রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ডিপার্টমেন্ট, হাইপারটেনশন ও রিসার্চ সেন্টার রংপুরের উদ্যোগে উচ্চরক্তচাপের ব্যবহারিক দিক নিয়ে গত বৃহস্পতিবার এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অডিটরিয়ামে প্রাণবন্ত এ সেমিনারে ফেসিলেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের মেডিসিন জগতের কিংবদন্তীতুল্য চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল চৌধুরী ও হাইপারটেনশন এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. মো. জাকির হোসেন।
প্রায় ২০০ জন চিকিৎসকের সরব উপস্থিতি ও সক্রিয় অংশগ্রহণ পুরো আয়োজনকে এক অন্যমাত্রা এনে দেয়। উচ্চরক্তচাপের আদ্যোপান্ত নিয়ে তৈরি ১২ টি মডিউলের উপর আলোচনা করেন ডা. এ এস এম রাহেনুর মন্ডল আপেল, সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, ডা. প্রবাল সূত্রধর, কনসালটেন্ট, হাইপারটেনশন এন্ড রিসার্চ সেন্টার, রংপুর এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রতীন্দ্রনাথ মন্ডল। ৫-১০ মিনিটের প্রতিটি মডিউলের পরপরই সেই মডিউলের উপর আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর করা হয়।
উপস্থিত চিকিৎসকদের নানাবিধ প্রশ্ন, প্যানেল অফ এক্সপার্ট ও প্রেজেন্টারদের প্রায়োগিক উত্তর পুরো আয়োজনকে সফল করে তোলে। প্রায় ৪.৩০ ঘন্টা চলা এ আয়োজনের শুরুতেই অত্র প্রতিষ্ঠানে কার্যরত ডা. রামিম ইসলাম ইবনে নূর হাইপারটেনশন এন্ড রিসার্চ সেন্টার ও এর কার্যক্রম নিয়ে একটা প্রেজেন্টেশন দেন।
হাইপারটেনশন তথা উচ্চরক্তচাপের সামাজিক গুরুত্বের পাশাপাশি এর জটিলতাসহ ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন মি. রামিম। পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠানের সফলতা, সামাজিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, ফ্রি হেলথ ক্যাম্প, রক্তচাপ পরিমাপ ক্যাম্পসহ নানাবিধ আয়োজনের কথা জানান তিনি। অত্র প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যেই প্রায় ২৪ হাজার উচ্চরক্তচাপ এবং এর জটিলতায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন।
অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল চৌধুরী তার বক্তব্যে উক্ত প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনার পাশাপাশি এমন সফল একটি আয়োজনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান। সমাপনী বক্তব্যে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্টাতা অধ্যাপক ডা. মো. জাকির হোসেন জানান, “উচ্চরক্তচাপ এক নীরব ঘাতক ব্যাধি। শুধুমাত্র অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপই স্ট্রোক, প্যারালাইসিস, কিডনি ফেইল্যূর সহ নানাবিধ রোগের অন্যতম প্রধান কারন। বাংলাদেশের শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত।” তিনি আরো জানান, বেসরকারি পর্যায়ে ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগ যথাযথভাবে গ্রহণ করা হলে একদিকে যেমন উচ্চরক্তচাপজনিত জটিলতা কমবে অপরদিকে তেমনি ব্যক্তি ও পরিবারের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। উক্ত আয়োজনে উপস্থিত সকলের পাশাপাশি তার প্রতিষ্টানের পক্ষ হতে রংপুরের সুধীসমাজ, চিকিৎসক, সহকর্মীসহ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি অত্র অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।