বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫
হৃদরোগ, স্ট্রোক, শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার। আর এই তামাকব্যবহার জনিত কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ অকালে মারা যায়; অথচ এটি প্রতিরোধযোগ্য। এ অবস্থায় মৃত্যু কমাতে এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি অবিলম্বে পাস করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের অগ্রগতি ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে চিকিৎসকদের সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ দাবি জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে আশঙ্কাজনকভাবে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব ৩ কেটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করেন (গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে)। একইসঙ্গে ধূমপান না করেও বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। এসব দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের লক্ষ্যে ৯ জন উপদেষ্টা ও তিনজন সচিবের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করেছে। আমাদের দাবি, অধূমপায়ীদের সুরক্ষা ও তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে অতিদ্রুত আইনটি পাস করা হোক।
সেমিনারের প্রধান অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, তুলনামূলক সহজলভ্য হওয়ায় আমাদের দেশে তামাক সেবনের হার দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে বেশি। তামাকজনিত মৃত্যু আমাদের আতঙ্কিত করে তুলছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে দুটি হাতিয়ার একটি আইন, অন্যটি ট্র্যাক্স বৃদ্ধি করা। ট্র্যাক্স বাড়ানো হলে তামাকের ব্যবহার কমে আসে। এজন্যই তামাক কোম্পানি সবসময় আইন তৈরিতে ও ট্র্যাক্স বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। এ অবস্থায় অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় প্রদান এবং নতুন প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচাতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাস করতে হবে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কর্মসূচি পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) শেখ মোমেনা মনি ও মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, বিসিআইসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের এন্টি-টোব্যাকো অ্যাডভোকেসির মেম্বার সেক্রেটারি ডা. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইনসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্ল্যাটফর্ম/