সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
দেশে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে দেওয়ার প্রস্তাব করতে পারে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন। তা বাস্তবায়িত হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে শুরু করে ওষুধ, অস্ত্রোপচার সবই মিলবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়।
জানা গেছে, বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমাতে এমন সুপারিশের চিন্তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকারের বাজেট ও মেডিকেল শিক্ষার মান বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। এ মাসেই প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিবে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন।
কমিশনের একাধিক সদস্যর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যমান কাঠামোর অনেক কিছুই ভেঙে নতুন করে গড়া এবং কিছু ক্ষেত্রে কাঠামো বহাল রেখে সার্বিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার সুপারিশ করা হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ছাড়াও সব হাসপাতালে সক্রিয় রেফারেল পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হবে। ২০ শতাংশ রোগীর জন্য বিনামূল্যে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা দ্বিগুণ করার প্রস্তাব থাকবে। জুডিশিয়াল সার্ভিসের মতো চিকিৎসকদের জন্য বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস কমিশন গঠন, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র নিরীক্ষা করা, প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠনসহ বেশ কিছু সুপারিশ করতে যাচ্ছে কমিশন।
গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশনের প্রতিবেদন ৯০ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ করতে না পারায় দুই দফায় সময় বাড়িয়ে সরকার ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।
এই কমিশনের অনুরোধে গত ফেব্রুয়ারিতে এক জরিপ পরিচালনা করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এই জরিপে জানা গেছে, ৯১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ চায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া বাধ্যতামূলক সাংবিধানিক অধিকার হোক। দেশের সব মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকার যেন আইনগতভাবে বাধ্য থাকে। এসব বিবেচনায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দিচ্ছে কমিশন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে সংস্কার কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে দেওয়ার সুপারিশ করার চিন্তা করছে কমিশন। ওষুধ এবং অস্ত্রোপচার সুবিধাও মিলবে এসব হাসপাতালে। এ জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে পাঠাতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। চিকিৎসকদের উপজেলা পর্যায়ে রাখতে বিশেষ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন হবে। সেই সঙ্গে তদারকি জোরদার করতে হবে। এসব হাসপাতালে দুই ধরনের ব্যবস্থাপনা থাকবে। কেউ চাইলে টাকা দিয়ে সেবা নিতে পারবে। চিকিৎসাসেবা সহজীকরণে রোগীদের হেলথ কার্ডের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। হেলথ কার্ড দেখালে সেবা মিলবে।
প্ল্যাটফর্ম/