বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন বছর আগে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্রটি চালু করা হলেও উত্তপ্ত হয়ে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত যন্ত্রটি পুনরায় চালু করার কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি।
একইভাবে পড়ে আছে জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের এমআরআই যন্ত্রটিও। এটিও একই দামে কেনা। দক্ষ জনবলের সংকটে যন্ত্রটি চালু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলার দুটি সরকারি হাসপাতালেই এমআরআই যন্ত্র বন্ধ থাকায় রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের বাড়তি টাকা খরচ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এমআরআই পরীক্ষা করতে হচ্ছে পাশাপাশি বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে যন্ত্রটি সরবরাহ করে এসটিএমএস নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরের বছর যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়। ওই বছরের ৩ মার্চ ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের একটি কারিগরি দল এমআরআই যন্ত্রটি পর্যবেক্ষণ করে। তার পরের বছর ২০২২ সালের মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্রটি চালু করা হয়। কিন্তু যন্ত্রটি অত্যধিক উত্তপ্ত হওয়ায় বিশেষজ্ঞ কারিগরি দল সেটি না চালানোর পরামর্শ দেয়। এখন পর্যন্ত এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই যন্ত্রটি চালু করা হয়নি।
আজ প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকের প্রেরিত প্রতিনিধি হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগে গিয়ে এমআরআই যন্ত্রটির কক্ষ তালাবদ্ধ দেখতে পেয়েছে। তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে যন্ত্রের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির কক্ষও।
এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগে কর্মরতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই বছর আগে এমআরআই যন্ত্রটি চালু করা হলে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। এরপর আর তা চালু হয়নি। যন্ত্রটি সচল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হলেও কাজ হয়নি।
২০২১ সালের ১১ অক্টোবর জেলা সদর হাসপাতালে এমআরআই যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু দক্ষ টেকনোলজিস্ট না থাকায় এটি চালু করা যায়নি। দীর্ঘ দুই বছর পর গত বছরের অক্টোবরে মাত্র দুজন টেকনোলজিস্ট দিয়ে কোনোরকমে এমআরআই যন্ত্রটির কার্যক্রম চালু করা হয়। তবে এর দুই সপ্তাহ পর একজন টেকনোলজিস্ট অন্যত্র বদলি হওয়ার পর থেকে আবার যন্ত্রটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী