প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা (Primary Healthcare) স্থানীয় পর্যায়ে গণমানুষের জন্য সহজলভ্য ও মৌলিক চিকিৎসাসেবাই সাধারণভাবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বলে পরিচিত। সহজ কথায়, মানুষ যেসকল উপকরণ ও কৌশল অবলম্বন করে দৈনন্দিন স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যবস্থা করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বলা যায়।
বাংলাদেশে সরকারী পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। সরকারী চাকুরির প্রথম পোস্টিং এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হয় চিকিৎসকদের। চিকিৎসকরা পরিবার পরিজন ফেলে গ্রামে পড়ে আছে, শুধুমাত্র ক্ষমতার দাপট দেখানোর জন্য স্থানীয় লোকেরা এদের গায়ে হাত দেয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হল স্থানীয় মাস্তানদের শিক্ষানবিশ কেন্দ্র। এর ভিতর কিছু মিডিয়ায় আসে বেশির ভাগই মিডিয়ার আড়ালের বাইরে থাকে।
আমি ইন্টারনেট আর খবরের কাগজ ঘেঁটে গত দুই তিন বছরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ হামলার খবর সংগ্রহ করেছি। এখানে চিকিৎসক আক্রান্ত হবেন এমন কোন কথা নেই। এখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যেকোনো একটি অঙ্গের উপর আঘাত পুরো প্রতিষ্ঠানের উপর আঘাত বলে বিবেচিত হবে। আজ তা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। নিউজের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। সিম্পল গুগল সার্চ করেই সত্যতা নিশ্চিত হতে পারেন। তাহলে শুরু করা যাক, সাম্প্রতিক ঘতনা থেকে।
তারিখঃ ২৪ মে ২০১৫
স্থানঃ ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চাঁদপুর
রোববার দুপুরে চরমান্দারী গ্রামের প্রবাসী লিটন মিয়ার একমাত্র পুত্র সাবি্বর গৃদকালিন্দিয়া কলেজ থেকে ক্লাস শেষ করে সাইকেলযোগে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গৃদকালিন্দিয়া বাজারের উপর চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কের উপর দিয়ে দ্রুতগামী একটি মাইক্রোবাস তাকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার দুই ঘন্টা পর তাকে চাঁদপুর নেয়ার পথে সে মারা যায়। গতকাল সোমবার সকালে গৃদকালিন্দিয়া কলেজের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা সাবি্বর হত্যার প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ করে। বেলা ১১টার দিকে সাবি্বরের গায়েবানা জানাজা ও ১২টায় তার স্মরণে শোকসভা হওয়ার কথা থাকলেও হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাবি্বরকে কোনরূপ চিকিৎসা ছাড়া ২ ঘন্টা হাসাপাতালে ফেলে রাখে এ ধরনের কথা উঠে আসার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শত শত শিক্ষার্থী। এ সময় শিক্ষকমণ্ডলী তাদেরকে ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা গৃদকালিন্দিয়া থেকে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে । উত্তেজিত ছাত্ররা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে তারা হাসপাতাল এসে চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করে ঘেরাও করার একপর্যায়ে ছাত্ররা হাসপাতালে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় হাসপাতালের ভেতরে থাকা চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রোগীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে থানার এসআই নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া ও কলেজ শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ব্যাপারে রোববার জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডাঃ মেহেদী আলম জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সাবি্বরকে দুপুর সোয়া ১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাৎক্ষণিক যতটুকু চিকিৎসা প্রয়োজন তা দিয়ে সাথে সাথে তাকে চাঁদপুরে রেফার করি। কিন্তু সাবি্বরকে সাড়ে তিনটার দিকে তার লোকজন চাঁদপুর নিয়ে যায়। এই দেরীটুকু শুধুমাত্র তাদের। এদিকে একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের চালক দেলোয়ার বদলি ড্রাইভার না দিয়ে ছুটি নেয়ায় দুর্ঘটনার পরপরই আহত ব্যক্তিকে চাঁদপুর নেয়া সম্ভব হয়নি।
হাসাপাতালের ইউএইচও ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম শিপন ভাংচুরের কথা স্বীকার করে বলেন, ছাত্ররা যে কারণে বিক্ষুব্ধ আচরণ করেছে, তা ঠিক নয়। চিকিৎসকরা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছে।
সড়ক দুর্ঘটনা আর হেড ইনজুরির পেসেন্ট সব জায়গায় চিকিৎসা করা যায় না। উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফারেল সিস্টেম চিকিৎসা পদ্ধতিরই অংশ। কেউ দেরি করে উন্নত সেন্টারে রোগী নিলে আর রোগী মারা গেলে দোষ কি চিকিৎসকের?
তারিখঃ ২২ মে, ২০১৫
স্থানঃ টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জ
উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মিত্রেরডাঙ্গা গ্রামের মৃত ননী গোপাল বালার মেয়ে মনা ভারতীর (২২) বিয়ে হয় বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার উমাজুরি গ্রামের সদানন্দ ঘরামীর সাথে। কিন্তু স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় মনা ভারতী গহরডাঙ্গা চলে এসে স্থানীয় আকবল হোসেনের আশ্রয় লাভ করে। কিছুদিন আগে তরুণী মনা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে খাদিজাতুল কোবরা নাম ধারণ করে। খাদিজাতুল কোবরা মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত ১৯ মে গ্যাস্টিকসহ বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন খাদিজাতুল। গতকাল বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখে কর্তব্যরত সেবিকা কাকতি বল (৫০) তাকে হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত প্যারাসন ও অমিপ্রাাজল নামের দুটি ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ওই রোগী মারা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ‘হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়ায় এক হিন্দু সেবিকা খাদিজাতুলকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলেছে’ এ গুজব ছড়িয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়। পরে দুপুরে পাশের গহরডাঙ্গা মাদ্রাসা হতে শত শত বিক্ষোভকারী মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সংঘবদ্ধ করে। সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী লাঠি ও ধারল অস্ত্র নিয়ে দুপুর সোয়া দুইটার দিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে হামলা চালায়। হামলাকারীরা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ব্যাপক ভাংচুর করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পবিত্র কুন্ডুর মাথায় ধারাল অস্ত্রের কোপসহ তার দুই হাত ও দুই পা ভেঙ্গে গেছে। সেবিকা কাকতির মাথা ও পায়ে কোপ রয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল শেখরের মাথা ও শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবার উপর হামলার সব থেকে ভয়ংকর হামলা এটি। এর আগে দেখেছি আমরা কিভাবে মাইক থেকে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব হয়েছে রামু, হাটহাজারি, ফটিকছড়ি, ফতেহপুর, সাথিয়া আর হোমনায়। আজ একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মিত্থা সাম্প্রদায়িক অভিযোগ এনে হামলা হল। দুঃখ লাগে যে স্থানে হামলা হল সেই উপজেলায় চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন জাতির পিতা।
তারিখঃ ২৮ মার্চ, ২০১৫
স্থানঃ টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের উপর হামলা চালিয়েছে একদল উশৃংখল রোগীর আত্মীয়-স্বজন। এতে মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ নুরুল আলম দীনসহ ৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ৩ জন জ্ঞাত ও ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে টেকনাফ থানায় মামলা(নং-৭৩)দায়ের করা হয়েছে। ২৮ মার্চ শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে এ হামলার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, মোঃ নুর নামে হ্নীলা জাদিমুড়া এলাকার মারপিঠে আহত এক রুগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার আত্মীয় স্বজনরা। কর্তব্যরত চিকিৎসক উক্ত রুগীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন। এসময় রুগীর সাথে আসা আত্মীয় স্বজনরা কক্সবাজার প্রেরন না করে উক্ত রুগীকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তীর জন্য চাপাচাপি করে। এতে অপারগতা জানালে তারা চিকিৎসকের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় একপর্যায়ে তারা চিকিৎসকের হামলা চালায়। হাসপাতালের উপস্থিত কর্মচারীরা হামলায় বাঁধা দিলে তাদেরকেও মারধর করে আহত করে। হামলায় হাসপাতালের নিরাপত্তা প্রহরী নুরুল আলম, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার দেলোয়ার হোসেন, ওয়ার্ড বয় বদিউর রহমান ও চালক স্বপন কুমার দাশ আহত হয়। তারা সরকারী জরুরী বিভাগের মুঠোফোনটিও নিয়ে যায়।
স্বাস্থ্য সেবার এক বিশেষ উপাদান রেফারেল সিস্টেম। প্রাথমিক সেন্টারে প্রাথমিক ম্যানাজমেন্ট দিয়ে উচ্চতর সেন্টারে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগী পাঠানোই হল চিকিৎসাপদ্ধতির অংশ। এর জন্য কেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের হামলার শিকার হতে হবে?
তারিখঃ ২১ মার্চ, ২০১৫
স্থানঃ ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন রোগীর অভিভাবকের হামলায় দুই চিকিৎসক আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, সকাল ১০ টার দিকে রোগীদের ওয়ার্ড পরিশর্দনের সময় চিকিৎসকরা বহিরাগতদের ওয়ার্ড থেকে বাহির হতে অনুরোধ জানান। এ কথা শুনে মহিলা ওয়ার্ডের ৪ নং বিছানায় ভর্তিকৃত রোগী সুমির শ্বশুর দিউ গ্রামের রুস্তম আলী উত্তেজিত চিকিৎসকদের গালাগাল শুরু করেন । এক পর্যায়ে ডা. সজিব রিয়াজুর রহমানের ওপর হালমা চালায় রুস্তম আলী। তাকে বাঁচাতে ডা. জাকির হোসাইন এগিয়ে আসলে তার ওপরও হামলা চালানো হয়। এতে দুইজন চিকিৎসকই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও আহত হয়েছেন। ডা. জাকিরের ঠোঁটের নিচ অংশ আঘাতে থেঁতলে গেছে।
থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে রুস্তম আলীকে আটক করে।
ওয়ার্ডের নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়ে হামলার শিকার হতে হল চিকিৎসককে।
তারিখঃ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
স্থানঃ বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দিনাজপুর
দুপুর ১২টার দিকে বীরগঞ্জের সুজালপুর ইউপির চাকাই গ্রামের মো. ইমান আলীর ছেলে মো. সাকিব (১৮) বিষ পান করেন। পরিবারের লোকজন সাকিবকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওয়ার্ড বয় নন্দ লাল জরুরী বিভাগে নিয়ে যান এবং রোগীর পাকস্থলী থেকে বিষ বের করা জন্য পেটে পানি প্রবেশ করান। এ সময় হঠাৎ ট্যাপের পানি প্রবাহ কমে গেলে রোগীর চিকিৎসা ব্যাহত হয়। এতে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালে হামলা চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
আহত ওয়ার্ড বয় নন্দ লাল রায় জানান, রোগীর চিকিৎসা চলাকালে হঠাৎ ট্যাপের পানি প্রবাহ কমে গেলে রোগীর বড় ভাই মো. শাহিন ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক তার ওপর হামলা চালায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক লিপিকা রাণী জানান, হঠাৎ বেশকিছু যুবকের হামলায় তারা আত্মরক্ষার্থে দ্বিতীয় তলায় আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা ইটপাটকেল ছুঁড়ে কক্ষের কাঁচ ভেঙে ফেলে। পরে পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়।
ট্যাপের পানির প্রবাহ কমে যাওয়া তো হাসপাতাল অথোরিটির দোষ নয়।
তারিখঃ ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
স্থানঃ শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চাপাইনবয়াবগঞ্জ
রোগী মৃত্যুর অভিযোগে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে মারধর করে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে। আগের দিন রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান জায়গীর মহল্লার সাহেব খলিফার স্ত্রী মজিনা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ১১টার দিকে মর্জিনা বেগম মারা গেলে তার আÍীয়স্বজন চিকিৎসার গাফেলতির কারণে মর্জিনার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে। একপর্যায়ে আজ (রোববার) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ১৫/২০ জন দুর্বৃত্ত শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
এখানে প্রশ্ন জাগে, অর্থ লুট করাই কি ছিল হামলার প্রধান কারণ?
তারিখঃ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
স্থানঃ কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নোয়াখালী
সোমবার দুপুরে বসুরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বেলাল হোসেনের ছেলে মিনহাজ (৩) পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। পরে বাড়ির লোকজন ও আত্মীয়স্বজনরা পানি থেকে উঠিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু নাছের শিশু মিনহাজকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরপরই শিশু মিনহাজের স্বজনরা চিকিৎসকের ওপর হামলা করে। এ সময় তার পাশে থাকা ওটিবয় ইমাম উদ্দিনকেও আহত করে।
রোগীকে মৃত ঘোষণা করাটাও কি অপরাধ?
তারিখঃ ১৭ নভেম্বর, ২০১৪
স্থানঃ সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলাকাবাসীর হামলায় চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, উচালিয়াপাড়া গ্রামের আল-আমীন, সজল মিয়া ও মাসুম মিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত কর্মচারী মুসলিম লস্করের (২৭) কাছে টিকিটের জন্য নির্ধারিত তিন টাকা বাবদ ছয় টাকা দেন। বাকি তিন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বললে তখন তাঁরা তাঁকে ১০০ টাকা ভাঙতি করে দিতে বলেন। কিন্তু মুসলিমের সহকারী ওই টাকা নিয়ে ফিরে এলে তাঁরা বিনা টিকিটে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য দাবি করেন। মুসলিম এতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ওই তিনজনের সঙ্গে মুসলিম লস্করের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে আল-আমীনের নেতৃত্বে উচালিয়াপাড়া গ্রামের ৩০ থেকে ৪০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢোকেন। তাঁরা মুসলিমের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর ও আসবাব ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁকে রক্ষা করতে অফিস সহকারী তারিকুল ইসলাম (৩০), হিসাবরক্ষক মোতাহার আলী (৪৫) ও ল্যাব টেকনিশিয়ান ফরিদ মিয়া (৪৫) এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাঁরা আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নোমান মিয়া, উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানকেও মারধর করে । পরে পুলিশ এলে তাঁরা পালিয়ে যান। মুসলিম লস্কর বলেন, ওই তিনজন তাঁর কাউন্টার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা নিয়ে গেছেন।
কি চমৎকার!! সরকারী হাসপাতালে এলেই এদের দাপট বেড়ে যায়। ৫০০ টাকা দিয়ে চেম্বারে চিকিৎসক দেখাতে পারে, কিন্তু ৩ টাকা দিয়ে সরকারী টিকেট কাটতে পারবে না। এইসব অসভ্য বর্বর অনচলে বন্ধ করে দেওয়া হোক হাসপাতাল।
তারিখঃ ২৩ অক্টোবর , ২০১৪
স্থানঃ মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, যশোর
রাতে মনিরামপুর হাসপাতালে পৌর এলাকার কামালপুর গ্রামের তোয়াক্কেল হোসেন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এতে চিকিৎসকদের দাবী ছিল রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু তার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে যশোরে নেয়া হয়নি। এদিন তার মৃত্যু ঘটলে অভিযোগ তোলা হয় ডাক্তারদের অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ফলে এ ঘটনার জের ধরে মৃতের পরিবারসহ একদল সন্ত্রাসী রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এ সময় তারা চিকিৎসক রেহনেওয়াজ, নাজিম উদ্দীন ও জরুরী বিভাগের খলিলুর রহমানকে মারপিটে জখম করে।
চিকিৎসক উন্নত সেন্টারে রেফার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা নেন নাই। অথচ রোগী মারা গেলে মার খেতে হল চিকিৎসককে। তাহলে অবহেলা কার? চিকিৎসক না রোগীর সন্ত্রাসী স্বজনদের?
তারিখঃ ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
স্থানঃ চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স না থাকার চরম মূল্য দিতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। আহত এক রোগীকে দ্রুত অন্য হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন স্বজনেরা। কিন্তু তা দিতে না পারায় তাঁরা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। এতে দুই চিকিৎসকসহ চারজন আহত হন।
রাত সাড়ে ১০টায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গোমারবাড়ি এলাকার ২০-২৫ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শামীম হোসেনকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। ওই সময় সেখানে কর্মরত চিকিৎসকেরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসকদের কাছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স দাবি করেন। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্সই তিন মাস ধরে বিকল থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে আনার পরামর্শ দেন।
এ নিয়ে চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আসবাব ও চিকিৎসার সরঞ্জাম ভাঙচুর করেন। তাঁদের হামলায় চিকিৎসা কর্মকর্তা শওকত মাহমুদ ও মেজবাহ উদ্দিন এবং স্বাস্থ্য সহকারী শ্রীবাস চন্দ্র সরকার ও প্রহরী মাসুদ উদ্দিন আহত হন।
হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকাটাও কি চিকিৎসকের দোষ?
তারিখঃ ১৭ জুন, ২০১৪
স্থানঃ পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহ
চাঁদা না দেওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাংচুর চালিয়েছে স্থানীয় একদল চাঁদাবাজ।
এলাকাবাসী জানান, রোগীদের হয়রানি, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ না করা ও সিলিং ফ্যান বিকলসহ নানা অনিয়মের কারণে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ একদল যুবক হাসপাতালে ভাংচুর চালায়। অপরদিকে পলাশবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. নুরুজ্জামান আহম্মেদ জানান, গত ১৫ জুন ওই যুবকরা কমপ্লেক্সে এসে চাঁদা দাবি করে।
পরবর্তীতে ১৭ জুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে নানা অনিয়মের অভিযোগে তুলে তা সমাধানে ৩ দিনের সময় দিয়ে যায়। দুপুরে সশস্ত্র ওই যুবকরা হাসপাতালের জানালার গ্লাস ও গ্রিল ভাঙচুর করে। পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। সময় উত্তেজিত যুবকরা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্টাফদের লাঞ্চিতসহ জরুরী চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ করে দেয়।
সময় দিয়ে যেয়ে দুপুরবেলা এসে হামলার মানে কি?
তারিখঃ ১ মার্চ, ২০১৪
স্থানঃ সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নোয়াখালী
সোনাইমুড়ীতে যুবলীগ নেতাকর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় তারা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইকবাল ও ডা. শামিম লাঞ্ছিত হন। হাসপাতাল সূত্র জানাযায়, গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচনে বজরা বোর্ড কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করলে দখলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় ছর্রা গুলির কয়েকটি স্প্লিন্টার যুবলীগ নেতা আকরামের শরীরে বিদ্ধ হয়। দু’দিন বাইরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. ইকবালের নিকট চিকিৎসার জন্য আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডা. ব্যবস্থাপত্র দিয়ে এক সপ্তাহ ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ না মেনে এখনি অপারেশনের মাধ্যমে গুলির স্প্লিন্টার খোলার জন্য ডাক্তারকে চাপ দেয়। ডাক্তার অপারগতা প্রকাশ করলে আকরাম ডাক্তার ইকবালকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় ডাক্তার শামিম ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, সর্বশেষ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কয়েকটি দরজা, জানালা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আকরাম ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। পুলিশ ফিরে আসার পর হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় ডাক্তার ইকবালসহ কর্তব্যরত অন্য ডাক্তারদের মামলা না করার জন্য শাসিয়ে যায়।
মূলত এইসব কারণেই চিকিৎসকরা গ্রামে থাকতে চান না। সারাজীবন কষ্ট করে লেখাপড়া করার পর চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞানহীন একজনের কাছে লাঞ্ছিত হতে কেমন লাগে? আচ্ছা এখন কি চিকিৎসাপদ্ধতিও এলাকার মাস্তানের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে?
তারিখঃ ২৭ নভেম্বর, ২০১৩
স্থানঃ হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চাঁদপুর
বুধবার সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার টোরাগড় গ্রামের আব্দুর রব তালুকদারের ছেলে শাহাদাত হোসেন ২ চোখে চুনের ৰত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার চোখে চুনের কারণে বড় ধরনের ৰত সৃষ্টি হয়। চোখ রৰার্থে আমরা তাকে কুমিলস্না রেফার করি। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক আসতে দেরি হয়েছে এমন অজুহাতে রোগীর সাথে থাকা ও পরে আসা আনুমানিক এক থেকে দেড়শ’ যুবক হঠাৎ করে হাসপাতালে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এরপরই ঐ ব্যক্তিরা সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটিতে ভাংচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়ে অবরোধের সমর্থনে মিছিল করতে করতে চলে যায়। এ ঘটনায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সকল মালামাল, ডিউটি ডাক্তারের কক্ষ ও অ্যাম্বুলেন্স ভাংচুর করে তাতে আগুন লাগানোর ঘটনায় হাসপাতালের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের আগুন নেভায়।
তারিখঃ ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩
স্থানঃ রায়পুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে টিএস ও ডেন্টাল ডাক্তারের কক্ষ ব্যাপক ভাংচুরসহ তিন ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। বুধবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় শিবির কর্মীরা হাসপাতালের ২টি এ্যাম্বুল্যান্স ভাংচুরসহ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মারুফ বিন-জাকারিয়ার মোটর সাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকা সহ পুরো শহর জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আহতদের অবস্থা আশংকাজনক হলেও অবরোধের কারণে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত ডাক্তারা।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর উপর হামলা, সাথে চিকিৎসকের রুম ভাঙচুর এটা কি কোন সভ্য দেশ?
তারিখঃ ৯ ডিসেম্বর, ২০১৩
স্থানঃ টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মানিকগঞ্জ
উপজেলার হাসাইল বানাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের অফিসে হামলা চালিয়ে আসবাপত্র ভাংচুর ও ওই কর্মকর্তাকে মারধর করে।
তারিখঃ ১৬ অক্টোবর, ২০১৩
স্থানঃ পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরগুনা
পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ শনিবার বিকেলে স্ট্রোক করলে সন্ধ্যায় তাকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো চিকিৎসক ছিল না। তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল আহসানকে ডেকে নেয় রোগীর আত্মীয়রা। তিনি একটি ইনজেকশন দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই রোগী মারা গেলে বিক্ষুব্ধ আত্মীয়রা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় গোটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনে।
তারিখঃ ২৭ মে , ২০১৩
স্থানঃ মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নওগাঁ
নওগাঁর মহাদেবপুরে মেডিকেল সার্টিফিকেট না পাওয়ায় একদল সন্ত্রাসী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছে। এতে কর্তব্যরত ৩ মেডিকেল অফিসার, নার্স, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আবদুল লতিফ নামে এলাকার এক ব্যক্তি গত কয়েকদিন ধরে তার এক রোগীর জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট দাবি করে আসছিলেন। তা না পেয়ে সোমবার সকাল ১০টার দিকে লতিফের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী হাসপাতালে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় হাসপাতালের বের হওয়ার সব দরজা বন্ধ করে দিয়ে তারা বেধড়ক মারধর শুরু করে। বাধা দিতে এলে রোগীর স্বজনদেরও মারধর করা হয়। এতে করে হাসপাতালের আরএমও ডা. আখতারুজ্জামান আলাল, মেডিকেল অফিসার দেবাশীষ দাস, ডেন্টাল বিভাগের মেডিকেল অফিসার মীর মোফাজ্জল হোসেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স শিল্পী খানম ও ল্যাব সহকারী মিঠুন কুমার দেবনাথ এবং ভর্তি রোগীদের স্বজনসহ কমপক্ষে ১০ আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
উপজেলায় কি কি ঝামেলায় পড়েন সরকারী চিকিৎসকরা মেডিকেল সার্টিফিকেট, ইনজুরি সার্টিফিকেট তার ভিতর একটি। ভুয়া সার্টিফিকেট না দিলে চিকিৎসকরা মার খান।
তারিখঃ ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
স্থানঃ রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার
২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের সময় এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের ছৈয়দ নুরের পুত্র রুমেল ও অফিসেরচর এলাকার ছৈয়দ আলম সওদাগরের পুত্র সরওয়ার আলম মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। এসময় জরুরী বিভাগে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সজীব চৌধুরীর নেতৃত্বে ডাক্তাররা তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়। আহতদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিজেও দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এসময় নুরুল কবির হেলাল নামের এক সন্ত্রাসী চিকিৎসকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই সন্ত্রাসী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাক্তার আক্তারুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। হামলায় হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সজীব চৌধুরী, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ সেলিম,ওয়ার্ডবয় দুলাল বড়ুয়াসহ চারজন আহত হয়। সন্ত্রাসী হামলার পর আহতদের হাসপাতালের এম্বুলেন্স যোগে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। এসময় সন্ত্রাসী নুরুল কবির হেলাল পালিয়ে যায়।
-ডাঃ রজত দাশগুপ্ত