বা (ঐওঠ-অওউঝ) এর ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীকে অবহিত করা যাইবে;
(৫) স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে কোন প্রকার মিথ্যা প্রত্যয়ন পত্র বা বিল প্রদান করা বা রোগীর নিকট হইতে প্রাপ্ত ফি বা পরিতোষিক বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মুল্য কোন ভাবে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংগে অংশীদারিত্ব গ্রহন করা যাইবেনা ;
(৬) রোগীর চিকিৎসার সংগে সংযুক্ত না থাকিলে সেই রোগীর মৃত্যু সনদপত্র প্রদান করা যাইবে না;
(৭) কোনও বিশেষায়িত বিষয়ে যথাযত প্রশিক্ষিত বা প্রশিক্ষন প্রাপ্ত না হইয়া সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদানে নিজেকে জরিত করা যাইবে না;
৭। নিবন্ধন বাতিল ।
(ক) স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনকারী বা রোগীর প্রতি কোনও প্রকার অবহেলা প্রমানিত হইলে বা রোগীর ক্ষতি সাধিত হইলে সংশ্লিষ্ট সেবা দানকারী ব্যক্তির নিবন্ধন , সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন প্রদান কারী প্রতিষ্ঠানের বিধি দ্বারা অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী সাময়িক বা স্থায়ী ভাবে বাতিল করিতে পরিবে;
(খ) এই আইনে ধারা-৬ এ উল্লেখিত দায়িত্ব পালনে কোন চিকিৎসক সোবা দানকারী ব্যক্তি ব্যার্থ হইলে বা ব্যত্যয় ঘটাইলে তাহার উপর এ আইনের ধারা ৭(ক) আরোপ করা যাইবে;
৮। দন্ড।-
(ক) স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তির পেশাগত ও চিকিৎসা অবহেলা দ্বারা স্বাস্থ্য সেবা বা চিকিৎসা গ্রহনকারী ব্যক্তির জীবন যাদি ঝুকিপূর্ণ হয়, তবে তাহার বিরুদ্ধে প্রমান সাপেক্ষে অনধিক তিন বৎসরের কারাদন্ড বা দুই লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি আরোপ করা যাইবে;
(খ) স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করার ক্ষেত্রে অপরাধসম অবহেলা দ্বারা রোগীর মৃত্যু হইলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কতৃপক্ষেও বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ড বিধি ধারা ৩০৪-ক প্রয়োগ করা যাইবে;
৯। অপরাদের ধরন।-
এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমল অযোগ্য ও জামিনযোগ্য হইবে।
১০। বিধি প্রনয়নের ক্ষমতা।-
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার গেজেটড প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করিতে পরিবে।
স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা অইন, ২০১৪
যেহেতু চিকিৎসা ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্বারা আইন প্রণয়ন করা হইলঃ-
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রত্যাবর্তন ও প্রয়োগ।-
(১) এই আইনে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা অইন, ২০১৪ নামে অবিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
(৩) সমগ্র বাংলাদেশে ইহার প্রয়োগ হইবে।
২। সংজ্ঞা।- বিষয় বা প্রসঙ্গেও পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) “স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান ” অর্থ জনগনের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান যাহা জনগনের স্বাস্থ্য সেবায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহন করে; যাহা সরকারী স্বায়ত্বশাসিত , অধাস্বায়িত্বশাসিত বা বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, চিকিৎসকের চেম্বার , রোগ নির্ণয় কেন্দ্র এবং চিকিৎসা সম্পর্কীয় অন্য কােন প্রতিষ্ঠান যাহা অসুস্থ্য ব্যক্তিকে সেবা প্রদান এবং সেবা প্রদানের জন্য গ্রহন করে।
(২) “স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তি” ”বলিতে বুঝাইবে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত নিবন্ধিত চিকিৎসক, যাহারা স্বাস্থ্য সেবা দান কাজে নিয়োজিত ( যাহাদের সাময়িক নিবন্ধন রহিয়াছে তাহারাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন) নিবন্ধিত সেবক-সেবিকা, মিডওয়াইফ, চিকিৎসা সহকারী অথবা স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অন্য কোন ব্যাক্তি;
(৩) “অপরাদী” বলিতে এই আইনের অধীনে কোন ব্যক্তি নিজে অথবা কোন সংগঠনের সদস্য বা কর্মী বা গোষ্ঠির বা সংঘের কোন সদস্য হইয়া সহিংস কর্মকান্ড বা বিশৃঙ্খলা সংঘঠিত কওে অথবা যে কোন অপরাদ করার চেষ্টা কওে অথবা প্ররোচনা দেয়;
(৪) “সম্পত্তি” বলিতে কোন সেবা দানকারী ব্যক্তি বা স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বমুলে মালিকাধীন বা দখলাধীন বা নিয়ন্ত্রনাধীন কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বা চিকিৎসা যন্ত্র বা চিকিৎসা যন্ত্রাংশ;
(৫) “আদালত” বাংলাদেশের প্রচলিত আ নের বিধান মতে যে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানে বিচার কার্য সম্পন্ন হয় সে সকল প্রতিষ্ঠানকে বুঝাইবে;
(৬) “অবহেলা” বলিতে স্বস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তি বা স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানকতৃক সেবা গ্রহন কারীর প্রতি ইচ্ছাকৃত ভাবে যথাযথ দক্ষতার সহিত সেবা দানে ব্যর্থতা, যাহার দ্বারা সেবা গ্রহনকারীর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি, জীবনের ঝুকিপূর্ণ হওয়া বা মৃত্যুর কারণ হওয়া;
৩। আইনের প্রাধান্য।-
আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।
৪। এখতিয়ার।-
এই আইন দ্বারা বা ইহার অধীনে অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে।
৫। অপরাধ।-
স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যাক্তির প্রতি কোন সহিংস কাজ বা স্বাস্থ্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পত্তির ক্ষতি সাধন, বিনষ্ট, ধ্বংস বা উক্তরুপ সম্পত্তি অপরাধী কর্তৃক নিজ দখলে নেয়া অপরাধ বলে গন্য হবে।
৬। অপরাধের ধরণ।-
ধারা-৫ এর অধীনে সংঘঠিত অপরাধ আমলযোগ্য জামিন অযোগ্য হইবে।
৭। দন্ড।-
ধারা ৫- এর অধীনে কোন অপরাধ সংঘঠিত করিয়াছে বলিয়া পরিগনিত হইলে অপরাধ করার কারনে অপরাধী অনুর্ধ তিন বৎসরের কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে;
৮। ক্ষতিপুরন আদায়।-
(১) ধারা -৫ এর অতিরিক্ত কোন অপরাধ সংগঠিত করিরে বা সম্পত্তি ক্ষতি করিলে বিচারক আদালতের আদেশ সাপেক্ষে অপরাধী উভয় ক্ষতিপুরণ দিতে বাধ্য থাকিবে। উক্ত ক্ষতি পুরণের অর্থ স্বাস্থ্য সেবাদানকরী প্রতিষ্ঠান বা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির বরাবর (যাহার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) প্রদান করিতে হইবে;
(২) অপরাধী নির্ধারিত ক্ষতিপুরন না দিলে“ সরকারী দাবী আদায়” আইন মোতবেক
ক্ষতিপুরন আদায় করা হইবে;
৯। স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার।-
স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তি বর্গের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অবহেলার অভিযোগ কোন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উত্থাপন করিলে ধারা-১০ অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত না হইলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সেবাদানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে গ্রেপ্তার করা যাইবেনা। এর ব্যত্যয় ঘটাইলে শৃঙাখলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অপরাধ করিয়াছেন বলে গন্য হইবে।
১০। বিশেষজ্ঞদেও মতামত গ্রহন।-
স্বাস্থ্য সেবা দানকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন প্রকার অবহেলার অভিযোগ উত্থাপিত হইলে আদালত অবহেলার বিষয়ে অভিযোগ গঠনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ৩(তিন) জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (সহযোগী অধ্যাপক/ সিনিয়র কনসালটেন্ট এর নীচে নহে) সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির নিকট অবহেলার বিষয়ে মতামতের জন্য প্রেরন করিবেন।
১১। বিধি প্রণয়ের ক্ষমতা।-
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার,সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।