আজ ৮ মে, বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৮ মে, ২০২১, শনিবার

আজ ৮ মে, বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। প্রতিবছর একটি মূখ্য প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হয় দিনটি। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় “সারা বিশ্বের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার অর্জনে বাঁধা দূরীকরণ”। এই রোগটি সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কিত কিছু তথ্য। থ্যালাসেমিয়া রক্তের এমন একটি রোগ যা দেহে হিমোগ্লোবিনের অস্বাভাবিকতা তৈরি করে। এই রোগের ফলে লোহিত রক্ত কোষ ধ্বংস করে দেয়, যা অ্যানিমিয়ার দিকে নিয়ে যায়। লোহিত কণিকার ভেতরে থাকে হিমোগ্লোবিন। এই হিমোগ্লোবিন আয়রন ও গ্লোবিন প্রোটিন দ্বারা গঠিত। আমাদের প্রধান গ্লোবিন দুই জোড়া চেইন দ্বারা গঠিত- আলফা ও বিটা। থ্যালাসেমিয়ায় যে সমস্যাটা হয় তা হলো এ দুই জোড়া গ্লোবিনের যে কোনো একজোড়ার তৈরি হওয়া কমে যায়, যাকে আমরা আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া বলে থাকি। ব্যাপারটা হলো একজোড়া চেইনের তৈরি হওয়া যখন কমে যায় তখন সঙ্গের অন্য জোড়ার তৈরি হওয়া বেড়ে যায়। বেড়ে যাওয়া গ্লোবিন প্রিসিপিটেশন হয়, যার ফলে লোহিত কণিকাটি ভেঙে যায়। আবার তার মধ্যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণও কমে যায়। ফলে হিমোগ্লোবিনের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা কমে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাত শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে ৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে।

থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এ রোগীরা রক্তশূন্যতায় মারা যায়। এখনো এ রোগটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা কম। শুধু অসচেতনতার কারণে প্রতিবছর প্রায় ৭ থেকে ১০ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন থ্যালাসেমিয়ার একটি কার্যকর চিকিৎসা, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

তবে এর চিকিৎসা সবসময় সফল নাও হতে পারে। এছাড়া জিন থেরাপি এবং স্টেম সেল থেরাপিও থ্যালাসেমিয়ার একটি কার্যকর চিকিৎসা। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো প্রতিরোধ।

তাই সারা বিশ্বে সাধারণ মানুষদের মধ্যেই সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ৮ই মে থ্যালাসেমিয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সরকারি ও বেসরকারি নানা সংগঠনের উদ্যোগে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা নিয়ে প্রচার চালানো হয়। ১৯৯৬ সালে গঠিত হয় ‘থ্যালাসেমিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন’ নামে একটি বেসরকারি সংগঠন। যেখানে বিশ্বের ৫৫টি দেশের ১০৮ জন সদস্য কাজ করে চলেছেন। এ ছাড়াও আরও বহু সংগঠন রয়েছে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এই ভয়ঙ্কর রোগটির হাত থেকে নবজাতক শিশুদের অকালে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে।

 

Jannatun Nur Aymon

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

রত্নগর্ভা মা: পর্ব-১

Mon May 10 , 2021
সোমবার, ১০ মে, ২০২১ ‘মা’ দিবসে প্ল্যাটফর্ম গ্রুপের একটা পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা… যেখানে আমাদের ডাক্তার কমিউনিটিতে এমন মায়েদের খোঁজ করা হয়েছিলো, যার সব সন্তানই ডাক্তার! তাই আমি এমন একজন রত্নগর্ভা মায়ের কথা বলবার লোভ সামলাতে পারলাম না। মায়ের নাম শাহানারা আকতার চৌধুরী, আর এই মায়ের সন্তানেরা হলো.. 1. Dr. Tarzeen […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo