শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা সদরে অবস্থিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে ১৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা। জানা যায়, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ না দিয়েই তড়িঘড়ি করে উদ্বোধন করা হয় হাসপাতালটি। প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে হচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। হাসপাতালে আধুনিক অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি থাকলেও নেই কোনো কার্যক্রম।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পাকেরহাটে অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে পাকেরহাটের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। আর জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। তাই উপজেলা সদরে ২০২১ সালে নির্মাণ করা হয় এ হাসপাতাল।
নিয়মানুযায়ী হাসপাতালটিতে একজন আবাসিক চিকিৎসক, কনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ পদে চারজন, সহকারী সার্জন পদে একজন, জ্যৈষ্ঠ সেবিকা পদে ছয়জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদে একজন ও ফার্মাসিস্ট পদে একজন, অফিস সহকারী, ল্যাব অ্যাটেনডেন্টসহ অনিয়মিত পদে ওয়ার্ড বয়, আয়া, এমএলএসএস, নিরাপত্তাকর্মী ও সুইপারপদ বিভিন্ন পদে আরো ১১ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও একজন মেডিকেল অফিসার, দুইজন সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং একজন আয়া দিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা যায়, জনবল সংকট থাকা এই হাসপাতালের ভেতরে তালাবদ্ধ অধিকাংশ দরজা। মাঝে মাঝে বদ্ধ রুমগুলো খোলা হলেও হাসপাতালে নেই তেমন কোনো কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহে ৬দিন একজন মেডিকেল অফিসার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। বেলা ২ টার পর বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালটি। এ হাসপাতালটিতে দুই তলা বিশিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্র। এছাড়াও রয়েছে তিনটি দুই তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন, রান্না ঘর, গ্যারেজসহ অন্যান্য অবকাঠামো। পানি সরবরাহ লাইন নষ্টের কারনে কর্মচারীদের আবাসিক ভবনটিও বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুধুমাত্র জনবলের অভাবে হাসপাতালটিতে সেবা নিতে এসে তারা কোনো পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না। প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হলে মানসম্মত সেবা পাবেন বলে আশাবাদী এই এলাকার মানুষ। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা মাঈদুল নামের একজন জানান, ১৫০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে তাঁর কন্যা সন্তানকে চিকিৎসা দিতে এনেছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে।
দিনাজপুর জেলার সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় জনবলের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে চারবার চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আপাতত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একজন ডাক্তার দিয়ে চালানো হচ্ছে।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী