রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিবাদ এবং আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএস সাইফুল ইসলাম। আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে নিজ কার্যালয়ে এই ঘোষণা দেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪শে সেপ্টেম্বর নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় জুনায়েদ নামের ০৮ বছরের এক শিশুরোগী। তারপর ২৭শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শিশু ওয়ার্ডে জুনায়েদের মৃত্যু হয়।চিকিৎসাধীন শিশুর মৃত্যুতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগ এনে রোগীর স্বজন কর্তৃক চিকিৎসক এবং নার্সদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।
চিকিৎসকদের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলার প্রতিবাদে ৪ দফা দাবিতে শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর কর্মবিরতি ঘোষণা করেন হাসপাতালের সর্বস্তরের চিকিৎসকরা। দাবি আদায়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন তারা।
তাদের দাবিগুলো ছিল—
১. গতকাল শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) শেবাচিম হাসপাতালের শিশু মেডিসিন বিভাগে কর্মরত ইন্টার্ন ও প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের হুমকিতে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা।
২. হাসপাতালে ডাক্তারদের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক ন্যূনতম ৩০ জন পুলিশ সদস্য নিয়োজিত করতে হবে এবং হাসপাতালে কর্মরত আনসার সদস্যের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি করতে হবে।
৩. হাসপাতালে রোগীদের সেবার মানোন্নয়নের জন্য হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি করা বন্ধ করতে হবে এবং একজন রোগীর সাথে একজনের বেশি দর্শনার্থীর প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪. অনতিবিলাম্ব চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।
কিন্তু, নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও কোনো সমাধান দৃশ্যমান হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে পরিচালকের পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তীব্রতা উপলদ্ধি করে আন্দোলনের একপর্যায়ে পদত্যাগ করেন ডা. সাইফুল ইসলাম।
হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরিতেও তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে চিকিৎসকরা জানান হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নানা কর্মকান্ড করে আসছিলেন।
তারা বলেন, সর্বশেষ এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এই পক্ষপাতমূলক আচরণ নিয়ে তার এখানে দায়িত্ব পালন করার অধিকার নেই।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: তাসনিম জান্নাত ইকরা