প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৪ শে এপ্রিল, শনিবার, ২০২১
লেখাঃ ডা. মো.মারুফুর রহমান
ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার(মেডিকেল বায়োটেকনোলজি),
এমআইএস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
স্যার আমাকে বলেছিলেন যাবার আগে তোমাদের সব ব্যবস্থা করে দিয়ে যাব। স্যারের স্বপ্নপুরীতে শুধুমাত্র স্যারের মুখের কথাতেই স্বেচ্ছাসেবায় কাজ করে গেছে কত মানুষ। সারাদেশের ৭ লাখের বেশি নমুনার কোভিড পরীক্ষা করেছে এই একটি প্রতিষ্ঠান, স্যারের নেতৃত্বে। স্যার নিজেও যেমন স্বপ্ন দেখতেন তেমনি অন্যের স্বপ্নের কথাও শুনতেন, সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করতেন। মেডিকেল বায়োটেকনোলজি নিয়ে স্যার আমাদের স্বপ্নের সাথে মিশে গিয়েছিলেন, বলেছিলেন আমি ফিরে আসি এরপর ডিজি স্যারের সাথে কথা বলব। স্যারের চাকরিজীবনের শেষ দিনে ফুল নিয়ে দেখা করতে গিয়েছিলাম, জিজ্ঞেস করেছিলাম কেমন আছেন। উত্তরে স্যার বলেছিলেন, এতদিন তো কোনভাবে বেঁচে বর্তে ছিলাম এখন সাউথ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট যেভাবে আসছে তাতে মনে হয়না আর বাঁচতে পারবো। স্যারের কথাই সত্যি হলো। আজ সকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল্যাবরেটরি মেডিসিন ও রেফারেল সেন্টারের পরিচালক বরেণ্য মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক ডা. শামছুজ্জামান তোষার স্যার করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
বিজ্ঞান ও ধর্মে বিরোধ নেই, ভালবাসা ও সংগ্রামে বিরোধ নেই, স্বপ্ন ও বাস্তবায়নে বিরোধ নেই, সেবা ও শ্রমে বিরোধ নেই সেটা এই মানুষটিকে দেখে বারবারই মনে হতো। দেশের এক অপুরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল স্যারের প্রয়াণে। কিছুদিন আগেই আমরা কয়েকজন বলছিলাম, করোনাকালীন সেবায় যদি একজন মানুষকে সম্মানিত করতে হয়, একুশে পদক এর মত সম্মাননা দিতে হয় তাহলে সেটা তুষার স্যারকেই দেয়া উচিত। জানিনা মরণোত্তর কোন সম্মাননা এই দেশে দেয়া হয় কিনা, আপনি লাখো চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর মনে সম্মানিত হয়ে থাকবেন আজীবন।
“নিঃশ্বেষে প্রাণ, যে করিবে দান,
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।”