প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৮ জুলাই ২০২১, রোজ রবিবার
বাঙ্গালীর গর্ব মহীয়সী নারী উপমহাদেশের প্রথম নারী চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর ১৬০ তম জন্মদিন আজ। তাঁর এই বিশেষ দিনে বিশ্ব টেক জায়ান্ট গুগল বিশেষ ডুডল তৈরির মাধ্যমে সম্মাননা জানিয়েছে তাঁকে।
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে- প্রবাদটি প্রায় প্রতিটি বাঙ্গালীরই জানা। কিন্তু শুধু সংসার নয়, নারী চাইলে নিজের মেধা ও ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে একটি অগোছালো সমাজকেও সুন্দর করে তুলতে পারেন সেই দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নারী চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী।
বিহারের ভাগলপুরে ১৮৬১ সালের ১৮ই জুলাই ব্রাহ্ম সংস্কারক ব্রজকিশোর বসুর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। তাঁর মূল বাড়ি ছিলো বর্তমান বরিশালের চাঁদশীতে।
তখনকার বাঙালি গোঁড়া সমাজ কাদম্বিনীর পড়াশোনা করা মেনে নিতে পারেননি। তিনি সবকিছু ছাপিয়ে পিসতুতো দাদা মদনমোহনের হাত ধরে পড়াশোনা বেথুন কলেজ থেকে প্রথম মহিলা হিসেবে স্নাতক পাশ করেন এবং কাদম্বিনী গাঙ্গুলী বেথুন কলেজের প্রথম গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে। অতঃপর তিনি ডাক্তারি পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৮৮৬ সালে তিনি ইউরোপিয়ান মেডিসিন প্রয়োগে অনুশীলন শুরু করেন। কাদম্বিনী চূড়ান্ত পরীক্ষায় সমস্ত লিখিত বিষয়ে পাস করলেও প্র্যাকটিক্যালে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অকৃতকার্য হন। পরবর্তীতে ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তাকে জিবিএমসি (গ্র্যাজুয়েট অফ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ) ডিগ্রি দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি পাশ্চাত্য চিকিৎসারীতিতে চিকিৎসা করবার অনুমতি পান। মেডিক্যাল কলেজে পড়াকালীন তিনি সরকারের স্কলারশিপ পান যা ছিল মাসে ২০ টাকা। পাঁচ বছর মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করার পর ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কিছুদিন লেডি ডাফরিন মহিলা হাসপাতালে মাসিক ৩০০ টাকা বেতনে কাজ করেছিলেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে রাজমাতার চিকিৎসার্থে নেপাল যান কাদম্বিনী। ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে মুম্বাই ( তৎকালীন বোম্বে) শহরে কংগ্রেসের পঞ্চম অধিবেশনে প্রথম যে ছয় জন নারী প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন কাদম্বিনী ছিলেন তাদের অন্যতম। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে উপমহাদেশের এই বিখ্যাত নারী পরলোক গমন করেন।