সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০২০
এইমাত্র আমার একজন ফেসবুক বন্ধু/ভক্ত যাই বলি না কেন প্যারিস থেকে ফোন করে খোঁজ নিলেন, নিজের খুশির খবর দিলেন। আরো জানালেন, প্যারিসে প্রতিদিন রাত আটটায় বাসিন্দারা সবাই একযোগে ঘরের বারান্দায় আসে এবং একসঙ্গে হাততালি দিয়ে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানান তাঁদের সেইদিনের কঠোর কাজ ও ঝুঁকিপূর্ণ সেবার জন্যে। ভাবুন, পুরো প্যারিস শহর একসঙ্গে।
আর আমার মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ডে ২৫ জন ডাক্তার, নার্স কোভিড ১৯ পজিটিভ। যার মধ্যে ১০ জনই ইন্টার্ন। অন্য একটি সূত্রমতে মোট ৫১ জন পজিটিভ। ইন্টার্নদের ঘরে কোয়ারেন্টাইনের অবস্থা নেই, রুম নেই। কোন কোন সিনিয়র ডাক্তার ইন্টার্ন এবং নার্সদের পর্যন্ত ভর্তি করাতে চাচ্ছে না নিজের ইউনিটে। জনগণ ডাক্তারদের যা খুশি গালি দেন, দিচ্ছেন, তেমনি ডাক্তারও রোগী নিতে অস্বীকৃতি জানান। একেই বলে ‘রেসিপ্রোসিটি’ বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া!
এইমাত্র দেখলাম বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ১৭ সদস্যের একটি কোভিড ১৯ পরামর্শক কমিটি বানিয়েছেন। এতোক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে! যা করতে বলে আসছি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। তবু মন্দের ভাল। এই কমিটিতে সব আছে কিন্তু জনস্বাস্থ্যের প্রতিনিধি শুধু ভাইরোলজিস্ট (?) আর একজন সবে ধন নীলমনি ফ্লোরা আপা। থাকা উচিত ছিল অন্ততপক্ষে দশজন জনস্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞ- এপিডেমিওলজিস্ট, বিহেভিওরাল সায়েন্টিস্ট, কমিউনিটি হেলথ স্পেশালিস্ট, সোশ্যাল মার্কেটিং স্পেশালিস্ট, হেলথ পলিসি এনালিস্ট, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ডেটা সায়েন্স এবং ইনফরমেশন টেকনোলজিস্ট, ভাইরোলজিস্ট, প্রোগ্রাম প্ল্যানিং এবং এভালুয়েশন স্পেশালিস্ট।
সবকিছুর মূলে কিন্তু মানবিক এবং প্রফেশনাল শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষার অভাব! অথচ সবকিছু অন্যরকম হতে পারতো!
লেখাঃ ডা. সেজান মাহমুদ
অধ্যাপক, ইউসিএফ কলেজ অফ মেডিসিন, যুক্তরাষ্ট্র