প্ল্যাটফর্ম সাহিত্য সপ্তাহ -৭
” আমার মিটফোর্ড ”
বন্ধুরা আমার!! আচ্ছা বুয়েট আপনাদের কি দিয়েছে?
বা ডি.এম.সি. কি দিয়েছে? কিংবা ডি.ইউ.???
দিয়েছে বিশ্বমানের শিক্ষা, দিয়েছে নিজের সহপাঠ্যক্রমিক দিকটিকে সবার সামনে তুলে ধরার সুযোগ, দিয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ হবার সুযোগ,দিয়েছে বিশ্ব সম্ভারে নিজের সবটুকু উজার করে দেবার রাস্তা,দিয়েছে সামনের পথ চলার অনুপ্রেরনা, মানবসেবায় বলীয়ান হবার অভিপ্রায় !!!
কিন্তু আমি যে প্রতিষ্ঠানে পড়ি তা আমাকে যা দিয়েছে শুনলে আতকে উঠবেন!!
আমি পড়ি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে!( পড়ুন মিটফোর্ড হাসপাতাল- এ নাম ছাড়া অধিকাংশ মানুষ এই প্রাচীন বিদ্যাপীঠকে চিনবে না)
আপনাদের মত আমার বিদ্যাপীঠও আমাকে সবকিছুই দিয়েছে!!
কিন্তু অতিরিক্ত যে উপহারটি-টি আমি পেয়েছি তার কথা চিন্তা করলে আমি আজও মাঝেমাঝে রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠি!!
কি জানতে চান???
সেই মহামূল্যবান উপহারটি হল ‘লোকেশন’!
এত সুন্দর নীলচে রঙের পানি প্রবাহিত হয় যে নদীতে ( কিচু ফটোগ্রাফারের ছবিতে) সেই বিখ্যাত বুড়িগঙ্গার তীরে আমাদের ক্যাম্পাস অবস্থিত যার চারপাশের পরিবেশ এক মোহনীয় গন্ধে আচ্ছাদিত থাকে সবসময়!!
আশে পাশে রাস্তাঘাট গুলোয় যখন চলবেন আপনার টেম্পল রান খেলার কথা মনে পড়তে পারে!!
কখনো ডানে,কখনো বামে,কখনো হেলে,কখনো লাফিয়ে আপনাকে এগিয়ে জেতে হবে লক্ষ্যের দিকে… একটু অসাবধান হলেই পায়ের উপর দিয়ে চলে জেতে পারে রিক্সা!!
সারাদিনের পড়ার চাপ,টিউশনি,অন্য কাজ কর্ম করে যখন আপনি ঘুমাতে যাবেন ঠিক তখন মিটফোর্ড আপনাকে ঘুমাতে দিবে না!!! সারারাত গাড়ি থেকে মাল ফেলার শব্দে আপনি বারবার জেগে উঠবেন আর অকথ্য ভাষায় নিজের ভাগ্যকে গালি দিবেন!!
চিৎকার চেঁচামেচি, গাড়ির প্যা-পু,রিক্সার টুংটাং,মাল ফেলার শব্দ,বৃষ্টির কাদামাখা রাস্তা,ছোট অলিগলি এসব নিয়েই আমাদের জীবন!!
তবুও আমাদের কোনো অভিযোগ নেই!!
আমি এ কথা হলফ করে বলতে পারি… যে মানুষ এই মিটফোর্ডের মাটিতে এসব বিচিত্র পরিস্থিতি মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারবে সে শুধু বাংলাদেশ না পুরো পৃথিবীর যেকোনো পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে!! ( বেয়ার গ্রিলস হবার প্রয়োজন পড়বে না)
তাই থ্যাং ইউ মিটফোর্ড!!
জয় হোক মিটফোর্ডের!! জয় হোক বাংলার সকল বিদ্যাপীঠের!!
লেখকঃ মোহাম্মদ নাজমুস সাকিব বাপ্পী
স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজ