প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ জুন ২০২০, সোমবার
আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল থেকে সদ্য অব্যাহতি নেওয়া ডাক্তার শান্তা সেখানকার বিভিন্ন অব্যবস্থার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি পোস্টে তুলে ধরেন।
আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল কোভিড ইউনিট চালু করে এবং এটি ছিল চুক্তিভিত্তিক। ডা. শান্তা ভেবেছিলেন কর্তৃপক্ষ এখানে কোন সমস্যা করবে না। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের সেবা দেয়ার একটা মানসিকতাও কাজ করেছিল তার মধ্যে। প্রথম থেকেই তারা নিম্নলিখিত চুক্তি সমূহের ভিত্তিতে দফায় দফায় মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করেঃ
১. ৪৮ হাজার টাকা স্যালারি
২. দশ দিন ডিউটি
৩. চৌদ্দ দিন কোয়ারেন্টিন, পরবর্তীতে ৬ দিন ছুটি
৪. হোটেলে থাকার ব্যবস্থা
৫. খাবারের ব্যবস্থা
৬. যাতায়াত ব্যবস্থা
৭. চিকিৎসা ব্যবস্থা
একই সাথে সম্পূর্ণ সুরক্ষা সামগ্রীও দেবার অঙ্গীকার করা হয়।
কিন্তু এক মাস অতিক্রান্ত হবার পূর্বেই তাদের চেহারা পাল্টে যায়। সরকারের সাথে চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে এই অজুহাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হোটেল, যাতায়াত, খাবারের ব্যবস্থা সবই বন্ধ করে দেয়। অথচ প্রতিদিন, প্রতি রোগী থেকে তারা স্বাভাবিক বিলই রাখছিল।
সবচাইতে অদ্ভুত ব্যাপার হিসেবে উল্লেখ করে ডা. শান্তা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা ডিউটিতে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাও বাতিলের কথা বলছে এবং একই সাথে কর্মঘন্টা বাড়িয়ে নেবারও পরিকল্পনা করছে। সবকিছু বাতিল করে, এসবের বদলে তারা কর্তব্যরত চিকিৎসককে মাত্র ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। থাকার ব্যবস্থাও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের স্ব উদ্যোগে করে নেবার জন্য বলা হয়েছে।
বর্তমান যারা ডিউটি করছেন, তারা যদি চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেয়, সেক্ষেত্রে তারা কিছু নতুন ইন্টারভিউ নিয়ে রাখছে এবং তাদের নতুন ইন্টার্ন দ্বারা করোনা ইউনিট চালু রাখার পরিকল্পনা করছে।
ডা. শান্তা অনুতপ্ত হয়ে তাই অনুরোধ করেছেন কেউ যেন নতুন করে সেখানে যোগ না। ওখানকার বর্তমান মেডিকেল অফিসার এবং নতুন ইন্টার্নদের বলেছেন যাতে তারা এত ‘বোনলেস, স্পাইনলেস’ না হোন এবং সহকর্মীদের ছাঁটাই করে নিয়ে নিম্নমানের স্যালারি ও সুবিধাবিহীন ডিউটি করে তারা যেন চিকিৎসক সমাজের সাথে প্রতারণা না করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যারাই এসব অন্যায়ে সাহায্য করবেন, তাদেরকে সবাই চিনে রাখবে মীরজাফর হিসেবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ মেহেনাজ সুলতানা তামান্না