ঈদের সরকারী ছুটি ছিল চার দিন। কিন্তু তাই বলে, দেশের কোথায়ও হাসপাতাল বন্ধ ছিল না। জনবলের সংকট থাকলেও, সেন্ট্রাল রোষ্টারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন দেশের চিকিৎসক গন।
গত ৫’ই সেপ্টেম্বর ২০১৭, তখনও ঈদের রেশ কাটেনি। ডুমুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খুলনায় মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, ডাঃ সবুজ সাহা। আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে ডাঃ সবুজ সাহা মহিলা ওয়ার্ডে রুগী দেখার সময় অন্য একজন ভর্তিকৃত রোগীর লোকজন অতর্কিত ভাবে হামলা করেন।
ওথানা ডুমুরিয়া নিবাসী, উক্ত রুগীর নাম আসমা বেগম, বয়স ৪৫ এবং স্বামী-মহিউদ্দিন আজাদ। চিকিৎসার জন্য মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হন এবং ডাঃ সবুজ সাহা উক্ত রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করেন।
ঠিক তখনই অন্য একজন মুমূর্ষ মৃত প্রায় ১ দিন বয়সের নবজাতক বাচ্চাকে হাসপাতালে আনা হলে, ডাঃ সবুজ সাহা বাচ্চাটিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে থাকেন।
রুগী আসমা বেগমের লোকজন ঐ সময়ে আসমা বেগমকে আবার দেখবার জন্য বলেন। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সবুজ শিশু বাচ্চাটিকে দেখে, পরে আসবেন বলে বলে জানান এবং কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলেন।
এরই মধ্যে আসমার সাথে আসা আরও কিছু লোকজন (প্রায় ৮-১০ জন) এসে অকস্মাৎ চিকিৎসকের উপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। সাথে, উক্ত চিকিতসককে অতর্কিত চড় কিল ঘুষি মারতে শুরু করেন। ঐ সময়ে রোগীর লোকজন চিকিৎসকের নিকট হতে প্রায় তিন হাজার টাকা করেন এবং সরকারী কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। কর্তব্যরত চিকিৎসকের ডাক চিৎকারে সহকারী, ফিরোজা বেগম (৪০), সমাপ্তী রায় এগিয়ে আসলে, চিকিৎসকের সাথে রাউন্ডে থাকা উক্ত সহকারী আহত হন।
তখন চিকিৎসক আত্নরক্ষার জন্য দ্রুত রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করেন। রোগী আসমার সাথে থাকা লোকজন তখনও দমে না গিয়ে দরজায় লাথি মারে, দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। এই বিষয়ে কোথায়ও অভিযোগ করলে, খুন-জখমের হুমকি দেয়।
পরবর্তীতে কাউকে কিছু না বলে, উক্ত রোগী নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।
পরে, খোজ নিয়ে জানা যায়, উক্ত রোগী আসমা বেগম, খুলনায় নার্গিস মেমোরিয়াল ক্লিনিকে ভর্তি আছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ডাঃ সবুজ সাহা, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ এ, এস, এম মারুফ হাসান এর সাথে আলাপ আলোচনা করে উক্ত ঘটনার আসামীদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অফিসার ইনচার্জ বরাবর এজাহার দাখিল করেন।
এজাহারে আসামী হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়েছে, ১-হালিম (৩৩), ২- গফফার শেখ (৩৫), ৩- মফিজ (৩১) ৪- মহিউদ্দিন আজাদ।
বাদীর কম্পিউটার কম্পোজ করা এজাহার কপি ৬/৯/১৭ তারিখের ১২.৩৫ মিনিটে থানার ইনচার্জ প্রাপ্তি স্বীকার করেন এবং ১৪৩/১১৪/৩২৩/৫০৬ ধারায় রুজু করেন।
ডুমুরিয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায়, খুলনা বিএমএ জরুরি মিটিং এ আছেন। বিএমএ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হবে।