প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৩ জুলাই ২০২০, শুক্রবার
গত ৩০ জুন (মঙ্গলবার) ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তরে সিনা আতহার নামের একটি হাসপাতালে জোরালো বিস্ফোরণে দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১৯ জন নিহত হন এবং আহত হন ৬ জন।
সরকারি আধিকারিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থা ফার্স ১৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। পরে, বিবিসি সূত্রে ১৯ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা আইআরআইবি সূত্রেও ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
তেহরানের ডেপুটি গভর্নর হামিদ রেজা গৌদারজি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, “তেহরান বিস্ফোরণের সঙ্গে নাশকতার যোগ নেই, এটি একটি দুর্ঘটনা। গ্যাস লিক করেই সিনা আতহার নামের ওই ক্লিনিকে বিস্ফোরণ ঘটেছে”।
উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইরাজ হারিরচি জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে নিহত ১৯ জনের মধ্যে ১০ জনই মহিলা বাকিরা পুরুষ। রাষ্ট্রীয় টিভিতে তেহরানের দমকল বাহিনীর মুখপাত্র জালাল মালেকি জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের জেরে মেডিকেল বিল্ডিংয়ে আগুন লেগে গিয়েছিল। দমকল কর্মীরা তা নিভিয়ে ফেলেছেন। বিস্ফোরণের সময় ওই ভবনের ভিতরে ২৫ কর্মী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ইরানের বার্তা সংস্থা ইসনাকে মালেকি জানান, হতাহতদের মধ্যে অনেকেই ক্লিনিকে উপরের তলায় অপারেশন রুমে ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত তাপ এবং ঘন ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
আরব নিউজ সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরণের কারণে তেহরানের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠেছে, ভেঙেছে জানালার কাচ স্থানীয় বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঘটনাস্থলের খুব বেশি ফুটেজ দেখায় নি। তারা শুধু রাস্তায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরিত সিলিন্ডার দেখিয়েছে। কেন এই বিস্ফোরণ সে বিষয়েও তেমন কিছু উল্লেখ করে নি। এই ঘটনার পর ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র ডেভুড আবদি বলেন, “গ্যাস লিকের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে, তবে বলতে পারছি না ঠিক কী কারণে গ্যাস লিক হয়েছে।” আরব নিউজ বলছে, ডেভুড আবদি ওই এলাকাকে লোকাল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু বিস্ফোরণের পর সেখানে সেনাকর্তাদের আগুন নেভাতে দেখা গিয়েছে। যদি লোকাল এলাকায় এ রকম ঘটনা ঘটে, তা হলে সাধারণত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম ঘটনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাজিজের” এক প্রতিবেদন বলেছে, ইরানের যে এলাকাটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেখানে বেশ কয়েকটি সুরঙ্গ আছে। এই সুরঙ্গগুলো মাটির বেশ গভীরে ধারণা করা হচ্ছে ইরানের সামরিক গবেষণা ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের কাজ হয়ে থাকে সেখানে।