এফসিপিএস কথন

এফসিপিএস এর সাবজেক্ট সংখ্যা :-

জেনারেল সাবজেক্ট- মোট ২২ টি
স্পেশাল সাবজেক্ট- মোট ২৬ টি

জেনারেল সাবজেক্ট এ ৪ বছর ট্রেনিং, পার্ট ১ এর আগে ২ বছর পর্যন্ত করা যাবে, বাকি ২ বছর পার্ট ১ পাসের পরই করতে হবে। এরপর পার্ট ২ এর জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। ৪ বছরের মধ্যে ৪ বছরই মাদার সাবজেক্টে অথবা সাড়ে ৩ বছর মাদার সাবজেক্ট প্লাস ওই মাদার সাবজেক্টের অন্তর্ভুক্ত কোন স্পেশালিটির ট্রেনিং করতে পারবেন (মেডিসিনে আরো বেশি স্পেশালিটি ট্রেনিং করা যায়)।

স্পেশাল সাবজেক্ট এ ৫ বছর ট্রেনিং, এখানে প্রথম ২ বছর হলো মাদার সাবজেক্ট এর ট্রেনিং (যেমন নেফ্রোলজিতে এফসিপিএস করতে চাইলে এই ২ বছর মেডিসিনে ট্রেনিং করতে হবে), পরবর্তীতে প্রিলিমিনারি পার্ট ২ নামে একটি পরীক্ষা আছে, যেটিতে পাস করলে পরে স্পেশাল সাবজেক্টের ট্রেনিং করতে পারবেন যেটির মেয়াদ হবে ৩ বছর। এখানে উল্লেখ্য যে, যদি আপনি পার্ট ১ পাসের আগেই ট্রেনিং এ ঢুকে থাকেন, সেক্ষেত্রে যদি মাদার সাবজেক্টে ট্রেনিং করেন, তাহলে মাদার সাবজেক্টের ট্রেনিং ২ বছর পর্যন্তই কাউন্ট করাতে পারবেন,

কিন্তু যদি স্পেশাল সাবজেক্টে ট্রেনিং করেন, সেক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি পার্ট ২ পাস এর পরে যে ৩ বছর ট্রেনিং লাগে সেখানে সর্বোচ্চ ১ বছর কাউন্ট করাতে পারবেন। অর্থাৎ প্রিলি পার্ট ২ পাসের পর ২ বছর ট্রেনিং করতেই হবে ওই স্পেশাল সাবজেক্টে।

অবশ্যই যে স্পেশাল সাবজেক্ট এ এফসিপিএস করছেন সে সাবজেক্ট এরই ট্রেনিং হতে হবে, অন্য স্পেশালিটির ট্রেনিং এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবেনা। এখানে জেনারেল ট্রেনিং এ প্রথম যে ২ বছর আছে তা না করে দেড় বছর জেনারেল প্লাস ৬ মাস অন্য কোন স্পেশালিটির ট্রেনিং ও কাউন্ট করানো যায়, যেটি নিজ স্পেশালিটির বাইরে হবে কিন্তু মাদার সাবজেক্টের অন্তর্ভুক্ত হবে। উদাহরণ হিসেবে বলি, কেউ যদি ইউরোলজি তে এফসিপিএস করতে চান, তাহলে জেনারেল সার্জারির ট্রেনিং ২ বছর, বা দেড় বছর জেনারেল সার্জারি প্লাস ৬ মাস অন্য স্পেশালিটি যেমন অর্থোপেডিক্স/ক্যাজুয়ালটি (ইউরোলজি বাদে) এসব এর ট্রেনিং কাউন্ট করাতে পারবেন, পরে প্রিলি পার্ট ২ এবং পাস করার পরে ৩ বছর ইউরোলজিতে ট্রেনিং করতে হবে।

এমডি এমএস যারা করছেন তাদের ক্ষেত্রেঃ

এমডি/এমএস পাশ না করা থাকলে কোন ট্রেনিং ই এক্ষেত্রে কাউন্ট হবেনা।

এমডি/এমএস পাশ করা থাকলেঃ

১. জেনারেল সাবজেক্ট এমডি/এমএস পাস,+জেনারেল সাবজেক্ট এই এফসিপিএসঃ পার্ট ১ দেয়া লাগবেনা, প্লাস ২ বছর পর্যন্ত ট্রেনিং মাফ পাবেন, শুধু ২ বছর ট্রেনিং করেই পার্ট ২ ফাইনাল এ বসতে পারবেন (সাধারণত একই জেনারেল সাবজেক্ট এ ২ ডিগ্রী করেন না কেউ)।

২. জেনারেল সাবজেক্ট এমডি/এমএস পাস+স্পেশাল এফসিপিএসঃ পার্ট ১ দেয়া লাগবেনা, ২ বছর জেনারেল ট্রেনিং প্লাস প্রিলিমিনারি পার্ট ২ পরীক্ষাও মাফ পাবেন। বাকি ৩ বছর স্পেশাল সাবজেক্ট এ ট্রেনিং করা লাগবে।

৩. স্পেশাল সাবজেক্ট এমডি/এমএস পাস+ জেনারেল এফসিপিএসঃ সুযোগ নাই, করতে চাইলে একেবারে প্রথম থেকে শুরু করতে হবে, অর্থাৎ পার্ট ১ ও দেয়া লাগবে আবার।

৪. স্পেশাল সাবজেক্ট এমডি/এমএস+স্পেশাল সাবজেক্ট এফসিপিএসঃ সঠিক জানা নাই।
উল্লেখ্য, ৩ বছর মেয়াদী এমডি/এমএস এসব ক্ষেত্রে বিবেচ্য হবেনা।

ডাবল এফসিপিএসঃ

জেনারেল সাবজেক্ট এ এফসিপিএস করা থাকলেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে স্পেশাল সাবজেক্ট এ এফসিপিএস করার ক্ষেত্রে, অর্থাৎ পার্ট ১+ ২ বছর জেনারেল সাবজেক্ট এর ট্রেনিং +প্রিলি পার্ট ২ দেয়া লাগবেনা, সরাসরি স্পেশাল সাবজেক্ট এর ৩ বছর ট্রেনিং শুরু করতে পারবেন। কিন্তু স্পেশাল সাবজেক্ট এ পাস করে আবার জেনারেল করতে চাইলে পার্ট ১ থেকে শুরু করা লাগবে।

ডিপ্লোমাঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং/অথবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ডিপ্লোমা পাস থাকলে ১ বছর পর্যন্ত ট্রেনিং মাফ পাওয়া যাবে।

কিছু বিশেষ/নতুন নিয়মঃ

জুলাই ২০১৯ থেকে যারা পার্ট ১ পাস করেছেন/করবেন, তাদেরকে মাসিক ২০,০০০ টাকা ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে কাউন্সিল এর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন হয়ে গেলে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত দেয়া হবে। ৪ বছর ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে ৩ বছর অনারারি+১ বছর পেইড জব এ থাকা লাগে, ভাতা সিস্টেম চালু হলে এটি থাকবে কিনা এখনো সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

জানুয়ারি ২০২০ থেকে এফসিপিএস এর ট্রেনিং ৫ বছর করার চিন্তাভাবনা চলছে (জেনারেল+স্পেশাল উভয় ক্ষেত্রে), ব্যাখ্যা হিসেবে এফসিপিএসকে রয়্যাল কলেজের ডিগ্রীর সমপর্যায়ে আনার কথা বলেছেন স্যাররা।

এখন থেকে ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে ট্রেইনি হিসেবে নিজের রেজিস্ট্রেশন করা এবং ট্রেনিং শুরুর পূর্বে এনরোলমেন্ট করা বাধ্যতামূলক এবং ৬ মাস ট্রেনিং পূর্ণ হলে পরবর্তী ১ মাসের মধ্যে প্রোগ্রেস রিপোর্ট জমা দিতে হবে। অন্যথায় ট্রেনিং কাউন্ট হবেনা। রেজিস্ট্রেশন করে রাখলে ভালো, কবে পার্ট ১ দিতে বসছেন সেটি এখানে মুখ্য নয়।

পরিশেষে, সবকিছুই বিসিপিএস এ স্যার/ম্যাডামদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে লেখা, তবে সময়ের সাথে সাথে যেকোন নিয়ম পরিবর্তন হতেই পারে, যেকোন প্রয়োজনে বিসিপিএস এ সরাসরি যোগাযোগ করে জেনে নেয়ার বিকল্প নেই। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার জানায় কোন ভুল থাকলে শুধরে দেবেন।

মূল লেখক-
মাহির আঞ্জুম
প্রভাষক, এনাটমি বিভাগ
তাইরুন্নেসা মেডিকেল কলেজ

প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটার
সুমাইয়া নার্গিস
শতাকেম (২০১৬/১৭)

Special Correspondent

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

আবারও চিকিৎসক এর উপর হামলা

Sun Sep 8 , 2019
দেশে একের পর এক চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছেই। বর্তমানে কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার অভাব প্রকটতর হয়ে উঠেছে। এবার কর্মস্থলেই হামলার স্বীকার ও অস্ত্রের মুখে চিকিৎসকে জিম্মির ঘটনা ঘটেছে খুলনা নগরীর খালিশপুরে। ৮ ই সেপ্টেম্বর ভোররাতে উক্ত ঘটনা ঘটে। নগরীর মুজগুন্নী শেখ পাড়া এলাকার বাসিন্দা শওকত সর্দারের ছেলে ও সিটি পলিটেকনিকের […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo