শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
- প্রতিদিন সেবা দেন একমাত্র মেডিকেল অফিসার। বহির্বিভাগে তিনি গড়ে প্রতিদিন ২৫০ জন রোগী দেখেন
- সপ্তাহে তিনদিন একজন কনসালটেন্ট চিকিৎসা দেন।
- উদ্বোধনের ১৬ বছরেও চালু হয়নি অস্ত্রোপচার কক্ষ।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন চিকিৎসক। এ সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার কক্ষ উদ্বোধনের ১৬ বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলশ্রুতিতে রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
২০১৮ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ায় এখানে ৩৬ জন চিকিৎসক পদায়িত থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে এখানে পদায়িত রয়েছেন ৬ জন চিকিৎসক। এদের মধ্যে ০২ জন মেহেরপুর সদর হাসপাতালে ও ০১জন যশোরেসহ ০৩জন সংযুক্তিতে থাকায় কমপ্লেক্সে সেবা প্রদান করতে পারছেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকায় চিকিৎসা প্রদান করেন একমাত্র মেডিকেল অফিসার ও একমাত্র কনসালটেন্ট। কিন্তু সপ্তাহে মাত্র তিন কর্মদিবসে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা দিয়ে অন্য তিন কর্মদিবসে আশেপাশের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও সেবা দিতে হয় কর্মরত কনসালটেন্টের। এর বাইরে একজন আয়ুর্বেদিক মেডিকেল অফিসার কর্মরত আছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাসিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালটিতে অন্তর্বিভাগে ৯২৩১ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৩ হাজার ৩৩০ জন। গতকাল (২০ ডিসেম্বর) হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৫জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামানকে চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে জিগ্যেস করা হলে তিনি প্ল্যাটফর্মকে বলেন, “আমাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার আছে। একজন কনসালটেন্ট আর একজন আয়ুর্বেদিক মেডিকেল অফিসার আছে। কনসালটেন্ট তিনদিন আমাদের এখানে আর তিনদিন অন্য উপজেলায় সেবা দেন।”
অন্যদিকে ২০০৮ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে পর ১৬ বছর কেটে গেলেও চিকিৎসকের অভাবে অস্ত্রোপচার কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। অস্ত্রোপচার রুম চালুর বিষয়ে তিনি প্ল্যাটফর্মকে বলেন, “অস্ত্রোপচার রুম আমাদের এখনো চালু হয়নি। মেশিন আর ওটি লাইট পেয়েছি একমাস আগে। এ সপ্তাহের মধ্যে ইনস্টলেশন হবে। ইনস্টলেশন হলে চিকিৎসক প্রাপ্যতা সাপেক্ষে আমরা ওটা চালু করব।”
সংযুক্তিতে থাকা চিকিৎসকদের বিষয়ে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্ল্যাটফর্মকে বলেন, “এখানে পোস্টিং হওয়া স্বত্বেও মেহেরপুর জেলায় ২জন, যশোর সদর হাসপাতালে একজন এটাচমেন্টে আছেন। আমাদর তিনজন চিকিৎসকের সার্ভিস আমরা পাচ্ছি না। তাদেরকে মূল কর্মস্থলে ফেরত দেয়া হলে সংকট অনেকটা কাটাতে সক্ষম হব।”
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী।