প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৭ নভেম্বর ২০২০, শনিবার
ডা. আশরাফুল হক
সহকারী অধ্যাপক,
ব্লাড ট্র্যান্সফিউশন,
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক র্সাজারি ইন্সটিটিউট।
প্লাজমা আসলে কখন দেওয়া যেতে পারে, একেবারে শুরুর দিকে না পরের দিকে? এ পর্যন্ত যত গবেষণার ফলাফল পাওয়া গেছে, তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়-
শুরুর দিকে যদি উচ্চ এন্টিবডি টাইটারের প্লাজমা দেওয়া যায়, তবে হাসপাতালে ভর্তির দিনের সংখ্যা কমে।
আর নিম্ন এন্টিবডি টাইটারের প্লাজমায় লাভবান হওয়ার রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
এখন কথা হলো, কত সে এন্টিবডি টাইটার?
একেবারে শুরুর দিকে প্রস্তাবিত টাইটার ছিল ১:১৬০। তবে এটি আগস্ট মাসের আগ পর্যন্ত ছিল। ৭০ হাজার জনকে প্লাজমা দেওয়ার পর আগস্ট মাস থেকে >২৫০ নির্ধারিত হয়।
তবে একেবারে শুরুর দিকে এন্টিবডি দিয়ে চিকিৎসার অন্যতম অসুবিধা হতে পারে Antibody Dependent Enhancement, যা সেলকে আরও বেশী ভাইরাস গ্রহনে উৎসাহিত করে। যেহেতু ল্যাব রিপোর্ট দিয়ে একে নিরুপন করা সম্ভব নয়। তাই বেশীরভাগ সময়ই এটি বুঝা অনেক দুস্কর। আমাদের দেশে যেহেতু অনেক কিছুই আমরা মানি না, তাই এটি হলেও ধরতে পারিনা। প্লাজমা দেওয়ার পর রোগী খারাপ হয়ে গেছে এমন যে হয় না তা নয়। আবার যারা মৃদু থেকে মাঝারি আকারের লক্ষণ নিয়ে ভুগেছিলেন করোনায় তাদের বেশিরভাগেরই এন্টিবডি তৈরি হয়না, হলেও অতি কম মাত্রায় থাকে। যা দিয়ে আসলে রোগীর উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা।
আমাদের দেশের সুবিধা আছে এখানে, আমরা এন্টিবডিই দেখিনা প্লাজমা নেওয়ার ও দেওয়ার আগে।
পরের দিকে প্লাজমা ব্যবহারে কি হতে পারে?
আসলে এন্টিবডি অনেক ক্ষেত্রেই শরীরে তৈরি হওয়া শুরু করে কারও কারও ক্ষেত্রে এবং পরের দিকে ভাইরাস দিয়ে সৃষ্ট ক্ষতির সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে। তাই পরের দিকে এর ব্যবহারের ভূমিকা বলতে গেলে খুবই সীমিত।
কয় ইউনিট আসলে দেওয়া যেতে পারে?
প্লাজমা দেওয়ার মূল লক্ষ্য হলো, উপস্থিত Neutralizing Capacity দিয়ে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করা অথবা নিজের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কার্যকর করা। যেহেতু এন্টিবডি শরীরে মাসব্যাপী থাকে তাই এক ইউনিট দিয়েই ইতিপূর্বে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। তবে একের অধিক ইউনিট ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি দেখা যায় প্রথম ইউনিট দেওয়ার পর রোগীর উন্নতির লক্ষণ দেখা যায় কিন্তু ইনফেকশান তখনও কার্যকর রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে দিতে হবে পৃথক ডোনার থেকে এবং পূর্বের চেয়ে বেশী এন্টিবডি রয়েছে এমন প্লাজমা। দুই ইউনিটের বেশী প্লাজমা ব্যবহারের উপকারিতা গবেষণায় পাওয়া যায়নি এবং আসলে চেষ্টা করা হয়েছে কিনা তাই দেখার বিষয়।