আজ ৪ ডিসেম্বর,২০১৭।
অবশেষে সকল দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলেন পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
৩ ডিসেম্বর বুধবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকগন কলেজের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে, ১৩ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
এর আগে, তারা ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়ে ১৩ দফা দাবি লিখিত আকারে কলেজ কর্তৃপক্ষকে পেশ করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত ১৫ দিন শেষ হয়ে গেলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ যখন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই, তখন সকলে এই আন্দোলনের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন।
তাদের ১৩ দফা দাবীসমূহঃ
১। শেষ পেশাগত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর ফর্ম ফিলাপের টাকা ব্যতীত কোনরুপ বেতন আদায় করা যাবে না।
২।ইন্টার্ন ডাক্তারদের বেতন বৃদ্ধি করে ১২০০০ টাকা করতে হবে। উল্লেখ্য থাকে যে ,যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তির সময় ডেভেলপমেন্টাল ফি দিয়ে ভর্তি হয়েছে তাদেরকেও বেতনের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বিঃদ্রঃযাদের ইন্টার্নশীপের বেতন নেই তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রতি মাসের দশ তারিখের মধ্যে এই বেতন পরিশোধ করতে হবে।
৩। কলেজ অধ্যয়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা গ্রহন করার সময় চিকিৎসা বাবদ ফি সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিতে হবে। অভিভাবকের ক্ষেত্রে ৫০% ছাড়ে চিকিৎসা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
৪। ইন্টার্নী ডাক্তারদের নিয়ে “ইন্টার্নী ডাক্তার এসোসিয়েশন” গঠন করে দিতে হবে।উল্লেখ্য থাকে যে এই এসোসিয়েশন গঠন করার সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত উপদেষ্টারা উপস্থিত থাকবেন এবং অনুমতি প্রদান করবেন।
৫।ভর্তির সময় যে ডেভেলপমেন্টাল ফি নেওয়া হয় এরপর থেকে শেষ বর্ষ পর্যন্ত বেতন এবং পরীক্ষার ফি ব্যতীত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অন্য কোন টাকা আদায় করা যাবে না।
৬।প্রত্যেক পেশাগত পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের সময় আদায়কৃত ফর্ম ফিলাপ বাবদ গৃহীত টাকা কমাতে হবে।
৭।কলেজের যে কোন টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে রশিদ দিতে হবে।
৮। বেতন বিলম্বে দেওয়ার ক্ষেত্রে যে জরিমানা নেওয়া হয় , ২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ টাকা করতে হবে।
৯।নিয়ম অনুযায়ী হোস্টেলে এক বছর থাকার পর হোস্টেল ছাড়ার ক্ষেত্রে তাকে দ্রুত অনুমতি দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোন টাকা আদায় করা যাবে না।
১০। কলেজে ইমার্জেন্সি ইউনিট এবং এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে হবে।
১১। হোস্টেল ফি বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে এবং খাওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে খাদ্যের ব্যবস্থা এবং খাওয়ার মান উন্নত করতে হবে।
১২।বহির্বিভাগে চিকিৎসা প্রদানের সময় যেসকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তা সম্পূর্ণ কলেজ থেকে সরবরাহ করতে হবে।
১৩।ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় পাশ করার ১৫ দিনের মধ্যে অন্যান্য কলেজের ন্যায় ইন্টার্নশীপ দিতে হবে এবং ইন্টার্নশীপ শেষ হওয়ামাত্র যথাসময়ে ইন্টার্ন সার্টিফিকেট দিতে হবে ।
আন্দোলনের প্রথম দিন তারা কলেজ প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়ে, ফটকের সামনে অবস্থান করেন । সেখানকার শিক্ষার্থী দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এই আন্দোলন তারা চালিয়ে যাবে । অবশেষে রাত নয়টার দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের সকল দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত তাদের দাবিসমুহ বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শুধু পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজই নয়, দেশের বেশির ভাগ বেসরকারি ডেন্টাল এবং মেডিকেল কলেজে এই ধরনের অনিয়ম কলেজ কর্তৃপক্ষ চালিয়ে যাচ্ছে শুরু থেকে।