২৬ জুন ২০২০, শুক্রবার
ডা. সফিউল আলম,
বারডেম হাসপাতাল।
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি,
আমি এদেশের এনেস্থেশিয়ার ইতিহাসের কথা বলছি। আজ হতে ৫০ বছর পূর্বে, এক মহামানবের পদচারণায় এই বিষয় ধন্য হয়েছিল। শুরু হয়েছিল অগ্রযাত্রার পথে এগিয়ে চলা। সময়ের দাবিতে এদেশের এনেস্থিশিয়া বিষয়ে যিনি এনেছিলেন বৈপ্লবিক পরিবর্তন, যার পথ চলায় আজ আমরা এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি, যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আমাদের প্রানের সংগঠন বি এস এ। তিনি আর কেউ নন, আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক প্রফেসর ডা. খলিলুর রহমান স্যার। জীবন্ত কিংবদন্তি শব্দটি বোধহয় শুধু তাকেই শোভা পায়।
আজ এদেশে এনেস্থিসিয়া বিষয়ের যত বড় সম্প্রসারণ, তাঁর সূচনা হয়েছিল, খলিল স্যারের হাত ধরে। এদেশের এনেস্থিসিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় টেকনিক “স্পাইনাল এনেস্থেশিয়া” স্যারের হাত ধরেই আজ এত জনপ্রিয়। তিনিই সার্জন সহ এদেশের চিকিৎসক সমাজকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, স্পাইনাল এনেস্থিসিয়া নিরাপদ ও ইকোনমিক। এই স্পাইনাল এনেস্থিসিয়ার জনপ্রিয়তার কারণেই এনেস্থিসিয়া বিষয়টি আজ একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছেছে৷ শুধু তাই নয়, এদেশে কার্ডিয়াক এনেস্থিসিয়ার সূচনাও স্যারের হাত ধরে। প্রথম ICU সেট আপ, তারই পরিকল্পনার ফসল।
স্যার তাঁর কর্মজীবনে দেশের অনেকগুলো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। যেখানে কাজ করেছেন, সেখানেই এনেস্থেশিয়াকে প্রসারিত করেছেন, আধুনিক করেছেন। তাই, তার আজ এত গুণগ্রাহী। শুধু তাই নয়, একজন শিক্ষক হিসেবে যে পবিত্র দায়িত্ব তিনি কাঁধে নিয়েছেন, তা তিনি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন। যখনই যেখানে ছাত্রদের জন্য ক্লাস, পরীক্ষার দরকার, তিনি সেখানে ছুটে গিয়েছেন ও যাচ্ছেন। ৫০ বছরের ক্যারিয়ারে এত ছন্দময় ও প্রাণবন্ত থাকাও একটা বড় যোগ্যতা। এই বয়সে স্যার এখনো স্টেজে উঠে ঘন্টার পর ঘন্টা পারফর্ম করেন। আমি অবাক হই, এত প্রাণশক্তির উৎস কী? তাই অবাক হয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই,
হে অগ্রজ, হে চিরতরুন,
আপনার কর্মচঞ্চল জীবন আমাদের অনুপ্রেরণা।
আপনার দর্শনে আমরা উজ্জীবিত।
আপনি আমাদের পথপ্রদর্শক।
আপনার ক্যারিয়ারের সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। স্যার আমাদের মাঝে সারাজীবন বেঁচে থাকুন সকলের শ্রদ্ধা ও ভালবাসায়।